প্রতি মাসের নির্দিষ্ট কিছু দিনে বিভিন্ন দেশে কিছু দিবস পালিত হয়। ঐ নির্দিষ্ট দিনে অতীতের কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে স্মরণ করা বা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি করতেই এই সব দিবস পালিত হয়। পালনীয় সেই সব দিবস গুলোর মধ্যে একটি হলো বিশ্ব মেরুদণ্ড দিবস।
আমাদের শরীরের প্রত্যেকটা অংশই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে কোনো একটি অংশের কাজ বন্ধ হয়ে গেলেই নানান সমস্যায় মুখে পড়তে হয়। ঠিক সেরকমই, শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ 'মেরুদণ্ড', যার উপর ভর করে আমরা দাঁড়িয়ে থাকি, হাঁটা-চলা করি, হাত-পা নাড়ি।
এই মেরুদণ্ডের কোনোরকম সমস্যা হলেই হাঁটা, বসা, দাঁড়ানো সবকিছুতেই সমস্যা হয়, এমনকি শিরদাঁড়া বা মেরুদণ্ডে কোনো গুরুতর সমস্যা হলে তা মানুষকে সারাজীবনের জন্য পঙ্গুও করে দিতে পারে।
এই মেরুদণ্ড সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতেই প্রতিবছর ১৬ অক্টোবর পুরো বিশ্বে পালিত হয় 'বিশ্ব স্পাইন দিবস' বা বিশ্ব মেরুদণ্ড দিবস। এই দিবস পালনের মূল উদ্দেশ্য হলো, পিঠ ও কোমরের সমস্যা এবং মেরুদণ্ডের বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো। এইদিন সারা বিশ্বজুড়ে, বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পেশায় যারা আছেন এবং রোগীরা এই দিবস সংক্রান্ত নানান অনুষ্ঠানে যোগ দান করেন।
আমাদের মেরুদণ্ডের যত্ন নেয়া এবং মেরুদণ্ডকে সক্রিয় রাখার গুরুত্ব তুলে ধরে। অনুমান করা হয় যে, বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি মানুষ পিঠের ব্যথায় বা কোমরের ব্যথায় ভোগেন। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউরোলজিকাল ডিসঅর্ডারস অ্যান্ড স্ট্রোকের মতে, প্রায় ৮০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্করা তাদের জীবনের কোনো একসময় কোমরের ব্যথা বা পিঠের ব্যথায় ভোগেন।
২০১২ সালে সর্বপ্রথম বিশ্ব মেরুদণ্ড দিবস চালু করে ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অফ চিরোপ্র্যাকটিক। সেই বছরে এই দিবসের থিম বা প্রতিপাদ্য ছিল 'Straighten Up and Move'। এটি, নিয়মিত আমাদের মেরুদণ্ডকে সক্রিয় এবং স্বাস্থ্যকর রাখার সচেতনতা সম্পর্কে বার্তা দেয়।
বিশ্ব মেরুদণ্ড দিবসের লক্ষ্যগুলো হলো-
> বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে মেরুদণ্ডের স্বাস্থ্য এবং মেরুদণ্ডের ব্যাধি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
> মেরুদণ্ডের ব্যাধিগুলো কমানোর জন্য একটি আন্তঃশৃঙ্খলাবদ্ধ, সহযোগী পদ্ধতির বিকাশ করা।
> মেরুদণ্ডের ব্যাধিগুলো সম্পর্কে আলোচনা এবং প্রচারের জন্য সুযোগ প্রদান। একজন মানুষ বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্নভাবে মেরুদণ্ডের ব্যথা, বেদনাতে আক্রান্ত হয়। তবে নিয়মিত শরীরচর্চা আমাদের মেরুদণ্ডের বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধ করতে পারে এবং স্বাস্থ্যকর রাখতে পারে। তাই, সেইদিকে আমাদের প্রত্যেকের খেয়াল রাখতে হবে।