পুলিশ বিএনপি এবং এর অঙ্গসংগঠন সমূহের নেতাকর্মীদের তালিকা সংগ্রহ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত পুলিশ বিএনপিসহ বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করার নামে হয়রানি করছে এবং দেশে বিরাজমান ভয়ের পরিস্থিতিকে আরো আতঙ্কগ্রস্থ করে তুলছে।
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ রাজনৈতিক কর্মীদের একজনের কাছ থেকে অন্যজনের তথ্য সংগ্রহেও লিপ্ত রয়েছে। পুলিশী এ ধরনের কর্মকান্ড বাংলাদেশ সংবিধান, ফৌজদারী কার্যবিধি, পুলিশ আইন বা পুলিশ বিধি কিংবা অন্য কোন আইন দ্বারা কোন ভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। পুলিশের এ ধরনের কার্যক্রম একদিকে যেমন নাগরিকের গোপনীয়তার অধিকার ক্ষুণ্ন করছে অন্যদিকে তেমনি নাগরিকের আইনী অধিকার ভোগ করা এবং তার ব্যক্তি স্বাধীনতার উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ বলে প্রতীয়মান হয় যা সংবিধানের ৩১,৩২ এবং ৪৩ অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
তিনি বলেন, ফৌজদারী কার্যবিধির ৪২ এবং ৪৪ ধারায় একজন নাগরিক যুক্তিসঙ্গত কারনে কোন পুলিশ কর্মকর্তাকে সহযোগিতা করবে বলে বলা হয়েছে। সেই প্রেক্ষিত ভিন্ন। ফৌজদারী কার্যবিধির আওতায় যদি কোন পুলিশ কর্মকর্তা কোন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার এখতিয়ার ধারণ করে বা আমলযোগ্য অপরাধের সম্পৃক্ততার যুক্তিসম্মত কারন পায় এবং সে ব্যক্তি যদি পালানোর চেষ্টা করে কিংবা তার শান্তিশৃংখলা ভঙ্গ করার কোন আশংকা থাকে বা রেলওয়ে, কেনাল, টেলিগ্রাফ অথবা সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বা ৪৪ ধারায় উল্লেখিত দন্ডবিধির কোন অপরাধ সংঘটনের তথ্য থাকে তবেই কেবল উক্ত পুলিশ কর্মকর্তা একজন নাগরিকের সহযোগীতা চাইতে পারে, অন্য কোন কারনে নয়। উক্ত ৪২ এবং ৪৪ ধারা প্রয়োগ করতে গেলেও আগে প্রমাণ করতে হবে যে, নাগরিকের কাছ থেকে কোন তথ্য বা সহযোগিতা চাইতে হলে যুক্তিসঙ্গত কারন থাকতে হবে এবং সে কারন অবশ্যই উল্লেখিত আইনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে।
ফখরুল বলেন, চলমান অবস্থায় ইহা দৃশ্যত: প্রতীয়মান হয় যে, পুলিশ বিএনপিসহ ভিন্নমতালম্বীদের দমনের উদ্দেশ্যে তাদের গণহারে শুধু নাম ঠিকানায় নয়, তাদের পেশা, সন্তান সম্পত্তির বিবরণসহ চৌদ্দ গোষ্ঠীর যাবতীয় বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছে যা দেশে বিরাজমান আতঙ্কের পরিস্থিতিকে ভয়াবহ করে তুলছে। বিএনপি এই অবস্থার অবসান চায়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা পুলিশ কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানাচ্ছি, এই ভাবে সাধারণ নাগরিক, রাজনৈতিক কর্মীদের হয়রানী বন্ধ করে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য তারা তাদের সংবিধানিক দায়িত্ব পালন করবেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সভায় যোগ দেয়ায় ভাবমূর্তি রক্ষায় লোক দেখাতে বিএনপির কর্মসূচিতে হামলা না করার কথা বলছে ক্ষমতাসীনদলের নেতারা।
সাফ জয়ী নারী ফুটবলারদের দেশের জন্য গর্ব বয়ে আনায় বিএনপির পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান মির্জা ফখরুল।
রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধীতার পরও আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারে ৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ জাতির সাথে মশকরা করছে কমিশন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।