ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ, সুপ্রিম কোর্ট ও কংগ্রেসে হামলা চালিয়ে দাঙ্গার ঘটনায় রাজধানী ব্রাসিলিয়ার জননিরাপত্তা প্রধান আন্দেরসন তোহিসকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারক। তোহিস কট্টর সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বোলসোনারো সরকারের বিচারমন্ত্রী ছিলেন।
মঙ্গলবার বিচারক আলেকসান্দ্রি জি মোরাইস এ নির্দেশ দেন। পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
তবে তোহিসকে কী অভিযোগে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার হয়নি। তোহিসও রয়টার্সের এক মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেননি। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, তারা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারছে না।
তোহিস চলতি মাসেই ব্রাসিলিয়ার জননিরাপত্তা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। আর তিনি দায়িত্ব নেওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই গত রোববার বোলসোনারোর কয়েক হাজার সমর্থক প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ, কংগ্রেস ও সুপ্রিম কোর্টে হামলা চালায়।
গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনগুলোতে চালানো হামলা থামাতে নিরাপত্তা বাহিনী ব্যর্থ হওয়ার পর সমালোচনার মুখে ওইদিনই তোহিসকে তার দপ্তর থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। একইদিন এর আগে তোহিস স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, তিনি তার পারিবারসহ যুক্তরাষ্ট্রের অরল্যান্ডোতে ছুটি কাটাচ্ছেন। বোলসোনারোও এখন সেখানেই আছেন।
সোমবার সন্ধ্যায় ৭৭ বছর বয়সী লুলা দেশের গভর্নরদের সঙ্গে কংগ্রেসের ক্ষতিগ্রস্ত ভবন, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ ও সুপ্রিম কোর্ট পরিদর্শন করেন। তিনি নিন্দা জানিয়ে অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার অঙ্গীকার করেন। পরে এ ঘটনায় প্রায় দেড় হাজার মানুষ আটক করা হয়।
তবে বলসোনারো বলেছেন তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’। একই সঙ্গে ‘শান্তিপূর্ণ’ প্রতিবাদের অধিকারের পক্ষে তাঁর অবস্থানের কথা তুলে ধরেছেন।
মঙ্গলবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রাজিলে কয়েক হাজার মানুষ গণতন্ত্রের পক্ষে সমাবেশ করেছে। প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ, সুপ্রিম কোর্ট ও কংগ্রেসে হামলা চালিয়ে দাঙ্গার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তাঁরা। ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোকে কারাদণ্ডের দাবিতে দেশটির বৃহত্তম শহর সাও পাওলোতে স্লোগান দেয় জনতা।
সাও পাওলোতে বৃহৎ সমাবেশে বিক্ষোভকারীরা পর্তুগিজ ভাষায় 'আমরা গণতন্ত্র' লেখা বড় ব্যানার নিয়ে মিছিল করেন।
গত ডিসেম্বরে ব্রাজিলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়। এতে বামপন্থী লুলার কাছে বলসোনারো পরাজিত হন। লুলার শপথ গ্রহণের আগেই গত ৩০ ডিসেম্বর তিনি দেশ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় চলে যান।
ওই দাঙ্গার পরে বলসোনারোর স্ত্রী মিশেল বলসোনারো জানিয়েছেন, বলসোনারো অন্ত্রে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো মঙ্গলবার তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন বলে জানায় রয়টার্স। উল্লেখ্য, বলসোনারোকে ২০১৮ সালে ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল। তারপর থেকে তিনি মাঝে মাঝে অন্ত্রের ব্যথায় ভোগেন।