১ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) বিকাল ৪ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে অনুষ্ঠিত "যেমন খুশি তেমন পরো" শীর্ষক কর্মসূচিতে এক সংবাদকর্মীর প্রশ্নের উত্তরে "হাইকোর্ট নারীদের পোশাক নিয়ে কথা বলতে পারে না" বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের শিক্ষার্থী তাসনিম হালিম মিম।
রাজু ভাস্কর্যের সামনে "যেমন খুশি তেমন পরো" কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। উক্ত কর্মসূচিতে তারা বিভিন্ন প্লেকার্ড প্রদর্শন করে এবং নিজ নিজ মতামত জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের শিক্ষার্থী তাসনিম হালিম মিম নরসিংদী রেলস্টেশনে নারী হেনস্তার ঘটনা উল্লেখ করে বলেন নারীর বিরুদ্ধে নারীকে লেলিয়ে দেয়া সংস্কৃতির বিরোধিতা করেন তারা। তার মতে নারীদের পোশাক নিয়ে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষার্থী ভূলভাবে উদ্ধৃতি করেছে। তিনি উল্লেখ করেন পোশাক এবং সংস্কৃতি সদা পরিবর্তনশীল যা সময় এবং মানসিকতার সাথে পরিবর্তিত হয়। তিনি কর্মসূচিতে উপস্থিত ব্লাউজ ছাড়া শাড়ি পড়া নারীকে নির্দিষ্ট করে বলেন এটা এদেশের আদি সংস্কৃতির পরিচয়। তিনি আরও বলেন যে পরিবর্তনশীল সংস্কৃতির সাথে মানিয়ে নেয়া এবং অন্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ না করার পক্ষে তাদের অবস্থান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা শিক্ষা অনুষদের শিক্ষার্থী অন্তরা শারমিনের মতে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণকে হাইকোর্টের রায় বলে চালিয়ে দেয়াকে তিনি অসাবধানতা বলেছেন। তার মতে হাইকোর্ট নারীদের পোশাক বিষয়ে কোনো রায় প্রদান করেনি এবং হাইকোর্ট এই প্রচারকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি জারি করেছে। তিনি উল্লেখ করেন বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী একজন বাঙালি নারী আদিবাসীদের থাম পরতে পারে, আবার একজন আদিবাসী নারী বাঙালি শাড়ি পড়তে পারে, এছাড়াও টি-শার্ট কিংবা আদিকালের ব্লাউজ ছাড়া শাড়ি সহ নিজের স্বাচ্ছন্দ্যের পোশাক পরার স্বাধীনতা রাখতে পারে। তিনি ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়,কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংবিধান পরিপন্থীকে কথাকে স্বাধীনতা বিরোধী কথা বলে উল্লেখ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী অরুণিমা তাহসিন বলেন, "আমার কথা যিনি পছন্দ করছেন না আমি তার স্বাধীনতা চাই এবং আমি আমার নিজেরও স্বাধীনতা চাই।" তিনি জানান এই কর্মসূচিতে আসার আগে তার মা তাকে ব্যাগে করে হিজাব নিতে বলেন। তিনি আরও বলেন যে অন্যের সৌন্দর্যকে শ্রদ্ধা না করতে পারলে অন্তত তার উপরে যেন হামলা না করা হয় এবং তাকে নিয়ে কটুক্তি না করা হয়।
উপস্থিত শিক্ষার্থীদের হাতে রঙিন প্লেকার্ড ছিল যেগুলোতে "পোশাক ঘরেও না বাইরেও না বরং স্বাছন্দ্যই মূল কথা", " নিজের আমলনামায় তেল দিন" কিংবা "সংস্কৃতি কারো বাপের না" এমন আরও উক্তি লেখা ছিল।