দেশের মোবাইলফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৮ কোটির বেশি বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
শনিবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে এফবিসিসিআই-এর আয়োজনে বিধি বিধানের আলোকে ডিজিটাল, সামাজিকমাধ্যম এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মের সঠিক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালে সাড়ে সাত লাখ লোক ইন্টারনেট ব্যবহার করতেন। এখন ব্যবহার করে ১৩ কোটির ওপরে। ২০০৮ সালে চার কোটি লোক মোবাইল ব্যবহার করতেন। এটা এখন জনসংখ্যার ১১০ শতাংশ, ১৮ কোটির ওপরে। যদিও ১৮ বছরের কম বয়সী সিম নেওয়ার অধিকার নেই, কিন্তু কেউ ইচ্ছা করলে ১৫টি সিম নিতে পারে।
তিনি বলেন, ২০১৫ সাল থেকে আমি ডিজিটাল নিরাত্তা আইন নিয়ে কাজ করেছি। সাংবাদিকদের কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করে বলতে পারি এমন কোনো আলোচনা ছিল না যেখানে সাংবাদিকরা অংশ নেননি। সব কিছুতে অংশ নিয়ে যে মূহুর্তে আইন হয়ে গেছে সে মূহুর্তে আইনের বিরোধীতা শুরু হয়ে গেছে। আইন, বিধি-বিধান সবাইকে সন্তুষ্ট করতে পারবে না। কোনো আইন সবাইকে সন্তুষ্ট করার মতো হয় না। ফেসবুকের মতো প্রতিষ্ঠানকে ১০০ বা ২০০ টাকা জরিমানা করলে সেটা কী শাস্তি হবে নাকি তামাশা হবে। ফেসবুককে জরিমানা শত কোটি টাকা দিতেই হবে। তারা ১৪৭ কোটি টাকা ভ্যাট দিয়েছে, তাহলে তাদের আয় কতো? একসময় তাদের সঙ্গে কথাও বলা যেত না। বার্সালোনায় গিয়ে তাদের সঙ্গে বসতে চেয়েছিলাম, তাদের নাকি সময় হবে না। বাংলাদেশের সঙ্গে কি আলোচনা করবে, তাদের তখন ক্রেতা কম ছিলে।
মন্ত্রী বলেন, ফেসবুক অথবা ইউটিউব বাংলাদেশের আইনে চলে না। এটি বানিয়েছে আমেরিকানরা। আমাদের সংস্কৃতি, সমাজ, দেশের সঙ্গে তাদের কী মিলবে? ফেসবুক ব্যবহার করে যে পরিমাণ দাঙ্গা হয়েছে, আমার মনে হয় না বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে তার শতভাগের একভাগও হয়েছে। একজনের নামের ভুয়া আইডি খুলে ধর্ম অবমাননা করলে সেটি কে দেখবে।
তিনি বলেন, আমাদের কী একটা দৃষ্টান্ত দেখাতে পারবেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো মিডিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি? অথবা আইন প্রয়োগ বা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছি। আমারা দিনরাত ২৪ ঘণ্টা জেগে থাকতে হয় তার কারণ স্যোসাল মিডিয়া। লাইসেন্সপ্রাপ্ত মিডিয়া নিয়ে মাথা ঘামাতে হয় না। চার বছরে রেজিস্ট্রেশন পাওয়া একটি পত্রিকা বা লাইসেন্সপ্রাপ্ত একটি টিভি চ্যানেলের বিরুদ্ধে কোনো কমপ্লেইন করতে হয়নি। কিন্তু পরিবচয়হীন মাধ্যমের জন্য ভাবতে হয়।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের শতকরা ৯৫ ভাগ অপপ্রয়োগের মামলাগুলো ব্যক্তি উদ্যোগের বেলায় হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, সামাজিক অবস্থা আগের মতো নেই। ভবিষ্যতে কলকারখানা চলবে ফাইভ–জি নেটওয়ার্ক দিয়ে, রোবট চলবে কারখানায়। ঘরের বাতি বন্ধ করতে ভুলে গেলো স্মার্টফোন দিয়ে বন্ধ করতে পারবেন। জানুয়ারির মধ্যে ফাইভ–জি দিয়ে সেটি করব, যদিও ডলারের একটু ক্রাইসিস আছে ডলারের জন্য সেটিও কাটিয়ে উঠতে পারব। জানুয়ারির মধ্যে হোম নেটওয়ার্কের চালু করতে পারব। বিশ্বের যেখানে থাকেন সেখান থেকে আপনার বাড়ি কন্ট্রোল করতে পারবেন। সে যুগের জন্য আমাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে প্রস্তুত করতে হবে। ডিজিটাল যুগের যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।