ইরাকে ও সিরিয়ায় বিমান হামলা চালিয়েছে তুরস্ক। শনিবার (১৯ নভেম্বর) সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল ও ইরাকের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায় তুর্কি সামরিক বিমানগুলো। মূলত সপ্তাহখানেক আগে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে একটি বিস্ফোরণের জবাবে পাল্টা এই হামলা চালানো হলো।
ইস্তাম্বুলের সেই হামলায় ছয়জন নিহত এবং ৮০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছিলেন। রোববার (২০ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রোববার টুইটারে দেওয়া এক বিবৃতিতে অভিযান শুরুর ঘোষণা দিয়েছে। এতে দাবি করা হয়েছে, ইস্তাম্বুলে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িতরা সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় ও ইরাকের ওই লক্ষ্যবস্তুগুলো ব্যবহার করত।
তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রোববার ভোরে সামরিক বিমানের রাত্রিকালীন অপারেশনে উড্ডয়নের ছবি-সহ টুইট করে বলেছে, ‘হিসেবের সময় এসে গেছে’। এতে আরও বলা হয়েছে, যেসব বিশ্বাসঘাতক হামলা করেছে তাদের জবাবদিহি করা হবে।
আল জাজিরা বলছে, আঙ্কারা গত ১৩ নভেম্বর ইস্তাম্বুলে বোমা হামলার জন্য নিষিদ্ধ কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) এবং সহযোগী সিরিয়ান কুর্দি গোষ্ঠীগুলোকে দায়ী করেছে। তবে কুর্দি যোদ্ধারা বোমা বিস্ফোরণের ওই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে।
এদিকে রোববার ভোরের ওই টুইটের পর পৃথক আরেকটি টুইট করে তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। একটি ভিডিওসহ পোস্ট করা ওই টুইটে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘সন্ত্রাসীদের হটবেড’ ধ্বংস করতে ‘নির্ভুল হামলা’ করছে বিমান বাহিনী।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, ‘জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদ থেকে উদ্ভূত আমাদের আত্মরক্ষার অধিকারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে পেন্স কিলিক বিমান অভিযানটি ইরাক এবং সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে পরিচালিত হয়েছে। এসব লক্ষ্যবস্তু সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে আমাদের দেশে হামলার ঘাঁটি হিসাবে ব্যবহৃত হয়।’
তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)-কে একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসাবে বিবেচনা করে। তবে সিরিয়ায় আইএসআইএল (আইএসআইএস) গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ওয়াশিংটনের সাথে জোটবদ্ধ সিরিয়ার কুর্দি গোষ্ঠীগুলোর বিষয়ে তুরস্কের অবস্থান নিয়ে দ্বিমত পোষণ করে আসছে ওয়াশিংটন।
গত শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, তারা (সিরিয়ায়) তুরস্কের সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপের আশঙ্কা করছে। আর তাই মার্কিন নাগরিকদের উত্তর সিরিয়া ও ইরাকে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।