বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও উয়ন্নয়নমূলক কার্যক্রমে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান অনস্বীকার্য। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের উচ্চতর শিক্ষা অর্জনের জন্য যুগ যুগ ধরেই পছন্দের প্রথম সারিতে রয়েছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। হালের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনপ্রিয়তা এ ধারা কোনোভাবেই হ্রাস করতে পারে নি। অনেক মা-বাবাই তাদের স্নেহের সন্তানকে ভালোভাবে পড়াশুনা করতে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিভাগে ছড়িয়ে থাকা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করার জন্য পাঠায়। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিযুদ্ধ নামে খ্যাত এ যুদ্ধে বিজয়ীরাই অর্জন করে নেয় দেশের বহুল সুনামধন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আসনগুলো। রাত জাগা স্বপ্ন যখন বাস্তবে পরিণত হয় তখনই তারা সম্মুখীন হয় অন্তহীন জীবন সংগ্রামে যাতে স্নাতকের ৪ বছর বাধ্যতামূলকভাবে ভুগতেই হবে।
বাংলাদেশে বর্তমানে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়,বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় ও কেন্দ্রীয়ভাবে সংযুক্ত বিশেষ বিশ্ববিদ্যালয়-সহ মোট পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫৮।
নাগরিকরা খবরের কাগজ খুলে শিক্ষার পাতায় চোখ বুলোলেই পড়ে ফেলতে পারবেন এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের প্রশংসাজনক সাফল্য এবং দেশ তথা জাতির উন্নয়নে তাদের অসামান্য অবদানের কথা। চলতি বছরেই জাবির মনিকৃষ্ণ রায়, ববির সায়েম সেফাতুল্লাহ, ঢাবির সাফায়েত উল্যাহ, জাবির মীর নশিন জাহানের মতো মেধাবী শিক্ষার্থীরা স্থান দখল করে নিয়েছে টেক জায়ান্ট গুগলে। সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনেও পিছিয়ে নেই তারা। এবছর উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবনী 'ওভার দ্য ওয়াল'-এ চ্যাম্পিয়ন আইইউটির শিক্ষার্থী দল উদ্ভাবন করেছে 'শার্কস ইন স্যুট'। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্বের জনপ্রিয় এবং সবচেয়ে বড় প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা 'ইন্টারন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং কনটেস্ট (আইসিপিসি)-এর এশিয়া-ঢাকা আঞ্চলিক পর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের দল DU_FlareBlitz 4.0 চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। বাংলাদেশ ব্লকচেইন অলিম্পিয়াডে পাবনা বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বদানকারী টিম মেসবুক চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তরুণদের নেতৃত্বে খাদ্য ব্যবস্থার পরিবর্তনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ আইসিটি ডেভেলপমেন্ট আয়োজিত ইন্টারন্যাশনাল নিউট্রিশন অলিম্পিয়াডে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী মাহফুজ রহমান। ইয়ুথ একাডেমি বাংলাদেশ পাবলিক স্পিকিং চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন বিতার্কিক হয়েছেন জবির মোর্শেদ হাসান আসিফ। এভাবে ধরে ধরে শুধু চলতি বছরেই বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ও শিক্ষার্থীদের অর্জন লেখা শুরু করলে তা পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা চলতেই থাকবে।
জনপ্রিয় জাপানি কথাসাহিত্যিক হারুকি মুরাকামি বলেছেন, "যেখানে আলো আছে সেখানে ছায়া থাকতে হবে...।" সেভাবেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের যেমন ইতিবাচক দিক আছে তেমনি রয়েছে নেতিবাচক দিক। সেদিকে আলোকপাত করলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে রীতিমতো আতঙ্কে পরিণত হয়েছে।
চলতি বছরের কয়েকটি উদাহরণ দিয়েই বিষয়টা পরিস্কার করা যাক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে মওলানা ভাসানী হল ও আ ফ ম কামালউদ্দিন হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৭ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) খেলা নিয়ে বিতর্কের জেরে মারামারির ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাসহ দু'জন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। ঐ একই বিশ্ববিদ্যালয়ে সেপ্টেম্বর মাসে ফুটবল খেলা নিয়ে মারামারি হয় এবং শিক্ষকের গায়ে হাত তোলারও অভিযোগ আসে। বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাঁচতলায় ক্যান্টিনে মারামারি করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। লুঙ্গি পরে ক্যাম্পাসে আসায় শাসানোকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালনকালে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।'তুমি' বলায় নোয়াখালী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনিয়র-জুনিয়র মারামারি।
এইতো গেলো মারামারি এবার আসা যাক মাদকের প্রসঙ্গে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ (জবি) রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে মাদকের। চলতি বছরেই কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী অতিরিক্ত মাদকদ্রব্য সেবনের ফলে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। তার বিরুদ্ধে মাদকের টাকা জোগাড় করতে ছিনতাইয়ে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগও পাওয়ায় যায়।খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ ব্যাচের শিক্ষা সমাপণীর কনসার্ট অনুষ্ঠানে মাদকের ছড়াছড়ির ঘটনা ঘটেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ১৮ প্যাকেট গাঁজাসহ দুই মাদক কারবারিকে আটক করা হয়েছে। ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক সেবনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মাঝে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের এক কর্মীর জন্মদিন উদযাপন অনুষ্ঠানে না যাওয়ায় এক সাংবাদিককে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ক্লাসরুমে সিট ধরা নিয়ে ছাত্রলীগকর্মীর মারধরের শিকার হয়েছেন এক শিক্ষার্থী। তাহলে স্কুল কলেজের মাদকের ক্ষতিকর দিক সমন্ধে জ্ঞান লাভ করেও মাদককেই জীবনের অংশ বানিয়ে ফেলছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা৷ আর মাদকের সাথে সংযুক্ত রয়েছে চুরি, ছিনতাই, খুন, ধর্ষণের মতো নানাবিধ অপরাধ।
