প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এর আগে অনেক আশা নিয়ে ভারতে সফরে গিয়েছেন তিস্তা সই হবে, এই হবে, সেই হবে, কিন্তু কোনটাই হয়নি। এ বিষয়গুলো নির্ভর করে জনগণের সমর্থনের উপর। জনগণ যদি সরকারকে সমর্থন দিত তাহলে অনেক আগেই হতো। ফিরে আসুক আমাদের জন্য কি কি নিয়ে আসেন তখনই দেখা যাবে।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বিএনপি'র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে স্বেচ্ছাসেবক দলের নবনির্বাচিত কমিটির পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও সূরা ফাতেহা পাঠ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘ ১৫ বছরের অভিজ্ঞতায় দেখেছি এই সরকার যেহেতু জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয়। জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকারি আসেনি সুতরাং তাদের পক্ষে বহির্বিশ্বের সাথে কোন চুক্তি করা, বহির বিশ্বে বাংলাদেশের স্বার্থকে রক্ষা করা, এটা অত্যন্ত দুরূহ কাজ। আমরা লক্ষ্য করেছি মিয়ানমারের ক্ষেত্রে, মিয়ানমার বারবার মর্টার মারছে গোলা মারছে, সরকার একটি প্রতিক্রিয়া ছাড়া আর কিছুই করতে পারেনি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ভারতের সাথে আমাদের যে সমস্যাগুলো রয়েছে, অভিন্ন নদীর পানি বন্টন সমস্যা সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা করা এছাড়া অন্যান্য যে সমস্যাগুলো রয়েছে এই সমস্যাগুলো এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার করতে পারেনি। পারেনি কারণ তাদের পেছনে জনগণের সমর্থন নেই। কারন এখন পর্যন্ত কোন স্টেট নিয়ে এই সরকার কোন কাজ করতে পারেনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশী মানুষ গণতন্ত্রকামী। বাংলাদেশের যে গণতন্ত্র ছিল এই আওয়ামী লীগ সরকার তাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে গণতন্ত্রকে এখানে হত্যা করছে। তারা বিরোধী পক্ষকে হত্যা করছে। সেই সরকারের সমর্থনে কোন গণতন্ত্র রাষ্ট্র আসবে এটা আমরা বিশ্বাস করিনা। সমস্ত গণতন্ত্র বিশ্ব এই জনগণের যে সংগ্রাম গণতন্ত্রের পক্ষের সংগ্রাম তাকেই তারা সমর্থন করবে।
ফখরুল বলেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নতুন কমিটি তারা আজকে এখানে শপথ নিয়েছে বর্তমান ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার যারা গায়ের জোরে ক্ষমতা দখল করে আছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছে। জনগণের সকল অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়েছে। তাদেরকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী পার্লামেন্ট প্রতিষ্ঠা করার জন্য তারা এই আন্দোলন এই চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাবে। তারা গণতন্ত্রের মাতা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে এসে সত্যিকার অর্থে একটি অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে জনগণের যে মালিকানা তা প্রতিষ্ঠা করবে।
তিনি বলেন, আমি এ নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে কোন কথা বলতে চাই না। আমরা বলেছি এ নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছিল সম্পূর্ণ বেআইনি, অনৈতিক ভাবে। কারণ আমরা বারবার বলে এসেছি এই নির্বাচন কমিশন দিয়ে নির্বাচন হবে না। নির্বাচন করতে হলে একটি অবাধ নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দরকার হবে। নির্বাচনকালীন সময়ে যদি সরকার নিরপেক্ষ না হয় তাহলে অতীতে যে সকল নির্বাচন কমিশনরা কাজ করেছে তাদের যে হাল হয়েছে এখন সেই একই হাল হবে। কারণ তারা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না। নির্বাচন কমিশন কি বলল তাতে আমাদের এবং দেশের জনগণের কিছু যায় আসে না। আমাদের লক্ষ্য একটাই এ জবর দখলকারী সরকারকে সরিয়ে একটি নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর সংসদ বিলুপ্ত করা এবং নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের মধ্য দিয়ে অবাধ সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সারাফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবলের সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, সিনিয়র সহসভাপতি ইয়াছিন আলী, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ ও ছাত্রদলের সভাপতি রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ।