দুই প্রতিবেশী দেশ আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে সম্প্রতি শুরু হওয়া লড়াইয়ে উভয়পক্ষের দেড় শতাধিক সেনা নিহত হয়েছেন। এ অবস্থায় যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর ঘোষণা দিয়েছে আর্মেনিয়া। যদিও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি আজারবাইজান।
আর্মেনিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা আরমেন গ্রিগরিয়ান টেলিভিশনে যুদ্ধ বিরতির ঘোষণা দিয়ে বলেন, বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় রাত ৮টা থেকে এটি কার্যকর হয়েছে। আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়া আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে।
ধারণা করা হচ্ছে, রাশিয়ার মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি হয়েছে। তবে গত মঙ্গলবারও মস্কো দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি করানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ওইদিন তা ব্যর্থ হয়।
গ্রিগরিয়ানের ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল গোলাগুলি বন্ধ হয়ে গেছে। তবে যুদ্ধবিরতির চুক্তির কথা উল্লেখ করা হয়নি তখন। চুক্তির বিষয়ে আজারবাইজানের রাজধানী বাকু থেকে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।
গত দুই দিন ধরে হঠাৎভারী লড়াই শুরু হয়। সীমান্ত এলাকায় কামানের তোপে প্রকম্পিত হতে থাকে। সেনারা পাশাপাশি প্রাণ হারিয়েছেন সাধারণ মানুষও। যদিও প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি এখনও জানা সম্ভব হয়নি।
সবশেষ ২০২০ সালে নাগরনো-কারাবাখ নিয়ে ৬ সপ্তাহের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জড়ায় এই প্রতিবেশী দুই দেশ। সেই সময় আজারবাইনের পক্ষ নিয়েছিল তুরস্ক। এতে আর্মেনিয়ার বিপুল ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, 'সিক্স ডে ওয়ার' নামে পরিচিত ওই ঘটনায় ৬ হাজার ৭০০ মানুষ নিহত হন।
১৯৮০-এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত থাকার সময় নাগোরনো-কারাবাখ নিয়ে মধ্যে প্রথম দুই দেশের মধ্যে সংঘাতের সূত্রপাত হয়। ওই সময় আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের ভূখণ্ড বলে স্বীকৃত অঞ্চলটি দখল করে আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনী। অঞ্চলটিতে বিপুল সংখ্যক আর্মেনীয় বংশোদ্ভূত মানুষের বসবাস। ২০২০ সালের যুদ্ধে আর্মেনিয়ার কাছ থেকে ফের অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ নিতে সমর্থ হয় আজারবাইজান। রাশিয়ার মধ্যস্থতায় ওই সময় সংঘাতের অবসান ঘটে। এরপর থেকে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি প্রতিষ্ঠার চুক্তির জন্য দুই দেশের নেতারা একাধিকবার মিলিত হয়েছেন।
সূত্র: আল জাজিরা