মূল্যসূচক শেষ পর্যন্ত সামান্য বাড়লেও কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর। সঙ্গে মোট লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। এরই মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে অস্বাভাবিক হারে দরবৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির শেয়ারের দরবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত আছে।
গতকাল সোমবার প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে ১২৩ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের বাজারদর বেড়েছে। বিপরীতে ১৮৮টির দর কমেছে এবং অপরিবর্তিত ৭১টির দর। বেশিরভাগ শেয়ারের দর কমার পরও প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৬ পয়েন্ট বেড়ে ৬৪০৮ পয়েন্ট ছুঁইছুঁই অবস্থানে উঠেছে। গত ৬ জুলাইয়ের পর গত রোববারই সূচকটি ৬৪০০ পয়েন্টের ওপরে ওঠে। মাঝে গত ২৮ জুলাই ৬০০০ পয়েন্টের নিচে নেমেছিল।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত কিছুদিনের ঊর্ধ্বমুখী ধারার পর গতকাল বেশ অস্থিরতায় লেনদেন শুরু হয়েছিল। প্রথম ঘণ্টায় শেয়ারদর ও সূচকে বেশ উত্থান-পতন দেখা যায়। তারপরও ১৫ কোম্পানির শেয়ারদর ৫ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এর মধ্যে তিনটি দিনের সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হয়। এগুলো হলো- এপেক্স ফুডস, জিবিবি পাওয়ার এবং ন্যাশনাল টি। বিপরীতে ৫৪ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ফ্লোর প্রাইসে কেনাবেচা হয়।
অস্থিরতার মধ্যেও গতকালও ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ারদর বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত ছিল। মাত্র এক মাস আগেও ওষুধ খাতের এ কোম্পানির শেয়ার ৮০ টাকা দরে কেনাবেচা হয়। গতকাল শেয়ারটি তার ইতিহাসের সর্বোচ্চ দর ২৫০ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে। সর্বশেষ প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানিটি গত ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের প্রথম ৯ মাসে ২৮ শতাংশেরও কম নিট মুনাফা বৃদ্ধির খবর দিয়েছে। ২০১০ সালের অস্বাভাবিক উত্থান পর্বে এ শেয়ারটির দর সর্বোচ্চ ৮৯০ টাকায় উঠেছিল। তখন এ শেয়ারের অভিহিত মূল্য ছিল ১০০ টাকা। এখন ১০ টাকা।
নিট মুনাফা বৃদ্ধির তুলনায় রাতারাতি শেয়ারদর বৃদ্ধিকে অস্বাভাবিক বলে মন্তব্য করেছেন শেয়ারবাজার সংশ্নিষ্ট ও বিশ্নেষকরা। তাঁরা জানান, এ কোম্পানির আয় বা ব্যবসায় এমন কোনো বড় ধরনের উল্লম্ম্ফনের খবর নেই, যার কারণে এতটা দর বাড়তে পারে। এ দরবৃদ্ধির নেপথ্যে শেয়ারবাজারের জুয়াড়ি চক্রের সম্পৃক্ততা আছে।
গতকাল ডিএসইতে এক হাজার ৭৪৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যা রোববারের তুলনায় ৩৬০ কোটি টাকা কম। একক কোম্পানি হিসেবে ৮৫ কোটি ২৭ লাখ টাকার লেনদেন নিয়ে শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। একক খাত হিসেবে বস্ত্র খাতে সর্বোচ্চ প্রায় ২৯৬ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।