Can't found in the image content. বাংলাদেশে ২ কোটি মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত | ফ্রিডম বাংলা নিউজ
ফ্রিডম বাংলা নিউজ

সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪ |

EN

বাংলাদেশে ২ কোটি মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত

স্বাস্থ্য ডেস্ক | আপডেট: শনিবার, নভেম্বর ২৬, ২০২২

বাংলাদেশে ২ কোটি মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত
সারা বিশ্বে ৮৫ কোটি মানুষ কোনো না কোনোভাবে কিডনি রোগে আক্রান্ত জানিয়ে ফাউন্ডেশনটির প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশিদ বলেছেন, বাংলাদেশেও কিডনি রোগীর সংখ্যা ২ কোটির কাছাকাছি। শনিবার (২৬ নভেম্বর) দুই দিনব্যাপী কিডনী ফাউন্ডেশনের ১৮তম বাৎসরিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে যে ২ কোটি কিডনি রোগী রয়েছে, তার মধ্যে ৪০ হাজার রোগীর প্রতি বছরে কিডনি বিকল হয় এবং এদের ৭৫ ভাগই মৃত্যুবরণ করে থাকে ডায়ালাইসিস অথবা কিডনি সংযোজনের চিকিৎসার অভাবে। এছাড়া হঠাৎ করে কিডনি বিকল হয়েও প্রতি বছর আরও ২০ হাজারা রোগী মারা যান।

এই সম্মেলনে দেশ-বিদেশের কিডনি ও ট্রান্সপ্ল্যান্ট বিশেষজ্ঞরা অংশ নিয়েছেন। কিডনি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশিদের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শরফুদ্দিন আহম্মেদ।

এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন- রয়াল লন্ডন হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ মাগদি ইয়াকুব, বিএসএমএমইউর উপ-উপচার্য অধ্যাপক এ.কে.এম মোশারফ হোসেন।

ডা. হারুন আর রশিদ বলেন, কিডনি রোগীদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য জেলা পর্যায় ডায়ালাইসিস করার ব্যবস্থা রাখা এবং প্রতিটি মেডিকেল কলেজে কিডনি সংযোজনের ব্যবস্থা রাখা দরকার। এর সঙ্গে সঙ্গে কিডনির রোগ বিশেষজ্ঞ, ট্রান্সপ্ল্যান্ট রোগ বিশেষজ্ঞ ও নার্সদের উচ্চতর ট্রেনিং বিশেষভাবে প্রয়োজন।

ডা. মো. শরফুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, বাংলাদেশে কিডনি রোগ ও কিডনি অকেজো রোগীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুটো কিডনি অকেজো হয়ে গেলে রোগীকে বেঁচে থাকার জন্য ডায়ালাইসিস অথবা কিডনি সংযোজন করতে হয়। বাংলাদেশে এটা চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে এই চিকিৎসা ব্যয়বহুল এবং সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।

তবে আমি জেনে আনন্দিত যে কিছু সরকারি হাসপাতাল এবং বেসরকারি পর্যায়ে কিছু অলাভজনক প্রতিষ্ঠান যেমন কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল এই কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস ও কিডনি সংযোজনের ক্ষেত্রে গত ১৬ বছর থেকে স্বল্পমূল্যে মানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে মরণোত্তর কিডনি দান করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছি। সুতরাং এই ধরনের সেবা অন্যান্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অনুসরণ করলে মানুষের উপকার হবে।

অধ্যাপক মুহাম্মদ মাগদি ইয়াকুব বলেন, কিডনি রোগী ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্ত চাপ রোগ নিয়ন্ত্রণে কিডনি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক কিডনি সমিতির হাসপাতালের সঙ্গে রিনাল সিস্টার সেন্টার প্রোগ্রামের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে কিডনি রোগীর উন্নত চিকিৎসা দেওয়ায় গবেষণা সহায়তা দেওয়া এবং কিডনি বিশেজ্ঞদের উচ্চতর ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা। এরই মাধ্যমে আমরা সাত দিনব্যাপী বিভিন্ন হাসপাতালে প্রশিক্ষণের জন্য পর্যায়ক্রমে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা এবং এর মধ্যে আছে চিকিৎসক ও নার্স এবং কিডনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকলা উন্নত প্রশিক্ষণ দেওয়া।

অধ্যাপক এ.কে.এম মোশারফ হোসেন বলেন, কিডনি রোগের প্রধান কারণ হচ্ছে ডায়াবেটিক এবং উচ্চ রক্তচাপ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় গত ৩০ বছর থেকে ডায়ালাইসিস ও কিডনি সংযোজন করে আসছে। আমরা কিডনি ও লিভার নিকট আত্মীয়ের জীবিত অবস্থায় শুরু করেছি এবং মৃত ব্যক্তির অঙ্গ সংযোজন করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

অধ্যাপক রুহুল আমিন রুবেল, মহাসচিব, কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্স ইনস্টিটিউটে কিভাবে কিডনি অকেজো রোগীর খুব কম চিকিৎসা দেওয়া হয় তার বিস্তারিত আলোচনা করেন। বর্তমানে ৩০০ বেডের এই কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে প্রতিদিন ২০০-২৫০ রোগী ডায়ালাইসিস করে থাকে এবং এরই মধ্যে ৬৫০ জনের বেশি কিডনি সংযোজন সাফল্যজনকভাবে করা হয়েছে।

রোগী নিজের বাসায় ডায়ালাইসিস (সি.এ.পি.ডি) করে থাকে। এ ছাড়াও এই হাসপাতালে একটি আধুনিক ল্যাবরেটরি রয়েছে। যেখানে ৫০ শতাংশ কম ঘুরছে সবধরনের পরীক্ষা করা যায়। এছাড়াও প্রতিদিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা মাত্র ৪০০-৫০০ টাকায় রোগী দেখে থাকেন। রোগী বিনা বেড ভাড়ায় ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে পারে।