তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, 'জিয়াউর রহমান ও বিএনপির মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে শুরু করে আমরা বিশ্বাঙ্গনে নিয়ে যাব। যারা মানবাধিকারের কথা বলে দেশে-বিদেশে অপপ্রচার-প্রোপাগান্ডা ছড়ায় তাদের স্বরূপ উন্মোচন করা হবে।'
শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে দীপ্ত টেলিভিশন নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র 'গণফাঁসি ৭৭' প্রদর্শনী ও ১৯৭৭ সালে হত্যা-গুমের শিকার সেনাসদস্যদের পরিবারগুলোর সংগঠন 'মায়ের কান্না' আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
ড. হাছান বলেন, 'জিয়াউর রহমান ছিলেন একজন ঠান্ডা মাথার খুনি, সকালবেলা নাস্তা করতে করতে ফাঁসির আদেশে তিনি সই করতেন। আজকে দাবি উঠেছে একটি শক্তিশালী কমিশন গঠন করে ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমানের হত্যার শিকার সেনা ও বিমানবাহিনীর অফিসার ও জওয়ানদের বোবাকান্নার সত্য উন্মোচন করে জাতির কাছে জানানো। আমি এই দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করছি।'
'যে অজানা কান্নাগুলো হারিয়ে গিয়েছিল, যে কথাগুলো জাতি জানত না, যারা দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে বোবা কান্না নিয়ে বুকের মধ্যে চেপে রেখেছিল, যাদের অব্যক্ত বেদনার কথা বলতে পারেনি, যাদের কান্না নিজের পরিবারও অনেক ক্ষেত্রে শোনেনি, তাদেরকে জড়ো করে জিয়াউর রহমানের নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতার কাহিনী জাতির সামনে উপস্থাপন করার জন্য দীপ্ত টেলিভিশনকে ধন্যবাদ জানাই এবং ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমানের হত্যা-গুমের শিকার সেনাসদস্যদের পরিবারের সংগঠন ‘মায়ের কান্না’র পাশে আছি' উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, 'আজকে এখানে যারা বক্তব্য রেখেছেন তারা জানেনা তাদের বাবা ও স্বামীর কবর কোথায়। কখন ফাঁসি হয়েছে, কিভাবে তাদের হত্যা করা হয়েছে। এই জবাব খালেদা জিয়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদের কাছে চাই। আজকে মানবাধিকারের কথা বলে নয়াপল্টনের অফিস এবং প্রেসক্লাবের সামনে মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা বক্তৃতা করেন। ৪৫ বছর ধরে জিয়াউর রহমানের নির্মম হত্যাযজ্ঞের শিকার পরিবার গুলোর কান্না, বঙ্গবন্ধুকে হত্যায় কুশীলবের ভূমিকা ও হত্যার বিচার বন্ধ করা, বেগম জিয়ার বিএনপির ২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলা, ২০১৩-১৪-১৫ সালে পেট্রোলবোমা দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাব বিএনপি ও তাদের নেতৃবৃন্দের কাছে চাই।'
‘মায়ের কান্না’ সংগঠন ও দীপ্ত টেলিভিশনের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় সম্মানিত আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম-১৪ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সভাপতি মেজর জেনারেল (অব:) গোলাম হেলাল মোর্শেদ খান বীরবিক্রম, দীপ্ত টেলিভিশনের সিইও এবং “গণফাঁসি ৭৭’ প্রামাণ্যচিত্রের পরিচালক ফুয়াদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফ্ফর আহমদ, 'মায়ের কান্না' সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক মো: কামরুজ্জামান মিঞা লেলিনসহ ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান কর্তৃক গুমের শিকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সদস্যরা।