ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

ঢাবিতে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি

নাইমুর রহমান ইমন, ঢাবি প্রতিনিধি | আপডেট: মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২

ঢাবিতে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি
বাংলাদেশেী সীমানায় মায়ানমারের সামরিক আগ্রাসী নীতির প্রতিবাদ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি ছাত্র অধিকার  পরিষদের।

১৯ সেপ্টেম্বর (সোমবার) বিকেল ৩টায় রাজু ভাস্কর্যের সামনে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ কর্তৃক  আন্তর্জাতিক নীতিমালা অমান্য করে স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশে মিয়ানমার কর্তৃক সীমানা লঙ্ঘন ও হামলার নিন্দায় এবং বাংলাদেশের সীমান্তে প্রাণহানি ও আহতের ঘটনার প্রতিনাদে ছাত্র সমাবেশ পালিত হয়। 

ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাকিল মিয়ার সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন,কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা।

ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি, বিন ইয়ামীন মোল্লা "মিয়ানমার জান্তা সরকার টেইক ব্যাক রোহিঙ্গা" স্লোগানে রাজু ভাস্কর্য মুখরিত করেন। তিনি বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যে বলেন, "We want Bangladeshi Military give perfect replay on Bangladesh -Myanmar Border"। 


তিনি আরো বলেন,  "আওয়ামীলীগ সরকার নতজানু পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করছে। এটা আমাদের রক্তের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে।  


তিনি আরও উল্লেখ করেন যে মিয়ানমার থেকে মর্টার শেল ছোড়া হচ্ছে, তাদের ছোড়া শেলে মানুষ আহত হচ্ছে, নিহত হচ্ছে আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছে যে, এটা একটা গুড নিউজ যে, মর্টার শেল ব্লাস্ট হয় নি। এমন অপদার্থ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ চাই। তিনি আরো বলেন,  বড় বড় দলের বড় বড় নেতারা দেশকে বিভাজনের রাজনীতি করছে।  তিনি আরো বলেন, আমরা ছাত্ররা ৭১ এ জাতিকে পথ দেখিয়েছি। আবারো স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের উপর আক্রমণ আসলে আমরা সহ্য করবো না। আমার মায়ের গায়ে আঘাত লাগলে আমি কখনো চুপ থাকতে পারি না। যারা এরপরে ও চুপ হয়ে আছে কোন প্রতিবাদ নেই তারা কখনো দেশপ্রেমিক হতে পারে না। আমরা দেখি ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন বড় বড় মিছিল করে ক্যাম্পাসে, তাদের দলের অন্তর্জাতিক অর্জন নিয়ে, আন্তর্জাতিক যোগাযোগ নিয়ে।  এটা আসলে কি? এটা এওয়ার্ড আর সার্টিফিকেটেই সীমাবদ্ধ।  সত্যি হলে রহিঙ্গা সমস্যা থাকত না। সীমান্ত হত্যা হতো না। বানিজ্য বৈষম্য থাকত না। তিস্তা চুক্তি হতো, বাংলাদেশ ও ট্রানজিট পেত। 

খুব অশ্চর্যের ব্যাপার হলো যে, যেখানে ছাত্রলীগ আওয়ামিলীগের নেতারা নিজেদের চাদাবাজি করার এরিয়া অন্য কেউ দখলে নিলে যুদ্ধ বাধিয়ে দেয়, লাশ ফেলে দেয় সেখানে দেশ আক্রান্ত হলেও তারা চুপ। তারা আসলে চাদাবাজি আর ভাগাভাগির রাজনীতি করে। এম পি মন্ত্রী হবার রাজনীতি করে। লাশের উপর দিয়ে ক্ষমতায় আসার রাজনীতি করে।

তিনি আল্টিমেটাম দেন,  যদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পদ থেকে সরিয়ে না দেয়া হয়, সীমান্তে কড়া জবাব না দেয়া হয়, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিয়ানমার দূতাবাস অভিমূখে লংমার্চ করবো।

বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, "দেশের সংকটে সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে বাংলাদেশের জনগনকে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করতে হবে। জনগণের নেতৃত্বে গণপ্রতিরক্ষার   প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।কূটনৈতিক ব্যর্থতার দায় নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। 

তিনি আরও যোগ করেন, "ভোটারবিহীন অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি  বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে ফেলছে। যেহেতু সরকার ভোট চুরি করে ক্ষমতায় আছে ফলে তারা বিদেশি পরাশক্তির সঙ্গে আতাত করে ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়। এই সরকার বিগত ১৩ বছরে নিজেদের মেরুদন্ডহীন পররাষ্ট্রনীতি দ্বারা ভারতের কাছে মথানত করে সব মেনে নেয় এখন মায়ানমারের নিকটও সার্বভৌমত্বের হুমকির মুখে। ছাত্র অধিকার পরিষদ যেকোন পরিস্থিতিতে দেশের জন্য প্রস্তুত আছে"।

ঢাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আখতার হোসেন বলেন, "বাংলাদেশ সীমান্তে মায়ানমার জান্তা বাহিনীর গোলা নিক্ষেপের প্রতিবাদে এখন পর্যন্ত এদেশের সরকারের নিরব ভুমিকা আমাদের স্তম্ভিত করেছে। আমরা এই ঘটনার নিন্দা জানাই। আমরা বলতে চাই, দেশের সার্বভৌমত্বের উপরে আঘাত আসে আর এসময় এদেশের বাহিনীকে বসিয়ে রেখে তামাশা দেখার জন্য জনগণ ভ্যাট-ট্যাক্স দেয় না।"

তিনি সেনাবাহিনীর ভুমিকা, বিজিবির ভুমিকা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভুমিকা ও সরকারের ভুমিকা প্রশ্নবিদ্ধ করে বলেন, "এই সরকার দেশের গণতন্ত্র, নাগরিক অধিকার, ন্যায়বিচারসহ সব কিছু ধ্বংস করেছে। আমরা বলে দিতে চাই, দেশের ভেতরের সব ধ্বংস করেছেন, যদি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্নে এমন নতজানু থাকেন, তবে ক্ষমতা ছাড়তে আপনাদেরকে বাধ্য করা হবে। আর এদেশের আপামর ছাত্র জনতাকে সাথে নিয়ে আমরা স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি নিয়ে সামনে আগাবো।"