রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি শনিবার টেলিফোনে কথা বলেছেন। দুই দেশের পক্ষ থেকে আলাদা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গভীরে আলোচনা করেছেন তারা। খবর আল জাজিরার।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের দপ্তর ক্রেমলিন এ ব্যাপারে বিবৃতিতে বলেছে, ‘দুই নেতা দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন; আলোচনার লক্ষ্য ছিল কিভাবে রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক এবং অর্থনৈতিক, সঙ্গে পরিবহন এবং লজিস্টিকক্ষেত্রে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বৃদ্ধি করা যায়।’
রাশিয়ার দেওয়া বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘ইরান ও রাশিয়ার প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি করবে এ নিয়েও সম্মত হয়েছেন পুতিন-রাইসি।’
অপরদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট দপ্তরের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘রাশিয়া ইসলামিক রিপাবলিক ইরানের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়তে চায়, বিশেষ করে ইউরোএশিয়া অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন চায় তারা। এই যোগাযোগ পথটি বৈশ্বিক অর্থনীতি ও বাণিজ্যের জন্য একটি আকর্ষণীয় পথে পরিণত হবে।’
এদিকে পুতিন-রাইসি এমন সময় কথা বললেন যখন রাশিয়ার উচ্চপদস্থ নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিকোলাই পাত্রুসেভ এবং ইরানের জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা আলী সামখানি বুধবার তেহরানে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে তারা ইউক্রেন পরিস্থিতি এবং নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয়াবলীতে ‘পশ্চিমা আধিপত্যের’ বিস্তার রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছিলেন বলে জানিয়েছিল রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলো।
এদিকে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে রাশিয়াকে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার অভিযোগে এখন পশ্চিমাদের রোষানলে পড়েছে ইরান। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির তৈরি কামিকাজে ড্রোন ব্যবহার করে ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর হামলা চালিয়ে সেগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে রাশিয়া।
কয়েক সপ্তাহ ধরে রাশিয়াকে ড্রোন দেওয়ার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছিল ইরান। কিন্তু গত সপ্তাহে তারা স্বীকার করে যুদ্ধ শুরু হওয়ার অনেক আগে রাশিয়াকে ড্রোন দিয়েছে তারা।
রাশিয়াকে আত্মঘাতী ড্রোন সরবরাহ করায় ইরানের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো। অপরদিকে ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবস্থান নামিয়ে দিয়েছে ইউক্রেন।
ইরানে সাম্প্রতিক সময়ে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুকে ঘিরে যে বিক্ষোভ ছড়িয়েছে, সেই বিক্ষোভকে সমর্থন জানানোয় পশ্চিমাদের সঙ্গে ইরানের সম্পর্কের আরও অবনতি হয়েছে। যখন রাশিয়া ও ইরানের সঙ্গে পশ্চিমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে ঠিক তখনই নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত এ দুই দেশ নিজেদের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নে মনোযোগ দিয়েছে।
সূত্র: আল জাজিরা