প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গে কিছু বলতে চাই না। কারণ আমাদের অভিজ্ঞতা এত তিক্ত, হতাশ হওয়ার মতো। প্রত্যেকবার দেখেছি অত্যন্ত হতাশার সঙ্গে, নিরাশার সঙ্গে; প্রধানমন্ত্রী ভারতকে দিয়ে এসেছেন কিন্তু নিয়ে আসেননি।
তিনি বলেন, আমরা প্রত্যেকবার আশা করেছি যে এবার হয়তো প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য কিছু নিয়ে আসবেন। দেখেছি তিনি দিয়ে এসেছেন কিন্তু নিয়ে আসেননি। সুতরাং আগে আসুক তিনি ঘুরে কি নিয়ে আসেন দেখি তারপরে মন্তব্য করব।
সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান এর ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। সাইফুর রহমান স্মৃতি পাঠাগার এই স্মরণ সভার আয়োজন করে।
ফখরুল বলেন, ৭৫ সালে যে রাজনৈতিক পদ পরিবর্তন হয়েছিল তার পূর্বে আপনাদেরকে লক্ষ্য রাখতে হবে সেটা ছিল সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি। যারা (আওয়ামী লীগ) সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতিতে বিশ্বাস করত না তারা বললেন আমরা সমাজতন্ত্র অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করব। তারপরে যেটা হলো সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির কোন কাঠামোই তৈরি হলো না। যেটা তৈরি হলো সেটা হলো লুটপাটের অর্থনীতি। ৭২ থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ছিল সম্পূর্ণ লুটপাটের অর্থনীতি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখনো একই অবস্থা চলছে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে। রাস্তা নির্মাণ হচ্ছে, সেতু নির্মাণ হচ্ছে; যে সেতুটা এক বছরে নির্মাণ করা সম্ভব সেটা করছে 10 বছরে, ১৫ বছরে। ঢাকা থেকে টঙ্গীর যে রাস্তা সেটা আজ ১০ বছর যাবত হচ্ছে।
তিনি বলেন, সাইফুর রহমান পড়াশোনা করেছিলেন হিসাববিজ্ঞানের উপর সে কারণেই কোনটা করলে লাভ হবে আর কোনটা করলে লাভ হবে না, আর কোনটা করলে ঋণগ্রস্ত হবো আর কোনটা করলে অনেক বেশি লাভবান হব সেটা তিনি খুব ভালো করে জানতেন। সেই কারণে তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছিলেন।যে কাজটা দেশের জন্য ভালো মনে করতেন তিনি সেটাই করতেন আর সেই কাজটা করার জন্য যা যা করা দরকার ছিল তিনি তাই করতেন।
ফখরুল বলেন, আমরা আজকে অত্যন্ত কঠিন একটি সময় অতিক্রম করছি এ সময় যদি সাইফুর রহমান সাহেব আমাদের সাথে থাকতেন আমাদেরকে রাজনৈতিকভাবে সহযোগিতা করতেন এবং একটি ভ্রান্ত উন্নয়ন বিভ্রান্ত সৃষ্টি করেছেন এই সরকার সেটার আসল চেহারা উদঘাটন করতে তিনি সক্ষম হতেন। এই সরকারের যে মূল চেহারা সেটাকেও উন্মোচন করতে তিনি সক্ষম হতেন।
রিজার্ভ-জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি সহ অন্যান্য সংকটের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, যে কাজটা দশ হাজার টাকায় হবে সেটা তারা পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচ করছে। বাকি চল্লিশ হাজার টাকা তারা (সরকার) নিজেরা ভাগ করে চুরি করে খাচ্ছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এর সভাপতিত্বে এ সময়ে দলের ভাইস চেয়ারম্যান ডঃ এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান, বিএনপি নেতা নাজিমুদ্দিন আলম ও কামরুজ্জামান রতন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।