স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছিলেন হোসেন তৌফিক (এইচ টি) ইমাম। অবসরোত্তর সময়ে প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা হন, পরে আমৃত্যু রাজনৈতিক উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও দলীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান।
২০২১ সালের ৪ মার্চ মারা যান এইচ টি ইমাম। তার মৃত্যুর পর এসব পদে কাউকে আনা হয়নি। এ নিয়ে কোনো আলোচনাও ছিল না। এমনকি আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এইচ টি ইমাম যে চেয়ারে বসতেন, সেখানেও কেউ বসেননি।
সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দায়িত্ব পালন করে অবসরে যাওয়া কবির বিন আনোয়ার বসেছেন সে চেয়ারে। এটি রসদ জুগিয়েছে আলোচনায়। এইচ টি ইমামের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন কবির বিন আনোয়ার, এমন আলোচনা এখন রাজনৈতিক মহলে।
তবে দলটির দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করবেন সাবেক এই মন্ত্রিপরিষদ সচিব। যেমনটা এইচ টি ইমাম করতেন। এই দায়িত্বে সফলতার উপরই নির্ভর করবে তার পদায়ন।
এর আগে মাত্র ১৯ দিন মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দায়িত্ব পালন শেষে স্বাভাবিকভাবেই ৩ জানুয়ারি অবসরে যান কবির বিন আনোয়ার। তার চাকরির এক্সটেনশন না হওয়ায় নানা আলোচনা ডালপালা গজালেও নির্ভার ছিলেন তিনি।
গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, আজকে আমার সরকারি চাকরির মেয়াদ শেষ হয়েছে, এটি রুটিনমাফিক বিষয়। চুক্তিভিত্তিক হওয়া সুযোগের বিষয়। এখন যেটা হয়েছে, এটাই স্বাভাবিক ছিল। প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেটা বুঝেশুনে নিয়েছেন। সেই সিদ্ধান্তের প্রতি আমার সম্মান আছে। তবে পরে হয়তো অন্য কোনো ভালো জায়গাতেও আমাকে দেখতে পারেন।
অন্য কোনো ভালো জায়গায় কী হতে পারে, সে বিষয়ে তীক্ষ্ণ নজর ছিল গণমাধ্যমের।
তথ্য মতে, ৪ জানুয়ারি রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কবির বিন আনোয়ার। তার কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেয়ে ৫ জানুয়ারি বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে যান তিনি। সেখানে তাকে স্বাগত জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। পরে দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এবং তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ তাকে নিয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যানের রুমে যান। সেখানে তিনি এইচ টি ইমামের চেয়ারে বসেন এবং কিছু সময় কাটান।
সেসময় ওই রুমে দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এবং তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদও ছিলেন।
এ নিয়ে কথা বলতে কবির বিন আনোয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি।
তবে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি আমলারা স্বাভাবিকভাবে তার সমর্থিত দলে অবসর সময়ে কিছু কাজ করেন। দলও তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগায়। সে হিসেবে উনাকেও (কবির বিন আনোয়ার) কিছু দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি দলের কিছু কারিগরি দায়িত্ব পালন করবেন। তবে সেটি কী ধরনের দায়িত্ব, সেটা সময় হলে পরিষ্কার হবে।