দেশে মানসিক রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরাধীন ৫০০টি ‘মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র’ উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ওয়ার্ল্ড মেন্টাল হেলথ সামিটে অংশগ্রহণ করার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে জাহিদ মালেক বলেন, ওয়ার্ল্ড মেন্টাল হেলথ সামিটে আমাদের দেশের করোনা নিয়ন্ত্রণ এবং টিকাদানের সফলতার প্রশংসা করেছেন। অন্যদিকে তারা এটাও বলেছেন আপনাদের দেশে মানসিক রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সুতরাং আমাদেরকে এদিকটাও খেয়াল রাখতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, মানসিক রোগ কেন হয় আমাদেরকে সে দিকটায় এখন থেকেই নজর দিতে হবে। করোনা ভাইরাস কিন্তু মানসিক রোগও বাড়িয়ে দিয়েছে। করোনার কারণে অনেককে প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, অনেকে চাকরি এবং ব্যবসা হারিয়েছেন। এই কারণেও মানসিক রোগ বেড়েছে। যারা মাদক সেবন করেন, যারা বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হয় তারাও কিন্তু মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়। সুতরাং মানসিক রোগ যেন না হয় সে দিকটায় আমাদের নজর দিতে হবে।
ডেঙ্গু প্রসঙ্গে উদ্বেগ জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। সব জেলাতেই এখন ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যাচ্ছে। ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা না কমলে ডেঙ্গুতে মৃত্যু কমবে না। ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কমাতে হলে মশা নিধন করতে হবে।
আমি দেশবাসীকে আহ্বান জানাবো সবাই যেন তাদের নিজেদের বাসাবাড়ি এবং আঙ্গিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখেন। রাতে যেন মশারী ব্যবহার করে। মশার কামড় থেকে যেন নিজে এবং পরিবারকে সবাই রক্ষা করে। মশা যেসব ডোবা এবং নালায় জন্মাচ্ছে, সেগুলোতে মশা নিধন কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। আমি আশা করব, আমাদের সিটি কর্পোরেশন এবং পৌরসভাগুলো যেন এই বিষয়ে আরো বেশি পদক্ষেপ গ্রহণ করে, যেন ডেঙ্গু আক্রান্ত এবং মৃত্যুর হার কমে যায়।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সাইফুল হাসান বাদলের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, সন্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মো. খুরশিদ আলম।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহানারা বানু (এনডিসি গ্রেড-১)।
দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে প্রায় ২৫ থেকে ৩৫ হাজার জনসাধারণ বসবাস করে। সুবিধাবঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীই এখানে বাস করে। এসব জনগোষ্ঠীর মধ্যে মা, নবজাতক ও শিশু মৃত্যু হার তুলনামূলকভাবে বেশি। এ পরিপ্রেক্ষিতে, জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ২৪/৭ স্বাভাবিক প্রসবসেবা দেওয়ার জন্য ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রকে মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
৩৩৬৪টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্র থেকে ৫০০টি কেন্দ্রকে প্রাথমিক পর্যায়ে মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রে রুপান্তর করা হচ্ছে। পরে পর্যায়ক্রমে সব কেন্দ্রকে মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রে রুপান্তর করা হবে।