উসকানিমূলক এবং মানুষের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে অস্থিরতা সৃষ্টি করে এমন সংবাদ ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউব থেকে সরাতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
অ্যাডভোকেট নিলুফার আনজুম ও ব্যারিস্টার আশরাফুল ইসলামের পক্ষে রোববার (২১ আগস্ট) ব্যারিস্টার আরাফাত হোসেন খান ডাক ও ইমেইলে এই নোটিশ পাঠান।
তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব, ফেসবুক ও ইউটিউব বাংলাদেশের পাবলিক পলিসিবিষয়ক প্রধান শাবনাজ রশিদ দিয়া, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান, ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির মহাপরিচালক, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ (আইজিপি) সংশ্লিষ্ট ১১ জনকে বিবাদী করে এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশ পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে রিট করার কথা নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিৎ করেছেন আইনজীবী ব্যারিস্টার আরাফাত হোসন খান।
ব্যারিস্টার আরাফাত হোসন খান বলেন, ফেইবুক এবং ইউটিউবের মতো জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়াগুলো অবশ্যই আমাদের বাকস্বাধীনতা চর্চার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহায়ক। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, বাকস্বাধীনতার চর্চার নামে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য আমরা যেন সহিংসতা এবং নাশকতাকে উৎসাহিত না করি। এ বিষয়ে অবশ্যই বিটিআরসি, ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সি, ফেসবুক, ইউটিউবসহ সব কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী আরও সচেতন ভূমিকা পালন করতে হবে।
নোটিশে বলা হয়, গত কয়েক বছরের বাংলাদেশে স্যোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারী, দর্শক এবং গ্রাহক বেড়েছে। কিন্তু কনটেন্ট নিয়ে ফেসবুক ও ইউটিউব বাংলাদেশে তাদের সুপারভাইজরি মেকানিজম বা নিয়ন্ত্রণ প্রয়োগ করেনি। যেখানে দেশে ও দেশের বাইরে ইউটিউব ও ফেসবুক থেকে ভুয়া নিউজ, ছবি, ভিডিও প্রচার করে দেশ, জাতি, বুদ্ধিজীবী, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ইমেজ ক্ষুণ্ন করছে।
এ অবস্থায় নীতিমালার অভাবে কোনো ফ্যাক্টচেক ছাড়া ফেসবুক ও ইউটিউবের মাধ্যমে ভুয়া নিউজ ছড়াচ্ছে। এটি বাংলাদেশের টেলিকমিউনিকেশন আইনের ৬৪, ৯৭এ, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮ এবং ২৫, আইসিটি আইনের ৪৬ ধারার এবং সংবিধানের ২৭, ৩১, ৩৯ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন।
নোটিশে আরও বলা হয়, সম্প্রতি দেখা গেছে ফেসবুক ও ইউটিউব তাদের নজরদারি কৌশল পুরোপুরি অনুসরণ করছে না। বিশেষ করে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এটা বেশি ঘটছে। বাংলাদেশে প্রচুর ভুয়া সংবাদ, কনটেন্ট, ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে। এতে অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও বুদ্ধিজীবীর সম্মানহানি হচ্ছে।
নোটিশে ফেসবুকে প্রচারিত কয়েকটি ভুয়া তথ্যের লিংকও উল্লেখ করা হয়েছে। অবিলম্বে এসব লিংক ব্লক এবং সরাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, ইউটিউব ও ফেসবুকের কার্যক্রম মনিটর, আইন অনুসারে প্রতিনিয়ত প্রতিবেদন দাখিল এবং অনলাইলের সব নিউজ পোস্ট, ভিডিও লিংক ভেরিফাইয়ের বিষয়ে আইন অনুসারে জবাবদিহির মেকনিজম তৈরি করতে বলা হয়েছে।