ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪ |

EN

দুর্গাপূজা সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন লাখাইয়ে মৃৎশিল্পীরা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি | আপডেট: শনিবার, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২

দুর্গাপূজা সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন লাখাইয়ে মৃৎশিল্পীরা
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ঘিরে প্রতিমা তৈরির ধুম পড়েছে। মৃৎশিল্পীরা দম ফেলার ফুসরত নেই। পুজার বাকি ১৪দিন। কিছু  দিন মধ্যেই  প্রতিমার গায়ে পড়বে রঙের আঁচড়।

হবিগঞ্জের হাওড়াঞ্চল বেষ্টিত লাখাই উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম লাখাই উপজেলার ১ নং ইউনিয়নে পাল হাটির  হরিমন পালের বাড়িতে ও মুড়াকুরি ইউনিয়নেরর নিত্যানন্দ পালের বাড়িতে  শোভা পাচ্ছে ছোট-বড়  প্রতিমা। বাঁশ-কাঠ আর কাদা মাটি দিয়ে তৈরি প্রতিমাগুলো দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন সনাতন ধর্মের লোকজন। 

লাখাই উপজেলায় প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ত মৃৎশিল্পী (কারিগর) সজল পাল বলেন,উপজেলার  বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লোকজন প্রতিমার দরদাম করছেন। কেউ অগ্রিম দিচ্ছেন।

পূজা উদযাপন পরিষদের  সাবেক সভাপতি অমিত ভট্টাচার্য বলেন, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর মহাপঞ্চমী দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসব শুরু।  মহাদশমী ৫ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে দূর্গাপূজা।  

১ অক্টোবর, শনিবার মহাষষ্ঠী পূজা থেকে মহানবমী  ৪ অক্টোবর মঙ্গলবার পর্যন্ত মণ্ডপে মণ্ডপে বেজে উঠবে ঢাকঢোল আর কাঁসার শব্দ। 

মুড়াকুরি ইউনিয়ন ৪/৫ জন কারিগর আছে যারা বিভিন্ন মন্ডপে প্রতিমা তৈরি করে  আবার  এলাকার বাহিরে গিয়েও প্রতিমা তৈরি করছে।  তবে মুড়াকুরির মন্তুষ পালের  প্রতিমা তৈরি করলে ৩০থেকে ৪০ হাজার টাকা দিতে হয়। প্রতিমা তৈরিতে কম দাম বেশী দামে প্রতিমা তৈরি করে।              

নিত্যানন্দ পাল বলেন, দুই মাস আগে থেকে তিনি প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছেন। এ পর্যন্ত ১০ টি প্রতিমা সেট তৈরি করেছেন। প্রতি সেটে দুর্গার সঙ্গে থাকে অসুর, সিংহ, মহিষ, গণেশ, সরস্বতী, কার্তিক ও লক্ষ্মী প্রতিমা। 

তিনি বলেন, আগে একটা প্রতিমা সেট তৈরি করতে খরচ হতো ৩০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। সেটি বিক্রি হতো ২৫থেকে ৩০ হাজার টাকায়। কিন্তু এখন বাঁশ, কাঠ, কাদা মাটিসহ প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম অনেক বেশি। তাই প্রতি সেট প্রতিমা তৈরিতে খরচ হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। এখন ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকার বেশি লাভে বিক্রি করা যাচ্ছে না। তিনি বিভিন্ন মন্ডপে গিয়েও প্রতিমা তৈরী করছে।   

লাখাই উপজেলার কমিটির সহ সভাপতি বিরাজ চক্রবর্তী  বলেন, লাখাই ইউনিয়ন দয়ালের মার বাড়ির   মন্দিরে তৈরি করা হচ্ছে  দুর্গাপ্রতিমা। এ জন্য কারিগর  আনা হচ্ছে  বানিয়াচং উপজেলা থেকে।   লাখাই উপজেলার হিন্দু বুদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের  সভাপতির জ্যোতির্ময় সিনহা স্বপন বলেন, এবছর মন্দিরে প্রতিমার পুজা হবে সাত্ত্বিক। অতিরিক্ত সাউন্ড দিয়ে ধর্মীয় গান ছাড়া অন্য কোন গান বাজানো যাবে না। 

লাখাইয়ে প্রতিমা তৈরি করছেন আরেক কারিগর রাজকুমার আচার্য্য বলেন,  লাখাই হাওরের  থেকে কাদা মাটি কিনে এনে প্রতিমা তৈরি করতে হয়। তারপর কাঠ, সুতা, খড়, রং, কাপড় ও মুকুট দিয়ে এক সেট প্রতিমা তৈরি করতে সময় লাগে ৫/৭  দিন। কিন্তু প্রতিমা সেট বিক্রি করে তেমন লাভ হচ্ছে না।

লাখাই উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদ এর সভাপতি প্রাণের গোস্বামী বলেন,    গত বছর উপজেলায়  বিভিন্ন স্থানে ৭০টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হয়েছে। এবার ২/৩টি বেড়তেও পাড়ে আবার ২/৩ কমতেও পারে মণ্ডপে সংখ্যা। 

সমাতনী শাস্ত্র অনুযায়ী, দেবীর দুর্গার মর্তে আগমন ও গমন যে বাহনে, তার ওপর নির্ভর করে গোটা বছরটা পৃথিবীবাসীর কেমন কাটবে। আবার শুরু হয়ে গিয়েছে দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি। এবছর মা দুর্গার আগমন   গজে, যার অর্থ শস্যপূর্ণা বসুন্ধরা গমন হবে  উমা কৈলাসে ফিরবেন নৌকায় যার শস্য বৃদ্ধি ও জল বৃদ্ধি।

উপজেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক অমূল্য রায়   জানান,  ভক্তের  উপস্থিতিতে  প্রতিমা বিসর্জন  হবে নিরাপত্তার ব্যাপারে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা করবে আমাদেরও সেচ্ছাসেবী কমিটি থাকবে  এ ব্যাপারে  উপজেলা   পরিষদ ও পুলিশ প্রশাসন জরুরি সভা আহ্বান করে দিক  নির্দেশনা দেওয়া হবে  মন্ডব কমিটিকে।