হোল্ডিং ট্যাক্স আইন পরিবর্তন করে পুরোনো নিয়মে আয়তনের ভিত্তিতে গৃহকর নেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদ। যৌক্তিক উপায়ে গৃহকর না নিলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলেও ঘোষণা দেন তারা।
শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর কদমতলী দস্তগীর সুপার মার্কেটের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়।
সভায় চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মুহম্মদ আমির উদ্দিন বলেন, আপনি নির্বাচনী প্রচারে পাড়া-মহল্লা, অলিতে-গলিতে পথসভা করে চট্টগ্রামবাসীকে গৃহকর না বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু চেয়ারে বসে এক বছর যেতে না যেতে ঘরভাড়ার ওপর অন্যায্য কর নেওয়ার তোড়জোড় শুরু করে দিলেন। এভাবে ওয়াদা ভঙ্গ করা আপনার মতো একজন আদি অধিবাসী, বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদ নগর পিতার পক্ষে মানানসই নয়।
তিনি আরও বলেন, ভাড়ার ওপর হোল্ডিং ট্যাক্স বাংলাদেশের কোথাও পৃথিবীর কিংবা নেই। তাই যৌক্তিক উপায়ে গৃহকর না নিলে সুরক্ষা পরিষদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে, পাড়া-মহল্লায় কমিটি গঠন করে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর বিকাল ৩টায় কদমতলীতে গণমিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
এসময় সংগঠনের সভাপতি মো. নুরুল আফছার বলেন, ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণায় ফায়সালা হওয়া বিষয়ে দ্বিতীয়বার রাস্তায় নামা চট্টগ্রামবাসীর জন্য বিব্রতকর। চট্টগ্রামবাসী ঘরভাড়ার আয়ের ওপর আয়কর দেয়া, পুনরায় গৃহকর নেওয়া অযৌক্তিক। বাড়ি ভাড়ার ওপর গৃহকর ধার্য করায় যে অস্বাভাবিক কর আসছে তা কোনো সৎ নাগরিকের পক্ষে পরিশোধ করা অসম্ভব। এর ফলে আদি চট্টগ্রামবাসী বাস্তুচ্যুত হয়ে রোহিঙ্গা ভাগ্য বরণে বাধ্য হবে।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামবাসী বাড়ি ভাড়ার আয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। সাংসারিক ব্যয় নির্বাহের পর এ অস্বাভাবিক গৃহকর পরিশোধ করার সামর্থ ভবন মালিকের নেই এটাই বাস্তবতা। এখানে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কিছু নেই। করোনাকালে ভেঙে পড়া চট্টগ্রামের অর্থনীতি এখনো নাজুক অবস্থা রয়েছে। এর ওপর অন্যায্য হোল্ডিং ট্যাক্স ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’।
সংগঠনের অন্যতম নেতা হাসান মারুফ রুমি বলেন, মেয়র সাহেব আপিলের কথা বলছেন ১০ হাজার টাকার ট্যাক্স ১ লাখ ২০ হাজার টাকা করে ২০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে ৬০-৭০ শতাংশ কমালেও তা ৫ গুণ বর্ধিত রয়ে যায়। করপোরেশনের রাজস্ব বিভাগের প্রতি নজর দেওয়ার জন্য তিনি দুদকের প্রতি আহ্বান জানান।
সংরক্ষিত আসনের সাবেক কাউন্সিলর জান্নাতুল ফেরদৌস পপি বলেন, সুরক্ষার আন্দোলনের মাধ্যমে চট্টগ্রামবাসীর ওপর জেঁকে বসা করের বোঝা দূর হবে। মেয়র সাহের নিজেই নিজের বিরোধিতা করছেন, যা অত্যন্ত হাস্যকর।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সুরক্ষার নেতা মুজিবুল হক, হাজী হারুনুর রশীদ, মফিজুর রহমান, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম, মীর মো. ইসলাম, মো. নজরুল ইসলাম প্রমুখ।