বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস আজ বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর)। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘অস্টিওআর্থাইটিস চিকিৎসায় ফিজিওথেরাপি সবচেয়ে কার্যকরী চিকিৎসা পদ্ধতি’।
বিশ্বের ১২১টি দেশে একযোগে এই দিনে ফিজিওথেরাপি দিবস পালন করা হয়। প্রতিটি দেশে এবার ২৬তম বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস পালিত হচ্ছে।
বিশ্বব্যাপী সচেতনতা অর্জনের লক্ষ্যে ১৯৯৬ সাল থেকে বৈশ্বিক ফিজিওথেরাপি সংস্থা ‘ওয়ার্ল্ড ফিজিওথেরাপি’র আহ্বানে ৮ সেপ্টেম্বর দিবসটি পালিত হয়। এরপর ২০০৭ সাল থেকে বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) নেতৃত্বে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা, অস্টিওআথ্রাইটিস এ ধরনের রোগ নিরাময়ে বিশ্বব্যাপী ফিজিওথেরাপি একটি স্বীকৃত, কার্যকরী ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াবিহীন চিকিৎসা পদ্ধতি।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ডা. কাজী মোহাম্মদ এমরান হোসেন দিবসটির প্রতিপাদ্য উল্লেখ্য করে জানান, অস্টিওআথ্রাইটিস হাড়জোড়ের একটি রোগ যা ক্ষয়জনিত, আঘাত, পারিবারিক ইতিহাস, স্থূলতা বা শারীরিক অক্ষমতার কারণে যে কোনো বয়সী মানুষের হতে পারে। সারাবিশ্বে ৫২০ মিলিয়ন মানুষ অস্টিওআথ্রাইটিসে আক্রান্ত, যার ৬০ শতাংশই হাঁটু আক্রান্ত মধ্যবয়সী মানুষ। বিশ্বে প্রতি ১০ বছরে অস্টিওআথ্রাইটিসে আক্রান্ত মানুষ ৪৮ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা প্রতিবন্ধকতার ১১তম কারণ।
ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালের তথ্যমতে বাংলাদেশে ১৮ বছর বা তদূর্ধ্ব ৭ দশমিক ৩ শতাংশ অস্টিওআথ্রাইটিস রোগী রয়েছেন, যাদের বেশিরভাগ নারী স্থূলতায় আক্রান্ত বা শারীরিক কার্যক্রমে কম সক্রিয়। অস্টিওআর্থাইটিস হলে হাড়জোড়ে ও মাংসপেশিতে ব্যথা হয়, চলাফেরায় কষ্ট হয় এমনকি প্রতিবন্ধীও হতে পারে।
ডা. কাজী মোহাম্মদ এমরান বলেন, রোগীকে জানতে হবে যে সে কখন কি করবে। কারণ ব্যথা হলেই ব্যথানাশক খাওয়া ক্ষতিকর। গবেষণা মতে জীবনযাপনের সঠিক পদ্ধতি ব্যথা নিরাময়ে সবচেয়ে বেশি কার্যকর।
ফিজিওথেরাপিস্টদের সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল অনুযায়ী, ফিজিওথেরাপি আধুনিক বিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা ও স্বতন্ত্র চিকিৎসা ব্যবস্থা। যেখানে বিভিন্ন ধরনের বাত, ব্যথা, প্যারালাইসিস, প্রতিবন্ধী এবং প্রতিবন্ধকতার ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তির সমস্যার সমাধান ও প্রতিবন্ধকতা প্রতিরোধ করে স্বাস্থ্যের উন্নতি সাধন করেন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক।
বিশ্বব্যাংকের এক জরিপ মতে বাংলাদেশের ১০ ভাগ জনগোষ্ঠী প্রতিবন্ধীতায় আক্রান্ত ও তাদের ৮০ ভাগই গ্রামে ও মফস্বল শহরে বাস করেন।
আইন অনুযায়ী, স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে ৫ বছর মেয়াদী স্নাতক ডিগ্রীধারীগণ ফিজিওথেরাপিস্ট। বাংলাদেশে এ মানদণ্ডে প্রতি ৫০ হাজারে একজন ফিজিওথেরাপিস্ট রয়েছে।