ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৮, ২০২৪ |

EN

চাঁদপুরে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: সোমবার, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২

চাঁদপুরে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল
চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো. ইউসুফ গাজীর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেছেন জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা কামরুল হাসান।

রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে একটি মামলায় ইউসুফ গাজীর সাজা বহাল থাকায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।

এ সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, ওই চেয়ারম্যান প্রার্থী চাইলে মনোনয়নপত্র বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে আগামী তিন দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন।

এর আগে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো.ইউসুফ গাজীকে দণ্ডপ্রাপ্ত ও পলাতক আসামি হিসেবে জেলা পরিষদ আইন অনুযায়ী নির্বাচনে ‘অযোগ্য’ দাবি করে তার মনোনয়নপত্র বাতিলের আবেদন করেন প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সদ্য পদত্যাগী চাঁদপুর জেলা পরিষদ প্রশাসক ওসমান গনি পাটওয়ারী।

জানা গেছে, কয়েকবছর আগে একটি দিয়াশলাই ফ্যাক্টরিতে কাঠ সরবরাহের যৌথ ব্যবসার প্রস্তাবনার পরিপ্রেক্ষিতে ৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে মো. ইউসুফ গাজীর বিরুদ্ধে ২০০৪ খুলনার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন  হুমায়ুন কবির নামে এক ব্যক্তি। এই মামলায় বিচারিক আদালত আসামিকে খালাস দেন। পরে ২০০৮ সালে ওই রায়ের বিরুদ্ধে খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন বাদী। আপিল শুনানি শেষে মো. ইউসুফ গাজীর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২০১১ সালের ৫ অক্টোবর পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়, এই রায় তিনি গ্রেফতার তথা আত্মসমর্পণের তারিখ হতে কার্যকর হবে। সেই সঙ্গে আসামিকে রায় ঘোষণার ত্রিশ দিনের মধ্যে সাজা ভোগের জন্য খুলনার অতিরিক্ত চিফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

এরপর ওই দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হলে হাইকোর্ট বিভাগের ডিভিশন বেঞ্চ রুল জারি করে দাণ্ডাদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে রিট পিটিশনটি পূর্ণাঙ্গ শুনানি শেষে বিচারপতি মাইনুল হোসেন চৌধুরী এবং বিচারপতি জে বি এম হাসানের আদালত দাণ্ডাদেশের স্থগিতাদেশ বাতিল করে পাঁচ বছরের সাজা ও অর্থদণ্ড বহাল রাখেন।

এরপর মো. ইউসুফ গাজী উচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে ২০১৭ সালে একটি পিটিশন দায়ের করলেও আদালত দণ্ডাদেশ স্থগিত না করে ১০ সপ্তাহের মধ্যে নিয়মিত লিভ টু পিটিশন দায়ের করার নির্দেশ দেন। অন্যথায় তা তৎক্ষণাৎ খারিজ হবে। কিন্তু লিভ টু আপিল করেননি তিনি।

রিটার্নিং অফিসারের কাছে অভিযোগকারী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ওচমান গনি পাটওয়ারী তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, যেহেতু আসামি আপিল আদালতের রায় অনুযায়ী আত্মসমর্পণ না করে পলাতক থাকেন এবং তার রাজনৈতিক প্রভাব প্রতিপত্তির মাধ্যমে সাজা পরোয়ানা জারি করতে দেননি। তাই তিনি বর্তমানে আইনের চোখে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি হিসেবে চিহ্নিত।

অভিযোগে বলা হয়, জেলা পরিষদ আইন ২০০০ এর ৬(২)ঘ ধারা অনুযায়ী ‘নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধের কোনো ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হয়ে অনুন্য দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন, তিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার যোগ্য হবেন না।’ এ অবস্থায় তার নির্বাচনী মনোনয়নপত্র বাতিলযোগ্য এবং তিনি নির্বাচন করার অযোগ্য।

এ বিষয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. ইউসুফ গাজী তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।