সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ছোট খাতের বেশিরভাগ শেয়ারের বাজারদর বেড়েছে। বড় খাতগুলোর মধ্যে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বীমা খাতের কমেছে। তবে প্রকৌশল, ওষুধ ও রসায়ন, বস্ত্রসহ উৎপাদন ও সেবা খাত সংশ্নিষ্ট বড় খাতগুলোতে শেয়ারদর ওঠানামায় ছিল মিশ্রধারা। রোববার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন পর্যালোচনায় এমন তথ্য মিলেছে।
সার্বিক হিসাবে দরবৃদ্ধি পাওয়া শেয়ার সংখ্যার তুলনায় দর হারানো শেয়ার সংখ্যা ছিল বেশি। ডিএসইতে গতকাল ১৩৬ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের বাজারদর বেড়েছে, বিপরীতে ১৪৩টির দর কমেছে এবং অপরিবর্তিত থেকেছে ১০২টির দর। এ অবস্থার পরও প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ১৮ পয়েন্ট বেড়ে ৬২৫৯ পয়েন্টে উঠেছে। সূচকের এ বৃদ্ধিতে লাফার্জ-হোলসিম সিমেন্ট, বিকন ফার্মা, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, শিপিং করপোরেশন, ওরিয়ন ফার্মা, রহিমা ফুড করপোরেশন, তিতাস গ্যাস, স্কয়ার ফার্মার মতো শেয়ারের দরবৃদ্ধি বড় ভূমিকা রাখে। এসব শেয়ারে দরবৃদ্ধি সূচকে যোগ করে অন্তত ১৪ পয়েন্ট।
খাতওয়ারি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ২১ কোম্পানির মধ্যে গতকাল ১১টির দর বেড়েছে, কমেছে চারটির এবং বাকি ছয়টির দর অপরিবর্তিত। এ খাতের রহিমা ফুডের শেয়ারদর পৌনে ৯ শতাংশ হারে বেড়েছে। এএমসিএল-প্রাণের দর বেড়েছে ৭ শতাংশ হারে। এ ছাড়া এপেক্স ফুড, জেমিনি সি ফুডস এবং ফাইন ফুডসের দর ৪ শতাংশের ওপর বেড়েছে।
এ ছাড়া সিমেন্ট খাতের সাত কোম্পানির মধ্যে চারটির দর বেড়েছে। এ খাতের লাফার্জ-হোলসিমের দর বেড়েছে প্রায় ৩ শতাংশ। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ১১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে আট শেয়ারের। এর মধ্যে ইনফরমেশন সার্ভিসেস কোম্পানির শেয়ারদর পৌনে ৭ শতাংশ হারে বেড়েছে। সাড়ে ৫ শতাংশ দর বেড়েছে ইনটেকের। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য খাতের ছয় কোম্পানির মধ্যে পাঁচটিরই দর বেড়েছে, যেখানে সোয়া ৪ শতাংশ হারে দর বেড়েছে এপেক্স ফুটওয়্যারের। এমনই চিত্র দেখা গেছে, অন্য সব ছোট খাতে।
বিপরীতে ব্যাংক খাতের ৩৩ কোম্পানির মধ্যে তিনটির দরবৃদ্ধির বিপরীতে সাতটির দর কমেছে। এ খাতের বাকি ২৩ শেয়ারের দর অপরিবর্তিত। আবার এর মধ্যে ১০ ব্যাংক কোম্পানির শেয়ার বেঁধে দেওয়ায় ফ্লোর প্রাইসে কেনাবেচা হয়েছে। এ খাতের এবি ব্যাংকের শেয়ারদর সর্বোচ্চ ১ শতাংশ বেড়ে সর্বশেষ ১০ টাকা ১০ পয়সা দরে কেনাবেচা হয়েছে। বিপরীতে সর্বোচ্চ ১ দশমিক ১৫ শতাংশ দর হারিয়ে রূপালী ব্যাংকের শেয়ার সর্বশেষ ২৫ টাকা ৮০ পয়সায় কেনাবেচা হয়েছে।
এদিকে বীমা খাতেরও বেশিরভাগ শেয়ার দর হারিয়েছে। এ খাতের কোম্পানি সংখ্যা ৫৪টি। এর মধ্যে গতকাল ১০টির দর বেড়েছে, কমেছে ৩৬টির এবং অপরিবর্তিত আটটির দর। সার্বিক নিম্নমুখী ধারার মধ্যেও তাকাফুল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির শেয়ারের সাড়ে ৫ শতাংশ দর বেড়ে সর্বশেষ ৫১ টাকা ৬০ পয়সায় কেনাবেচা হয়েছে। দেশ জেনারেল এবং পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর সোয়া ২ শতাংশের ওপর বেড়েছে। বিপরীতে ডেল্টা লাইফ, গ্লোবাল, গিনডেল্টা, প্যারামাউন্ট, সোনালী লাইফের শেয়ারদর ২ থেকে ৩ শতাংশ পর্যন্ত দর হারিয়েছে।
মিশ্রধারায় থাকা জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের ২৩ কোম্পানির মধ্যে ১০ শেয়ারের দর বেড়েছে, কমেছেও ১০টির এবং অপরিবর্তিত বাকি তিনটির দর। এ খাতের সিভিও পেট্রোকেমিক্যালের শেয়ারদর ৪ শতাংশ বেড়ে সর্বশেষ ১৭৪ টাকা দরে কেনাবেচা হয়েছে। পৌনে ৩ শতাংশ দর বেড়েছে বারাকা পাওয়ার ও ইস্টার্ন ল্যুব্রিকেন্টসের। তবে ডেসকোর শেয়ার ১ শতাংশ হারিয়ে ৩৭ টাকায় নেমেছে। প্রকৌশল খাতের ১৮ শেয়ারের দরবৃদ্ধির বিপরীতে ১৫টির দর কমেছে। ওষুধ ও রসায়ন এবং বস্ত্র খাতেও ছিল মিশ্রধারা। গতকাল ডিএসইতে এক হাজার ৫৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যা গত বুধবারের তুলনায় প্রায় ১০২ কোটি টাকা কম। খাতওয়ারি হিসাবে বস্ত্র খাতের ৫৮ কোম্পানির সর্বাধিক ২০৫ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যা মোটের সাড়ে ১৯ শতাংশ।