ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪ |

EN

বুয়েট শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার, বান্ধবীসহ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ

ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: মঙ্গলবার, নভেম্বর ৮, ২০২২

বুয়েট শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার, বান্ধবীসহ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ
‘নিখোঁজ’ থাকা বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। গত ৪ নভেম্বর রাতে নিখোঁজ হওয়ার আগে রামপুর এলাকায় তিনি তার এক বান্ধবীকে বাসায় যাওয়ার জন্য নামিয়ে দেন। এরপর থেকেই নিখোঁজ হন ফারদিন। ঘটনাটি পরিকল্পিত বলে ধারণা পরিবারের। তবে তিনি ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের শিকার’ নাকি ‘ছিনতাই বা অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে’ নিহত হয়েছেন; সে বিষয়ে তদন্ত করছে পুলিশ।

জানা গেছে, ময়নাতদন্তে ফারদিনের বুকে এবং মাথায় আঘাতের চিহ্ন পেয়েছেন চিকিৎসকরা। আঘাতজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত হতে বেশ কিছু উপাদান সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা সম্ভব হবে বলেও জানিয়েছেন তারা। 

পুলিশ এবং পরিবারের স্বজনরা বলছেন, ফারদিনের বান্ধবী একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। গত ৪ নভেম্বর রাতে তাকে রামপুরা ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে নামিয়ে দেন ফারদিন। এরপর থেকে আর কোনও হদিস না পায়নি ফারদিনের পরিবার। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ৫ নভেম্বর রামপুরা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ফারদিনের বাবা নুর উদ্দিন। পরিবারের সদস্যরা সুষ্ঠু তদন্ত ও এর বিচার দাবি করেছেন। 

রাজধানীর রামপুরা এলাকা থেকে গত চার নভেম্বর নিখোঁজের তিনদিন পর ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার করা হয় বুয়েটের শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের মরদেহ। 

জানা গেছে, গত চার বছর ধরে ওই তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে ফারদিনের। পাশাপাশি তারা একটি ডিবেট ক্লাবেরও সদস্য। ওই তরুণী ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী। ৪ নভেম্বর ঘোরাফেরার পর রাত সোয়া ১০টায় ওই তরুণী বাসায় ফিরে আসে বলে পুলিশকে তথ্য দিয়েছেন তিনি। সাধারণ ডায়েরি গ্রহণ করে ওই তরুণীসহ অন্যান্যদের সঙ্গে ফারদিনের মোবাইল কল রেকর্ডের সূত্র ধরেই তদন্ত করছে পুলিশ। কীভাবে ফারদিনের মৃত্যু হলো, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিকুল বলেন, ‘বুয়েটের শিক্ষার্থী নিখোঁজের ঘটনায় আমরা বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। এরই মধ্যে তার বান্ধবী, যাকে রামপুরা ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে নামিয়ে দিয়েছিল ৪ নভেম্বর রাতে তাকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তাকেও আমরা সন্দেহের বাইরে রাখছি না।’

হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘এসব বিষয়ে তদন্ত চলছে। এ ঘটনার পেছনে প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে আমরা কাজ করছি। বান্ধবীকে নামিয়ে দেওয়ার পর সে কোথায় কোথায় গিয়েছে, সে বিষয়ে আমরা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি। সেসব বিষয় তদন্ত করে পরবর্তী সময়ে বোঝা যাবে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড নাকি এর পেছনে অন্য কোনও ঘটনা ঘটেছে।’

ফারদিন ডেমরার কোনাপাড়ায় এলাকায় বড় হয়েছেন। নারায়ণগঞ্জে তার ময়নাতদন্ত প্রক্রিয়া শেষে বাদ জোহর ফারদিনের বর্তমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বুয়েটে নিয়ে আসা হবে তার মরদেহ। সেখানেই প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে মরদেহ তার আগের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ডেমরায় শামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পাগলা এলাকায় দাফন করা হবে।