ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

আবারও প্রমাণিত হলো প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দি: রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: শুক্রবার, নভেম্বর ৪, ২০২২

আবারও প্রমাণিত হলো প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দি: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আবারও প্রমাণিত হলো প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দি।  তিনি বলেন, গতকাল জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হুংকার দিয়ে বলেছেন,”বিএনপি বাড়াবাড়ি করলে আবারো খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠিয়ে দেবো।” প্রধানমন্ত্রী কথায় আবারো স্পস্ট হলো দেশে আইন আদালত হাইকোর্ট সুপ্রিম কোর্ট আর প্রশাসন সবই এখন গণভবনে। 

শুক্রবার বিকেলে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

রিজভী বলেন, রাষ্ট্রের প্রতি বিভাগে আওয়ামী চেতনা ঝড়ের বেগে সংক্রমিত হয়েছে। বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ তাঁর নিয়ন্ত্রণে। শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের বক্তব্য আবারো প্রমাণ করে মাদার অব ডেমোক্রেসি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কোন অপরাধের কারণে নয়, শেখ হাসিনার নির্দেশেই তিনি বন্দী।  তাঁর প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই বিচারের নামে প্রহসন মঞ্চস্থ করে আটকিয়ে রাখা হয়েছে দেশনেত্রীকে।  

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বীকারোক্তি দিয়েছেন আইন ও বিচার ব্যবস্থা তার হাতের মুঠোয় জিম্মি, তিনি ইচ্ছা করলে কাউকে জেলে দিতে পারেন আবার ইচ্ছা করলে কাউকে জেলের বাইরেও রাখতে পারেন। হীরক রানীর দেশে তিনি যা ইচ্ছে তাই করছেন। আইন-আদালত, প্রশাসন সবকিছু তার হুকুমের গোলাম, কেউ স্বতন্ত্রভাবে তাদের কাজকর্ম সঠিকভাবে পালন করতে পারে না। ১৪ বছর আগে ১৫টি মামলা মাথায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। ১৫ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির সেই মামলাগুলো আজ কোথায় ? ওই মামলাগুলো উনি চিবিয়ে খেয়েছেন। আর চার বারের প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ২ কোটি টাকার মিথ্যা মামলায় কারারুদ্ধ করে এখন হুংকার দিচ্ছেন আবারো জেলে পাঠাবেন। আপনার আমলে দেশ থেকে সরকারী হিসেবে ১১ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। কোন ব্যাংকে ডলার নেই, এক ব্যাগ রক্তের দামের চেয়ে এক কেজি চালের দাম এখন অনেক বেশী। শেখ হাসিনার উন্নয়নের সরকার মূলত: বাঁশবান্ধব সরকার। কারণ অধিকাংশ মেগা প্রকল্পে বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, কয়দিন আগে প্রধানমন্ত্রী আত্মস্বীকৃতি দিয়েছেন যে, বাড়াবাড়ি করলে 'হেফাজতের মতো বিএনপিকে' দমন করা হবে। এই হুমকী প্রমাণ করে যে, তিনি আবার ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের মতো ইতিহাসের রক্তাক্ত গণহত্যাযজ্ঞ চালাবার পাঁয়তারা করছেন। রাতের অন্ধকারে কিশোর বয়সী মাদরাসা ছাত্রদের ওপর নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালানোর কথা স্বীকার করেছেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কথা স্বীকার করেছেন। এখন বাকি আছে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের স্বীকারাক্তি।  তাঁর এই স্বীকারাক্তিগুলো কলংকিত ইতিহাস হয়ে থাকবে বিশ্ব ইতিহাসে।জনগণের কাঠগড়ায় আপনাকে দাঁড়াতেই হবে।

বিএনপি নেতা বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দী করেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান ও তার সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমানের নামে সাজানো মামলায় ক্যাঙ্গারু কোর্টের গ্রেফতারী পরোয়ানা দিয়েছেন। আপনি এসব করে মনে করছেন যে, আপনার তক্তেতাউস অটল থাকবে। আসলে অজানা ভয় থেকেই জনগণের এ মূহুর্তে আশা-আকাক্সখার প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং দেশনায়ক তারেক রহমানকে হয়রানী করছেন। কিন্তু আপনি এখনো মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন। আপনার দমননীতিকে অগ্রাহ্য করে বিএনপি’র গণসমাবেশে জনতার ঢলে যে অপরাজেয় জীবনীশক্তির স্ফুরণ ঘটেছে তা দেখে আপনি আরো বেশী প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উঠেছেন। আপনি জাতীয়তাবাদী শক্তির ওপর যে আক্রমণ চালাচ্ছেন সেটি টিকে থাকার আখেরী চেষ্টা। নিজেরা পতনের ভয়ে কম্পমান হয়ে কোন ভয় দেখিয়ে আর আন্দোলন বন্ধ করতে পারবেন না। মানুষ ঘর ছেড়েছে, তারা পতন ঘটিয়ে তবে ঘরে ফিরবে। শহীদের রক্তপণ শপথ নিয়ে জাতীয়তবাদী শক্তি এবার শেখ হাসিনার পতন ঘটাবে।

রিজভী আরো বলেন, গতকাল নারায়ণগঞ্জের ভুলতায় ছাত্রদলের মশাল মিছিলে হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সশস্ত্র গুন্ডারা।  হামলা থেকে বাঁচতে গাড়ীচাপায় মারা যায় রুপগঞ্জ থানার কাঞ্চন পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ইমন হাসান অনীক।  এটি যুবলীগ-ছাত্রলীগ কর্তৃক সরাসরি হত্যাকান্ড। আহত হয়েছে ছাত্রদল নেতা আবু হানিফ, আপু মিয়া, আমির হোসেন প্রমূখ।  তিনি  এই হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।   

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও মহানগরের আহবায়ক আব্দুস সালাম , চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী এডভোকেট শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মীর শরাফত আলী সপু, রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, ব্যারিষ্টার নাসির উদ্দিন অসীম, কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবন, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।