প্রতিটি মানুষের কাছে সফলতার অর্থ ভিন্নতর। এটা সম্পূর্ণ আপেক্ষিক বিষয়। একজনের সাথে অন্যজনের সফলতা তুলনা করাও বোকামি। কয়েকটি উদাহরণ দিচ্ছি, বিষয়টা সহজ হবে।
১. একজন ছাত্র সারাদিন পড়ালেখা করে। উদ্দেশ্য প্রথম হওয়া। যখন সে পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করে, তখন সেটাই তার কাছে সফলতা। আবার কেউ হয়ত পরীক্ষায় প্রতি বিষয়ে ৩৩ পার্সেন্ট মার্কস পেয়ে পাশ করেই নিজেকে সফল মনে করে।
২. একজন চাকরিপ্রার্থী দিন-রাত পরিশ্রম করে যখন একটা চাকরি পেয়ে যায়, তখন সেই চাকরি পাওয়াটাই তার জীবনের সফলতা। আবার কেউ হয়ত কোনো পরিশ্রম না করেই, চাচা-মামার জোরে চাকরি পেয়ে নিজেকে সফল ভেবে থাকেন।
৩. কেউ একজন ব্যবসা করে অনেক লাভবান হচ্ছে, সেটাই তার কাছে সফলতা। আবার কেউ তিন বেলা পেট ভরে খেতে পেয়েই নিজেকে সফল মানুষ মনে করেন।
৪. কারো কাছে অগাধ টাকা-পয়সা, অনেক ক্ষমতা মানে সফলতা। আবার কেউ নিরিবিলি, শান্তিময় জীবন যাপন করার মধ্যেই সফলতা খুঁজে পান।
৫. কেউ নিজের অর্জিত সম্পদ থেকে মানুষকে দান করে, নিজেকে সফল ভাবেন। আবার কেউ সম্পদ কুক্ষিগত করে রাখার মাধ্যমেও নিজেকে সফল মনে করেন।
৬. কেউ অন্যের জন্য মানবিক কাজ করে নিজেকে সফল মনে করেন। আবার কেউ অন্যকে ঠকিয়েও নিজেকে সফল ভাবেন।
৭. কেউ বাবা-মায়ের সেবা যত্নের মাধ্যমে নিজেকে সফল মনে করেন। সব সময় তাদের পাশে থাকার মাধ্যমেই শান্তি খুঁজে ফেরেন। আবার অনেক সন্তান বিদেশ, শহর কিংবা দূরে অবস্থান করে সেখান থেকেই বাবা-মায়ের কাছে প্রতি মাসে কিছু টাকা পাঠানোর মাধ্যমে নিজেকে সফল ভাবেন।
সফলতার কোনো মানদন্ড নেই। যে দৌড়াতে চায়, তার কাছে দৌড়াতে পারাটা সফলতা। আবার যে স্থির থাকতে চায়, তার কাছে স্থির থাকতে পারাটাই সফলতা। আসল কথা হচ্ছে, যে যেটা চায়, যখন সে সেটা করতে পারে, তার কাছে সেটাই সফলতা।
লেখকঃ রিয়াজুল হক, যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক।