পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল। আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র জমা না দিলেও মৌখিকভাবে ইতোমধ্যেই অর্থমন্ত্রীর পদ ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় এই তথ্য নিজেই সামনে এনেছেন তিনি। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান আগে থেকেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করছিল। আর সাম্প্রতিক বিধ্বংসী বন্যার কারণে সেই সংকট আরও চরম আকার ধারণ করেছে।
আলজাজিরা বলছে, পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার পর চার বছরেরও কম সময়ের মধ্যে পদত্যাগকারী পঞ্চম পাকিস্তানি অর্থমন্ত্রী হলেন মিফতাহ ইসমাইল। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে একটি বৈঠকে পদত্যাগের পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
রোববার গভীর রাতে টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় মিফতাহ ইসমাইল বলেন, ‘আমি মৌখিকভাবে অর্থমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। পাকিস্তানে পৌঁছে আমি আনুষ্ঠানিক পদত্যাগ করব।’
মিফতাহ ইসমাইল এবং শেহবাজ শরিফ বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন এবং আগামী সপ্তাহের শুরুতে পাকিস্তানে ফিরবেন।
পাকিস্তানের অর্থনীতি ক্রমাগতভাবে অস্থির সময় পার করছে। দেশটিতে চলতি হিসাবের ঘাটতি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি পরিবার ও ব্যবসা উভয়ের ওপরই চাপ সৃষ্টি করেছে। এছাড়া সাম্প্রতিক বিধ্বংসী বন্যা আগে থেকেই বিদ্যমান অর্থনৈতিক সংকটকে চরম মাত্রায় বাড়িয়ে দিয়েছে। বন্যায় পাকিস্তানের আনুমানিক ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষতি হয়েছে এবং দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।
গত শনিবার বিশ্বব্যাংক পাকিস্তানকে প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দেওয়ার কথা জানিয়েছে। বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার শনিবার পাকিস্তানে তার প্রথম সরকারি সফর শেষ করার পর এক বিবৃতিতে এই অঙ্গীকার করেন।
তিনি বলেন, ‘বিধ্বংসী বন্যার কারণে জীবন ও জীবিকার ক্ষয়ক্ষতিতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত এবং যারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত তাদের তাৎক্ষণিক ত্রাণ প্রদানের জন্য আমরা ফেডারেল ও প্রাদেশিক সরকারের সাথে কাজ করছি।’
বিশ্বব্যাংক গত সপ্তাহে পাকিস্তানের জন্য বন্যা ত্রাণে ৮৫ কোটি মার্কিন ডলার প্রদানের জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সাইডলাইনে প্রধানমন্ত্রী শরিফের সাথে একটি বৈঠকে সম্মত হয়। সেই সহায়তার মধ্যেই সর্বশেষ ঘোষিত এই ২ বিলিয়ন ডলারের সহায়তাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
আলজাজিরা বলছে, গত দুই মাসে কেবল সিন্ধ প্রদেশেই প্রায় ১০ হাজার ডাক্তার, নার্স এবং অন্যান্য চিকিৎসা কর্মী পাঠিয়েছে পাকিস্তান। মূলত বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের সহয়তা করার জন্য এই বিপুল সংখ্যক স্বাস্থকর্মী প্রদেশটিতে পাঠাতে হয়েছে।