আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক বক্তব্যে আওয়ামী লীগ ঘুরে গেল, উজ্জীবিত হলো, মাথা তুলে দাঁড়ালো। আওয়ামী লীগের মধ্যে যে আরষ্টতা, দ্বিধা-দ্বন্দ্ব, শঙ্কা এবং অস্বস্তি ছিল সেটি যেন এক ঝটকায় উড়ে গেল। গত বুধবার আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি উজ্জীবিত কঠোর এবং আক্রমণাত্মক বক্তব্য আওয়ামী লীগকে উজ্জীবিত করেছে।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মী এই রকম মন্তব্যই করেছেন। গত বুধবার সকালে আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণে সম্মিলিত যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওবায়দুল কাদের সেই সভায় সভাপতিত্ব করছিলেন। এরকম একটি পর্যায়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদককে টেলিফোন করেন এবং ওই সভায় যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি অনলাইনে ওই সভায় যুক্ত হন এবং ওই সভায় তিনি গতানুগতিক ধারায় যে বক্তব্য রাখেন তার চেয়ে ভিন্ন এবং ব্যতিক্রমী এক বক্তৃতা দেন। এই বক্তৃতায় তিনি একদিকে যেমন নেতাকর্মীদের সাহস দেন, অন্যদিকে বিএনপির প্রতি কঠোর বাক্য উচ্চারণ করেন।
কেউ যদি যে হাত দিয়ে আক্রমণ করবে সেই হাত ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। যে হাত দিয়ে আগুন দেওয়া হবে সেই হাত ওই আগুনে পোড়ানোর নির্দেশ দেন। অর্থাৎ শেখ হাসিনার এই বক্তব্যটি ছিল একেবারে দিকনির্দেশনামূলক। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পাল্টা আঘাত দেওয়ার এই নির্দেশনা সূচক বক্তব্যটি আওয়ামী লীগের কর্মীদেরকে সাহস যুগিয়েছে, প্রেরণা জুগিয়েছে। শুধু তাই নয়, তিনি একাধারে যে সমস্ত ব্যবসায়ীরা গোপনে বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল এবং তারেক জিয়াকে অর্থ জোগাচ্ছিল তাদেরকেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে দেন এবং একই সাথে গনমাধ্যমের কিছু ব্যক্তি যারা তথাকথিত নিরপেক্ষতার নামে এক ধরনের বিএনপি-জামায়াত তোষণ নীতি তাদের গণমাধ্যমগুলোতে শুরু করেছিল তাদের ব্যাপারে পরিষ্কার বক্তব্য রাখেন। এটাই শেখ হাসিনা। কোন রাখঢাক না রেখেই সরাসরি শক্রকে চিহ্নিত করা এবং শত্রুর সাথে সরাসরি লড়াই করার সাহস এবং তেজোদ্দীপ্ততা তার আছে জন্যই তিনি বাংলাদেশে অসাধারণ অনন্য এক নেতা হিসেবে উদ্ভাসিত হয়েছেন। গত বুধবার তিনি সেটি দেখেছিলেন।
সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে নানারকম গুঞ্জন ছিল। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের দিকনির্দেশনা হীনতা এবং শঙ্কার কালো মেঘ দেখা যাচ্ছিল। অনেক নেতাই বলতেন যে, সামনে কি হবে, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ কি সংকটে পড়ছে, অর্থনৈতিক সংকটের কি অবস্থা হবে ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু শেখ হাসিনার ওই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা উৎসাহিত হয়েছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ভেসে আসেনি। আওয়ামী লীগের শক্তির শেকড় অনেক গভীর এবং জনগণের মধ্যে পতিত। এই বক্তব্য গুলো কর্মীদেরকে উজ্জীবিত করেছে। বুধবারের বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন স্থানে সরব দেখা গেছে, উদ্দীপ্ত দেখা গেছে। এমনকি আওয়ামী লীগের যে সমস্ত নেতারা অজানা আশঙ্কায় হতাশ হয়ে পড়ছিলেন তারা পর্যন্ত এখন প্রাণ ফিরে পেয়েছেন। শেখ হাসিনার সামনে থেকে যে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং যেভাবে তিনি সংকটকে সাহসের সঙ্গে মোকাবেলার নির্দেশনা দিয়েছেন সেটি আওয়ামী লীগের কর্মীদেরকে সবচেয়ে বেশি উৎসাহিত করছে। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেছেন, শেখ হাসিনার ওই বক্তব্য হলো নির্দেশনা মূলক। অর্থাৎ তিনি একদিকে যেমন সরকারের শত্রুদেরকে চিহ্নিত করেছেন, আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষদেরকে চিহ্নিত করেছেন, তাদের যারা মদদ দিচ্ছেন তাদেরকে চিহ্নিত করেছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে সেই সম্পর্কেও সুস্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। আর এর ফলেই আওয়ামী লীগ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। গত তিন দিনে রাজপথে আওয়ামী লীগের সরব উপস্থিতি, নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত রূপ আওয়ামী লীগকে যেন নতুন প্রাণ শক্তি দিয়েছে।