ইরানে মাহসা আমিনি নামে পুলিশী হেফাজতে এক তরুণীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চলমান বিক্ষোভ-আন্দোলনে সমর্থন দেওয়ায় দুই অভিনেত্রীকে আটক করার খবর পাওয়া গেছে। আটক হওয়া ওই দুই অভিনেত্রী হলেন হেঙ্গামেহ গাজিয়ানি ও কাতায়ুন রিয়াহি। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে এ তথ্য।
ইরনা নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ইরানের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধাচরণ করেছেন তারা। আন্দোলন-বিক্ষোভে যোগসাজশও রয়েছে তাদের। জানা গেছে, তারা দুজনই মাথায় স্কার্ফ ছাড়াই জনসমক্ষে উপস্থিত হন এবং বিক্ষোভকারীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন।
ইরানে জনসম্মুখে নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব পরাসহ কঠোর পর্দা পালনের নিয়ম রয়েছে। এই বিধিগুলো তদারক করার জন্য রয়েছে দেশটির ‘নৈতিকতাবিষয়ক’ পুলিশ। এই পুলিশের একটি দল, গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনিকে তেহরান থেকে আটক করে। আমিনি তার পরিবারের সঙ্গে তেহরানে ঘুরতে গিয়েছিলেন। আটকের পর মাহসা আমিনি থানায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় মাহসা আমিনির। এ ঘটনার প্রতিবাদে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয় দেশজুড়ে। দেশটিতে এ পর্যন্ত সহিংসতায় প্রাণ গেছে কয়েকশ জনের।
গাজিয়ানি ও রিয়াহি দুজনই বেশ কয়েকটি পুরস্কার পাওয়া দক্ষ অভিনেত্রী। রোববার (২০ নভেম্বর) দেশটির প্রসিকিউটর অফিসের নির্দেশে তাদের আটক করা হয়।
আটক হওয়ার আগে গাজিয়ানি তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্টে লেখেন ‘যাই ঘটুক না কেন,আমি সব সময় ইরানের মানুষের পক্ষেই থাকবো। এটাই মনে হয় আমার সর্বশেষ পোস্ট।’
এর আগে আন্দোলন-বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে ৯ ইউরোপীয়কে গ্রেফতার করার কথা জানা যায় দেশটিতে। ওই ৯ জনের মধ্যে জার্মানি, পোল্যান্ড, ইতালি, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস ও সুইডেনের নাগরিকও রয়েছে।
২০১৯ সালেও তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে এ ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয় ইরানে। সে সময় এক হাজার পাঁচশ মানুষ নিহত হন। তবে আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে ইরানের অভিযোগ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিক্ষোভকারীদের সমর্থন করছে এবং ইসলামিক প্রজাতন্ত্রকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে।
সূত্র: বিবিসি