যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসএ) সাবেক সদস্য এডওয়ার্ড স্নোডেন যিনি দেশটির ইন্টারনেট নজরদারি কর্মসূচির তথ্য ফাঁস করে দিয়ে বিশ্বে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন তাকে এবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির নাগরিকত্ব প্রদান করেছেন। তার বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনে যুক্তরাষ্ট্র। ৯ বছর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে রাশিয়ায় বসবাস করছেন স্নোডেন।
জানা গেছে, সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) স্নোডেনের নাগরিকত্ব মঞ্জুর করে একটি ডিক্রিতে সই করেছেন পুতিন। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসএ) সাবেক চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তা ছিলেন এই এডয়ার্ড স্নোডেন।
ক্রেমলিন ২০১৩ সালে স্নোডেনকে অস্থায়ী আশ্রয়ের মর্যাদা দিয়েছিল। যে ঘটনা রাশিয়ার সঙ্গে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসনের একটি কূটনৈতিক দ্বন্দ্বের জন্ম দেয়।
২০২০ সালে তিনি স্থায়ী আবাসের সুযোগ পান স্নোডেন এবং তার পরেই নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেন। সেই সময় স্নোডেন টুইট করে বলেন যে তিনি অবশেষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসার অপেক্ষায় ছিলেন। এখন স্নোডেনের নাগরিকত্ব মঞ্জুর হওয়ার পর তার স্ত্রী লিন্ডসে মিলসও রাশিয়ার নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন স্নোডেনের আইনজীবী। লিন্ডসে ২০২০ সালে একটি ছেলে সন্তান জন্ম দেন।
নাগরিকত্ব পাওয়া নিয়ে স্নোডেন তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেননি। ক্রেমলিনও এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় আগ্রাসন শুরু করেন এবং যুদ্ধক্ষেত্রে সম্প্রতি বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছেন। গত সপ্তাহে ৩ লাখ সৈন্য সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সরকার খসড়া করেছে বয়স্ক পুরুষদের জন্য সীমান্ত বন্ধ করে দেবে এমন আশঙ্কার মধ্যে দেশজুড়ে বিক্ষিপ্ত প্রতিবাদ শুরু হয়েছে।
৩৯ বছর বয়সী স্নোডেন রাশিয়ান আইনের অধীনে সেনাবাহিনীতে কাজ করেননি এবং একজন সংরক্ষিত ব্যক্তিও নন। ফলে যুদ্ধের জন্য তিনি কোনো সার্ভিস দিতে পারবেন কিনা সে বিষয়টি এখনো সন্দিহান।
এডয়ার্ড স্নোডেন শ্রেণীবদ্ধ নথির ভাণ্ডার জনসমক্ষে প্রকাশ করেন যা দেখিয়েছে যে কীভাবে মার্কিন ও ব্রিটিশ সরকার নাগরিকদের যোগাযোগ পর্যবেক্ষণ করছে। তবে মার্কিন গোয়েন্দাদের সমালোচিত কর্মকাণ্ড ফাঁস করে বিশ্ববাসীর প্রশংসাও কুড়িয়েছেন স্নোডেন।
সূত্র: ব্লুমবার্গ, রয়টার্স