জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়ক্ষতি পূরণে পৃথক অর্থায়নের বিষয়টি স্বীকৃতি পেতে পারে এবারের বিশ্ব সম্মেলনে। তবে নির্দিষ্ট রুপরেখা না থাকায় শঙ্কা আছে বৈষম্যের। পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ আয়তন ও জনসংখ্যার বিবেচনায় বাংলাদেশের ক্ষতিকে দেখতে হবে ভিন্ন দৃষ্টিতে। দিতে হবে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনের পর থেকে সামনে এসেছে জলবায়ু পরির্তনজনিত লস আ্যান্ড ড্যামেজ বা ক্ষয়ক্ষতির প্রশ্ন। বলা হচ্ছে, গ্রিণ হাউস গ্যাস নিঃসরণের ফলে গোটা পৃথিবীর জলবায়ুর যে ক্ষতি হয়েছে তা মেটাতে দরকার ৫-৯ ট্রিলিয়ন ডলার। এবারের জলবায়ু সম্মেলনে লস অ্যান্ড ড্যামেজ খাতে আলাদা অর্থায়নে স্বীকৃতি আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে রুপরেখা তৈরী হতে পারে ২০২৪ সালের মধ্যে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক জিয়াউর হক বলেছেন, ক্ষতিপূরণের বিষয়টা নিয়ে প্রতিটা কপেই আলোচনা হয়। সেক্ষেত্রে ক্রাইমেট ফাইন্যান্সের আওতায় অ্যাডাপ্টেশন ফাইন্যান্স, লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফাইন্যান্স, মিডিগেশন ফাইন্যান্স নিয়েও কথা বার্তা হচ্ছে। এবার প্রথমবারের মতো আমরা অ্যাডাপ্টেশন ফাইন্যান্স ফর লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফাইন্যান্স নিয়ে আলাদা একটা ডেডিকেটেড এজেন্ডাভুক্ত হয়েছি।
তবে, পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোন দেশ কিসের ভিত্তিতে কতটুকু ক্ষতিপূরণ পাবে তার সুনির্দিষ্ট কাঠামো তৈরী হয়নি আজ পর্যন্ত। তাই বাংলাদেশের মতো মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ দেশের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার ব্যাপারে রয়ে গেছে ন্যায্যতার প্রশ্ন।
পিকেএসএফের ডিএমডি ফজলে রাব্বী ছাদেক আহমদ বলেন, আমরা বলেছি প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন। এটাও ন্যায্যতার চেয়ে অনেক কম। সেটাও ৭০ শতাংশই লোন এবং এই লোনটা অনেকক্ষেত্রে মার্কেট রেইট। কাজেই ন্যায্যতার ব্যাপারটা অনেক দূর, দিল্লী বহুদূর। লস অ্যান্ড ড্যামেজেও ম্যাকানিজম হবে। যার ফলে যে দেশ বেশি ঝুঁকিপূর্ণ সে বেশি অর্থায়ন পাবে এটাই ধরে নেয়া হয়েছে।
পরিবেশ গবেষকরা বলছেন, অর্থায়নের রুপরেখা যাইহোক ক্ষতিগ্রস্ত সব দেশকে এক পাল্লায় মাপার সুযোগ নেই।
পরিবেশ গবেষক অধ্যাপক কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, আমাদের দাবি বাংলাদেশের বিশাল আকারের মানুষকে বিবেচনায় নিয়ে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি যাতে আলোচনায় আসে এবং সে অনুযায়ী আমরা ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারি।
অবশ্য, যত কথাই হোক ৭ বছরেও প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ায় কোপ২৭ এর সফলতা নিয়ে সংশয় রয়েই গেছে পরিবেশবাদীদের।