ভারতের রাজধানী দিল্লিতে গত বছর প্রত্যেক দিন গড়ে অন্তত দু’জন নাবালিকা ধর্ষণের শিকার হয়েছে। দেশটির মেট্রোপলিটন শহরগুলোর মধ্যে দিল্লিই নারীদের জন্য সবচেয়ে অনিরাপদ শহর। মঙ্গলবার ভারতের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর (এনসিআরবি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
এতে বলা হয়েছে, গত বছর দিল্লিতে নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনায় ১৩ হাজার ৮৯২টি মামলা হয়েছে। যা আগের বছরের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেশি। ২০২০ সালে দিল্লিতে নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের ৯ হাজার ৭৮২টি মামলা দায়ের হয়েছিল।
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দেশটির ১৯টি মেট্রোপলিটন শহরে নারীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের মোট মামলার প্রায় ৩২ শতাংশই দিল্লিতে নথিভূক্ত হয়েছে।
নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনায় রাজধানী দিল্লির পরই দ্বিতীয় অবস্থানে আছে দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত মুম্বাই। ২০২১ সালে এই মহানগরীতে নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের ৫ হাজার ৫৪৩টি মামলা হয়েছে। এরপরই আছে বেঙ্গালুরু; সেখানে ৩ হাজার ১২৭টি মামলা হয়েছে।
দেশটির ১৯টি শহরে সংঘটিত মোট অপরাধের প্রায় ১২ দশমিক ৭৬ শতাংশ মুম্বাই এবং ৭ দশমিক ২ শতাংশ বেঙ্গালুরুতে নথিভূক্ত করা হয়েছে।
এছাড়া ২০ লাখের বেশি মানুষের বসবাস রয়েছে দেশটির এমন অন্যান্য মেট্রোপলিটন শহরগুলোর তুলনায় গত বছর নারী অপহরণ (৩ হাজার ৯৪৮টি), স্বামীর নির্যাতন (৪ হাজার ৬৭৪টি) এবং নাবালিকা ধর্ষণের (৮৩৩টি) ঘটনার শীর্ষেও আছে দিল্লি।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত বছর দিল্লিতে প্রত্যেক দিন গড়ে দুই জন নাবালিকা ধর্ষণের শিকার হয়েছে। একই সময়ে দেশটির ১৯টি মেট্রোপলিটন শহরে নারীদের বিরুদ্ধে ৪৩ হাজার ৪১৪টি অপরাধের ঘটনা ঘটলেও রাজধানী দিল্লিতে ১৩ হাজার ৯৮২টি ঘটনা নথিবদ্ধ হয়েছে।
২০২১ সালে দিল্লিতে যৌতুকের কারণে ১৩৬ জন নারীর প্রাণহানি ঘটনায় মামলা হয়েছে। যা দেশটির মোট ১৯টি মেট্রোপলিটন শহরের মোট মৃত্যুর প্রায় ৩৬ দশমিক ২৬ শতাংশ। আর ১৯টি শহরে ৮ হাজার ৬৬৪টি অপহরণের ঘটনা ঘটলেও দিল্লির ক্ষেত্রে সেই সংখ্যা ৩ হাজার ৯৪৮।
এনসিআরবি বলেছে, শালীনতা বর্জিত পোশাকের অভিযোগে গত বছর দিল্লিতে ২ হাজার ২২ জন নারীর ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এসব ঘটনায় যৌন অপরাধ থেকে শিশুদের সুরক্ষা আইনে ১ হাজার ৩৫৭টি মামলা হয়েছে।
সূত্র: এনডিটিভি