ভারি বৃষ্টির কারণে বন্যা ও ভূমিধসে কঙ্গোর রাজধানী কিনশাসে অন্তত একশ জনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যাজনিত দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী জিন-মিশেল সামা লুকোন্দে মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, কর্মীরা এখনো উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে মানুষদের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
একসময় কঙ্গো নদীর তীরে মাছ ধরার গ্রামগুলোর সমন্বয়ে কিনশাসে প্রায় দেড় কোটি মানুষের বসবাস। বিশাল জনসংখ্যাসহ আফ্রিকার বৃহত্তম মেগাসিটিগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে কিনশাসা।
অব্যবস্থাপনা আর অনিয়ন্ত্রিত দ্রুত নগরায়ন কিনশাসাকে তীব্র বৃষ্টিপাতের পর আকস্মিক বন্যার ঝুঁকিতে ফেলেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে এসব দুর্যোগ আরও ঘন ঘন হচ্ছে।
স্থানীয় তিনটি অফিসের কর্মকর্তারা এপিকে বলেছেন, কিনশাসার প্রায় ২৪টি এলাকার ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ বন্যাকবলিত। যেখানে এতো মানুষের মৃত্যু হয়েছে, ঘরবাড়ি-রাস্তাঘাট ডুবে গেছে।
এনগালিমা এলাকার মেয়র আলিদ’ওর শিবান্দা জানিয়েছেন, তিন ডজনেরও বেশি লোক মারা গেছেন ওই এলাকায়।
সামাজিক যোগাযোগনমাধ্যমে কিনশাসায় বন্যার শেয়ার করা ছবিতে দেখা যায়, শহরের আশপাশের এলাকা কাদা পানিতে প্লাবিত এবং রাস্তায় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মন্ট-এনগাফুলা জেলার প্রধান একটি মহাসড়কে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সড়কের যোগাযোগ ববস্থা। এটি রাজধানীকে আটলান্টিক মহাসাগরের মাতাদি বন্দরের সঙ্গে সংযোগকারী একটি প্রধান সরবরাহ রুট।
প্রাধানমন্ত্রী ও আঞ্চলিক গভর্নর বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। স্থানীয় কর্মকর্তারা জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য রাষ্ট্রীয় সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গেও দেখা করবেন তিনি।
এর আগে ২০১৯ সালে কিনশাসে ভারি বৃষ্টি ও ভূমিধসের কারণে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো মেরামত ছাড়াও, ২০২০ সালের বিশ্বব্যাংকের একটি গবেষণার তথ্য বলছে, বন্যায় পরিবহনে ভয়াবহ বিপর্যয়ের কারণে কিনশাসায় প্রতিটি দিন পরিবারগুলোকে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার খরচ করতে হয়।
সূত্র: আল-জাজিরা