রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় বেলা পৌনে ১১টার দিকে দিনের প্রথম শোক যাত্রা শুরু হয়েছে। ওয়েস্টমিনস্টার হল থেকে রানির কফিন আস্তে আস্তে রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্যানুষ্ঠানের জন্য ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
গ্যারিসন সার্জেন্ট মেজর অ্যান্ড্রু স্ট্রোক শোকযাত্রা শুরু করেন। উইন্ডসর ক্যাসেলের দিকে পায়ে হেঁটে ধীরে ধীরে আসতে শুরু করেছে জনতা। তাদের মধ্যে যেমন রয়েছেন রানির পরিবারের তরুণ সদস্যরা, তেমনি আছেন বয়স্ক সৈনিকরাও।
এখানেই চার বছর আগে এভাবে জনতা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেছিল, কিন্তু সেদিনের সঙ্গে আজকের অনেক পার্থক্য। সেদিন সবাই এসেছিল প্রিন্স হ্যারি আর মেগান মার্কেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে। তাদের দেখার জন্য অপেক্ষা করেছিল উৎসুক জনতা। রৌদ্রোজ্জল সেই দিনে সবাই ছিল উৎফুল্ল, উৎসবের আমেজে। ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে যখন রাজকীয় যুগল সেন্ট জর্জেস চ্যাপেলে রওনা হয়েছিল, সবাই চিৎকার করে তাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছিল।
কিন্তু আজ আবারো সবাই সমবেত হয়েছে, কিন্তু এবার তারা অপেক্ষা করছে রানিকে চ্যাপেলে সমাহিত করার জন্য। যেখানে তিনি প্রয়াত স্বামী ডিউক অব এডিনবরা, তার বাবা রাজা ষষ্ঠ জর্জ, তার মা এবং বোন প্রিন্সেস মার্গারিটের কবরের পাশে সমাহিত হবেন।
এবার সবাই নতুন কোন যুগের সূচনা নয় বরং একটি যুগের সমাপ্তির প্রত্যক্ষদর্শী হতে এসেছেন। প্রায় দুই হাজার মানুষ রানির শেষকৃত্যে অংশ নিচ্ছেন। রাজধানীর রাস্তায় জড়ো হতে শুরু করেছে হাজার হাজার মানুষ।
শেষকৃত্যের আগে রাজা তৃতীয় চার্লস জানিয়েছেন, তার এবং তার পরিবারের প্রতি এতো জনসমর্থন দেখে তিনি অভিভূত। বিদেশি রাজপরিবারের সদস্য এবং বিশ্ব নেতারাও এতে অংশ নিচ্ছেন।
স্কুলসহ অনেক দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংকও আজ বন্ধ থাকবে। অ্যাবে থেকে রানির মরদেহ নিয়ে শোক মিছিল মধ্য লন্ডনের হাইড পার্ক কর্নারে নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর রানির মরদেহ উইন্ডসর দুর্গে নিয়ে যাওয়া হবে।
ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবের দরজা স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় খুলে দেওয়ার পরই সেখানে অতিথিরা প্রবেশ করতে শুরু করেন। এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে পার্লামেন্ট স্কয়ার এবং ভিক্টোরিয়া স্ট্রিটের স্বাভাবিক চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যেই রাজনীতিকরা অ্যাবেতে প্রবেশ করে আসন গ্রহণ করতে শুরু করেছেন। কুইন কনসোর্ট ক্যামিলার পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে তার ছেলে টম পার্কার বোয়েলস প্রবেশ করেছেন। যুক্তরাজ্যের বর্তমান ও সাবেক মন্ত্রীদের পাশাপাশি আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের রাজনীতিকরাও আসতে শুরু করেছেন।
নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে রানিকে শেষবিদায় জানানোর আয়োজন করা হয়েছে। ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে পুরো দেশেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এর আগে বাকিংহাম প্রাসাদ থেকে দেওয়া এক ঘোষণায় জানানো হয়, তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে ১৯ সেপ্টেম্বর। ব্রিটেনে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে এই দিনটিতে।