ফ্রিডম বাংলা নিউজ

সোমবার, জুলাই ১, ২০২৪ |

EN

ইন্দোনেশিয়ায় যৌন নিষেধাজ্ঞায় ছাড় পাবেন বিদেশিরা

বিশ্ব বাংলা ডেস্ক | আপডেট: মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১৩, ২০২২

ইন্দোনেশিয়ায় যৌন নিষেধাজ্ঞায় ছাড় পাবেন বিদেশিরা

ছবি: সংগৃহীত

বৈবাহিক সম্পর্কের বাইরে অন্য কারও সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হওয়াকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করে ইন্দোনেশিয়ার সরকার নতুন যে আইন করেছে, সেই আইনের আওতায় বিদেশি পর্যটকরা পড়বেন না বলে দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

‘বালি বংকিং ব্যান’ নামে পরিচিত নতুন এই আইনে বিয়ে-বহির্ভূত দম্পতিদের যৌনতার দায়ে এক বছর এবং একসঙ্গে বসবাস করলে ছয় মাসের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু পর্যটকদের অন্যতম পছন্দের হলিডে স্পট বালির গভর্নর বলেছেন, পর্যটকরা বিবাহিত নাকি অবিবাহিত তা যাচাই-বাছাই করবে না কর্তৃপক্ষ।

বিবিসি বলছে, আগামী তিন বছরের মধ্যে নতুন এই আইনটি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এই আইন দেশটিতে নানা ধরনের আইনি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে। ধর্মীয় রক্ষণশীলতা বৃদ্ধির মাঝেই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ইন্দোনেশিয়ার দণ্ডবিধিতে আনা পরিবর্তনের অংশ হিসেবে নতুন আইনটি তৈরি করা হয়েছে।

গত সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়ার পার্লামেন্টে ফৌজদারি এই আইনের সংশোধনী প্রস্তাব পাস হয়েছে। আইনে বিয়ের বাইরে যৌনতা এবং অবিবাহিত দম্পতিদের একসাথে বসবাস নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন, বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে ‘ইন্দোনেশীয় মূল্যবোধ’ সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে নতুন এই আইন করা হয়েছে।

সংশোধিত আইনের ফলে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশ ইন্দোনেশিয়ায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা এবং মানবাধিকারের অবক্ষয় ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।

ইন্দোনেশিয়ার পার্লামেন্টে গত মঙ্গলবার পাস হওয়া নতুন এই আইনের সমালোচকরা বলেছেন, এটি দেশের মানুষের স্বাধীনতার ওপর এক ধরনের আঘাত। তবে নতুন ফৌজদারি এই আইন আগামী তিন বছর কার্যকর হবে না বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার। একই আইনে দেশটির প্রেসিডেন্টকে অপমান এবং রাষ্ট্রীয় মতাদর্শের বিপরীত মতামত প্রকাশের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

আইনটি ইন্দোনেশীয় নাগরিক এবং দেশটিতে বসবাসরত বিদেশি— উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে বলে প্রথমে জানানো হলেও এখন ভিন্ন অবস্থান তুলে ধরছে কর্তৃপক্ষ। আইনে অবিবাহিত দম্পতিদের একসাথে বসবাস এবং যৌন সম্পর্ক স্থাপনকে ‘অবৈধ’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

ইন্দোনেশিয়ার উপ-বিচারমন্ত্রীও বিদেশি পর্যটকদের নতুন আইনে সাজা দেওয়া হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

নতুন আইন নিয়ে দেশটির ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত রয়েছেন। তাদের শঙ্কা এই আইনের প্রভাবে ইন্দোনেশিয়ার পর্যটন শিল্পের ওপর আঘাত আসতে পারে। এর ফলে বিদেশি পর্যটকদের কাছে ছুটি কাটানোর অন্যতম জনপ্রিয় স্থানের তকমাও হারাতে পারে করোনাভাইরাস মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করা দেশটি। 

২০১৯ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১ কোটি ৬০ লাখেরও বেশি পর্যটক ইন্দোনেশিয়া ঘুরতে গিয়েছিলেন। নতুন এই আইন কৌশলগত দিক থেকে স্থানীয় ও বিদেশিদের জন্য প্রযোজ্য হলেও দেশটির কর্মকর্তারা বিদেশি পর্যটকরা এই আইনে সাজা পাবেন না বলে ভীতি কমানোর চেষ্টা করছেন।

বালির গভর্নর ওয়াইয়ান কোস্তার বলেছেন, বালি বালির মতোই স্বাভাবিক; যা ভ্রমণ করা স্বস্তিকর এবং নিরাপদ। তিনি বলেন, হোটেল বা অন্য কোনও স্থানে থাকার জন্য পর্যটকদের বৈবাহিক অবস্থা প্রমাণের কোনও দরকার হবে না। এছাড়া স্থানীয় কর্মকর্তারাও এই বিষয়ে খোঁজ নেবে না।

সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স