ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন অব্যাহত থাকলেও মস্কোর সঙ্গে ওয়াশিংটনের যোগাযোগ আছে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বিষয়টি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
সোমবার (৭ নভেম্বর) নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে জ্যাক সুলিভান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্বার্থে’ ক্রেমলিনের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখা হচ্ছে। তিনি এটাও বলেন, ‘তবে কার সঙ্গে আমরা কথা বলছি সে বিষয়ে কর্মকর্তারা পরিষ্কার অবগত আছেন’।
এমন বক্তব্য এলো যখন জ্যাক সুলিভান রুশ প্রেসিডেন্টের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ ও রুশ সিকিউরিটি কাউন্সিলের প্রধান নিকোলায় পাত্রুশেভের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এমন খবর চাওড় হয়। গত কয়েক মাস ধরে তাদের মধ্যে এ যোগাযোগের খবর এক প্রতিবেদনে প্রকাশ করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। তবে বিষয়টি হোয়াইট হাউজ অস্বীকার করার আগেই জ্যাক সুলিভান এ বক্তব্য দিলেন।
ইউক্রেনে পারমাণবিক হুমকি রোধ করতে জ্যাক সুলিভান রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার নেতৃত্ব দিচ্ছেন, এমন একটি প্রতিবেদনের সত্যতা স্বীকার করে এসব কথা বলেন তিনি।
মার্কিন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা জানান, কীভাবে ইউক্রেন যুদ্ধে পারমাণবিক উত্তেজনা হ্রাস করা যায়, তা নিয়ে কর্মকর্তারা আলোচনা করেছেন। তবে যুদ্ধের সমঝোতার কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনা করেননি তারা।
তবে এ ঘটনা নিয়ে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র অ্যাড্রিয়েন ওয়াটসন বলেন,‘মানুষ অনেক বিষয় নিয়েই তো কথা বলে’। যদিও ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ পশ্চিমা গণমাধ্যমকে দায়ী করে বলেন, ‘তারা অনেক প্রতারণামূলক’ সংবাদ প্রচার করছে।
তবে হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জেন-পিয়েরে বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করার অধিকার যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে।
রাশিয়ার অধিকৃত ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল রক্ষায় দেশটি পারমাণবিক অস্ত্রের আশ্রয় নিতে পারে, এমন আশঙ্কা চলছে গত কয়েক মাস ধরে।
গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনেও বলা হয়, রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার ব্যাপারে যাতে কিয়েভ খোলামেলা মনোভাব প্রকাশ করে, সেজন্য অনুরোধ করছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। এছাড়া পুতিন প্রশাসন ও যুদ্ধের সমাপ্তি নিয়ে কোনও আলোচনা হবে না ইউক্রেনের এমন বক্তব্য না দেওয়ার জন্যও চাপ দিচ্ছে তারা।
যদিও জ্যাক সুলিভান বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে জবাবদিহিতার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বাইডেন প্রশাসন। ইউক্রেনে যেসব যুদ্ধাপরাধের ঘটনা ঘটেছে তার ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক সহযোগীদের সঙ্গে তারা একত্রে কাজ করবেন।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ চলছেই। এখনও হামলা-পাল্টা হামলার খবর মিলছে রাশিয়ার অধিকৃত খেরসন অঞ্চলে। এদিকে, যুদ্ধের কারণে ভেঙে পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতির কাঠামো। দেশে দেশে বেড়েছে খাদ্যসহ সব পণ্যের দাম। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ।
সূত্র: বিবিসি