ফ্রিডম বাংলা নিউজ

মঙ্গলবার, জুলাই ৯, ২০২৪ |

EN

গঙ্গা চুক্তির সুফল বাংলাদেশের মানুষ পায়নি: ফারাক্কা কমিটি

ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: শনিবার, আগস্ট ১৩, ২০২২

গঙ্গা চুক্তির সুফল বাংলাদেশের মানুষ পায়নি: ফারাক্কা কমিটি
গঙ্গার পানি বণ্টন নিয়ে ভারতের সঙ্গে ৩০ বছরের চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ সালে শেষ হবে। কিন্তু এই চুক্তির সুফল দেশের মানুষ পায়নি বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান সালু। 

তিনি বলেছেন, চুক্তির শর্ত অনুসারে ভারত পানি দেয়নি। তিস্তা নদীর পানি ব্যবস্থাপনার ওপর ২০১১ সালে চুক্তি হবার কথা থাকলেও এখনো হয়নি। দুই দশকের বেশি একতরফাভাবে পশ্চিম বঙ্গের গজল ডোবা ব্যারেজ থেকে শুষ্ক মৌসুমের পুরো পানি অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। এদিকে এখন বর্ষাকালে ব্যারেজের সকল গেট খুলে দেওয়ায় নীলফামারি, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধাতে চলছে বন্যা ও ভাঙ্গন।

শনিবার (১৩ আগস্ট) সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন চাই’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সিলেট অঞ্চলের সাম্প্রতিক বন্যা সেখানকার জনগোষ্ঠিকে আচমকা আঘাত হেনে জান ও মালের বিপুল ক্ষতি করেছে। ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এ বন্যা এমন একসময় এসেছে যখন বাংলাদেশে স্বাভাবিক বর্ষার জন্য হাহাকার চলছিল। আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি মনে করে, মেঘালয় ও আসাম এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অপরিনামদর্শী উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফলে এই বন্যা সর্বগ্রাসী রূপ নেয়। সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনার ব্যবস্থা থাকলে এ বিপর্যয়ের অনেকখানি এড়ানো যেত।

সালু আরও বলেন, বর্ষাকালে বন্যা আর শুষ্ক মওসুমে পানির অভাবে মরা নদী এবং খরা বাংলাদেশে পরিবেশগত বিপর্যয় নিয়ে এসেছে। কয়েকদিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে যাবার কথা। তাই পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ বাংলাদেশের উৎস যৌথ নদীগুলো নিয়ে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাফ সাফ কথা বলে আসবেন বলে আমরা আশা করি। কারণ উৎস নদীগুলো থেকে বাংলাদেশকে বিচ্ছিন্ন করার ফলে এদেশের সবুজ শ্যামল পরিবেশ দিন দিন ধংস হয়ে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষি, দেশি মাছের অভয়ারণ্য ও শিল্প। মানুষ হারাচ্ছে জীবিকা ও বাসস্থান।

তিনি বলেন, আমরা মনে করি তিস্তা অববাহিকার মানুষকে বাঁচানো এবং তাদের জীবন-জীবিকার উন্নয়নের জন্য টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। এর আগে তিস্তায় একটি পানি ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধার মহাপরিকল্পনায় ৯৮৭.২৭ মিলিয়ন ডলার (দশ হাজার কোটি টাকা) ঋণ প্রস্তাব দিয়েছে চীন। চীনের পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কো অপারেশন এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চায়। কাজ শুরু হবার কথা ছিল ২০২১ সাল থেকে। কিন্তু এখনো শুরু হয়নি। 

প্রকৃতির স্বাবাভিক নিয়মে উজানে যখন নদীর প্রবাহ ফিরিয়ে দেবার তাগিদ আসবে তখন বাংলাদেশের তিস্তা অংশ নতুন জীবন ফিরে পাবে আশা ব্যক্ত করেন তিনি।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির সিনিয়র সহ সভাপতি এস আই খান, সমন্বয়ক মোস্তফা কামাল মজুমদারসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।