মাদক এবং মারামারির উর্ধ্বে গিয়ে চলতি বছরে নিরীহ মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রাণনাশের ঘটনাও আমরা জানতে পারি। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর পরশকে হত্যা করে ফেলে রাখা হয় শীতলক্ষ্যা নদীর ধারে। ফারদিনের লাশ উদ্ধার করা হয় সেখান থেকে বেশ কিছুটা দূরের মাদক কেনাবেচার স্পট হিসেবে পরিচিত। সিলেটে অবস্থিত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন ছাত্র বুলবুল আহমেদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাবেক শিক্ষকের প্রাইভেটকারের চাপায় গুরুতর আহত নারী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রিক্তা আক্তারকে হত্যা করে তার স্বামী যে কিনা একই বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এনামুল হক তার বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্রী এবং ছাত্রলীগ নেত্রী ফতেমা খানম এর বিরুদ্ধে স্তনযুগল দিয়ে নাক-মুখ চেপে ধরে খুনের চেষ্টার অভিযোগ করেছেন। নি:সন্দেহে এসকল মৃত্যু অস্বাভাবিক। এসব কর্মকান্ড হল দেশের সম্ভাবনাময় নাগরিকদের ভবিষ্যৎ মুছে ফেলা।
নেপোলিয়ান বোনাপার্ট বলেছেন, তোমরা আমাকে শিক্ষিত মা দাও ,আমি তোমাদের শিক্ষিত জাতি দেবো। কিন্তু সেই মাতৃতুল্যা নারী শিক্ষার্থীরা ঠিক কতটা নিরাপদভাবে পাড় করতে পারছেন তাদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবন? গোপালগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়।ধর্ষণ মামলায় জুয়েল হোসেন নামে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) এক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের রাকিব আহমেদ নামের এক ছাত্রের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে ভাড়া পরিশোধ করতে না পারায় মালিক কর্তৃক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।
কথায় আছে "পেটে খেলে পিঠে সয়"। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে হলের খাবার ও পানির যে হাল তাতে শিক্ষার্থীরা অপুষ্টি ও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। নির্ধারিত মূল্য তালিকা না থাকায় খাবারের দাম নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) আবাসিক হলগুলোতে উচ্চমূল্যে নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসের ভিতরের হোটেলগুলোতে খাবারের দাম বাইরের থেকে বেশি রাখছেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। খাবারের মান আর দামের ভোগান্তি পিছু ছাড়ছে না ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীমউদদীন হল ক্যান্টিনে পচা খাবার রান্না করে খাওয়ানোর অভিযোগে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়েরই স্যার এ এফ রহমান হলের ক্যান্টিনের খাবারে বড়শি পাওয়া গেছে।বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) বঙ্গবন্ধু হলের ক্যান্টিনে খাবারের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজনীয় আমিষ খেতে হিমশিম খেতে হয় শিক্ষার্থীদের।
মানুষের মৌলিক অধিকারের ৩ নম্বরে রয়েছে বাসস্থান। ক্লাসে লেকচার নোট করে রুমে গিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে তা মস্তিষ্কে ঢুকানো, পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া ও নিরাপদভাবে বসবাসের জন্য আবাসস্থলের ভূমিকা অপরিসীম। কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক দলের সিট বাণিজ্য ও প্রশাসনের উদাসীনতা বিপদে ফেলে দিচ্ছে গরিব ও অসহায় শিক্ষার্থীদের। চলতি বছরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে 'সিন্ডিকেট' করে রাবি আবাসিক হলগুলোতে ছাত্রলীগ সিট বরাদ্দ দিচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক হলে সিট বাণিজ্য, ভর্তিবাণিজ্য, টাকা নিয়ে পলিটিকাল রুম তৈরি করছেন তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে বরাদ্দ পাওয়া কক্ষ থেকে এক ছাত্রকে মেরে বের করে দিয়েছে হল শাখা ছাত্রলীগ৷ এছাড়াও ঢাবির বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের অন্তত ৩০০ ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের অন্তত ৮০ শিক্ষার্থী এ অনিয়মতান্ত্রিক ফি দিয়ে থাকে হলের সিটগুলোতে। উদ্বোধনের ১১ মাস পেরিয়ে গেলেও চালু হয়নি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল। এদিকে অনেক শিক্ষার্থী থাকার জন্য সিট পাচ্ছেন না। হলে হলে ঘুরেও ব্যর্থ হচ্ছেন। ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষাকার্যক্রম।
এসব সমস্যার বাহিরেও শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতদের আনাগোনা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মীদের দৌরাত্ম্যকে। এসকল বিষয় নিয়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হলেও এ যাবত উপর্যুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় নি বলে দাবি করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেলে তার প্রতিশোধ নেয়ার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হল তা পূর্বেই প্রতিরোধ করা।
বিভিন্ন মনীষীরা কালক্রমে কঠিন থেকে কঠিনতর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েই নিজেকে শিক্ষিত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। হয়তো বা তারা জন্মেছিলেন ঐশ্বরিক কোনো ক্ষমতা নিয়ে। কিন্তু সাধারণ মা-বাবা থেকে দূরে থাকা তরুণ শিক্ষার্থীরা এমন সঙ্কটপূর্ণ ব্যবস্থায় পড়ে প্রশ্ন তুলতেই পারে, 'তাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঠিক কতটা নিরাপদ?'