বর্ষার পরে শুভ্র ঋতু শরতের আগমন। এ সময় কাশফুল আকাশে সাদা মেঘ হয়ে নরম তুলোর মতো ভেসে বেড়ায়। এদিকে দিগন্ত জোড়া কাশফুলের মনোরম দৃশ্য মানব মনকে করে তোলে আন্দোলিত ও প্রফুল্ল।
গোপালগঞ্জে বিভিন্ন নদ নদীর তীরে, বিসিক শিল্পনগরীতে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে, কুয়াডাঙ্গা পুলিশ লাইন এলাকাসহ নানা জায়গায় ফুটেছে কাশফুল। জেলার ৫টি উপজেলার সর্বত্রই বাতাসে দোল খাচ্ছে শরতের দৃষ্টিনন্দন ধবধবে সাদা কাশফুল । এ ফুলের ছোঁয়ায় সবার শরীর-মন জুড়িয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিনের অফিস আর যানবাহনের শব্দদূষণ থেকে রেহাই পেতে গ্রামে গঞ্জে ছুটে চলছে অনেকেই কাশবনের সৌন্দর্য দেখতে।
কলেজ ছাত্রী আঁখি বিশ্বাস বলেন,সারাদিনের ক্লান্তি আর অবসাদ দূর করতে শরতের বিকেলে মনকে প্রফুল্ল করতে কাশবনে ঘুরার মজাই আলাদা। কাশফুলের নরম ছোঁয়ায় স্নিগ্ধ বিকেল কাটাতে একটু শান্তির খোঁজে হারিয়ে যাওয়া যায় রাশি রাশি কাশফুলের মেঘের ভেলাতে।
জেলা কালচারাল অফিসার মামুন বিন সালেহ বলেন, এসময়ে দখিণা বাতাসে কাশফুলগুলো ঢলে ঢলে মানুষের সঙ্গে কথা বলে। আহ্বান জানায় তার সৌন্দর্য উপভোগ করতে।
কাশফুলের ছবি তোলার হিড়িক পড়েছে গোপালগঞ্জের তরুণ-তরুণীদের মধ্যে। এলোমেলো বাতাসের সাথে খোলা রাস্তায় হেঁটে বেড়ানো, দু'ধারে সাদা মেঘের মতন ফুলের মেলা, মনের আনন্দে নিজের সাথে কিছুক্ষণ সময় কাটানো অনেক মধুর।
শরৎকাল আর কাশফুলের বর্ননা দিয়ে প্রবীন কবি ও সাংবাদিক রবীন্দ্রনাথ অধিকারী বলেন, মহাকবি কালিদাস শরৎ বন্দনায় বলেছিলেন 'প্রিয়তম আমার, ঐ চেয়ে দেখ, নববধূর ন্যায় সুসজ্জিত শরৎকাল সমাগত।'
তিনি 'ঋতুসংহার' কাব্যে আরও লিখেছেন 'কাশফুলের মতো যার পরিধান, প্রফুল্ল পদ্মের মতো যার মুখ, উন্মত্ত হাঁসের ডাকের মতো রমণীয় যার নূপুরের শব্দ, পাকা শালি ধানের মতো সুন্দর যার ক্ষীণ দেহলতা, অপরূপ যার আকৃতি সেই নববধূর মতো শরৎকাল আসে।'