ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, জুলাই ৬, ২০২৪ |

EN

মোটরসাইকেলে জ্বালানি তেল সাশ্রয় করবেন যেভাবে

ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: মঙ্গলবার, আগস্ট ৯, ২০২২

মোটরসাইকেলে জ্বালানি তেল সাশ্রয় করবেন যেভাবে

ফাইল ছবি

জ্বালানি তেলের দামের ঊর্ধ্বগতি ভাবাচ্ছে সবাইকেই। সময় বাঁচাতে, জ্যাম-ঝক্কি এড়াতে বিভিন্ন পেশাজীবীদের মোটরসাইকেলের ওপর নির্ভরশীলতা ক্রমশ বাড়ছে। তাই একটু সচেতন হলে বাঁচানো যাবে তেলের খরচ, বাড়ানো যাবে মাইলেজ।

জ্বালানি সাশ্রয়ে যা করতে হবে
১. হঠাৎ মোটরসাইকেলের গতি বাড়ানো-কমানোতে ইঞ্জিনে বেশ চাপ পড়ে এবং ট্যাঙ্ক দ্রুত খালি হয়। টপ গিয়ার থেকে ফার্স্ট গিয়ারে আনলেও জ্বালানি খরচ বেশি হয়। তাই একই গতিতে বা মোটরবাইকে দেওয়া স্পিডো মিটারের ইকোনমি স্পিডে বাইক চালালে জ্বালানি খরচ কমবে।

২. টায়ারের পৃষ্ঠচাপ ঠিক রাখা এবং একইরকম ভারসাম্যপূর্ণ ড্রাইভ চেইন টেনশন নিশ্চিত রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। টপ স্পিডে জিগ-জ্যাগ বা আঁকাবাঁকা চালানো উপরোক্ত ব্যাপারগুলোকে প্রভাবিত করে যার ফলে ইঞ্জিনে জ্বালানি চাহিদা বৃদ্ধি পায়।

৩. ইঞ্জিনের শব্দে কোনো গড়মিল থাকলে তা খেয়াল করতে হবে। এছাড়াও কার্বুরেটর বায়ুচাপের পার্থক্যের ওপর নির্ভর করে। এর প্রধান কাজ হলো বায়ু ও জ্বালানির মিশ্রণ ঘটানো। কার্বুরেটরে ধুলোবালি জমে জেট এবং ফ্লোট বোল নিডল জ্যাম হয়ে যায়। যার ফলে মাইলেজ কমে যায় এবং ময়লা জমলে ইঞ্জিনে তেল বেশি দহন হয়। তাই সব সময় কার্বুরেটর পরিষ্কার রাখতে হবে তবে এর সেটিং স্ক্রুগুলো অত্যন্ত নমনীয় হওয়ায় অনভিজ্ঞ মেকানিক দ্বারা কখনো কার্বুরেটর টিউন করালে বাইকের মাইলেজ কমে যায়। প্লাগ, ব্যাটারি এগুলোও ত্রুটিপূর্ণ হলে সারিয়ে নিতে হবে।

৪. বাইকের জন্য খুবই জরুরি এয়ার ফিল্টার। রাস্তায় চলাচলের সময় ধুলোবালির কারণে অনেক সময় এয়ার ফিল্টার অকেজো হয়ে যায়। এয়ার ফিল্টারে ময়লা জমলে ইঞ্জিনে প্রয়োজনের তুলনায় কম বাতাস ঢোকে। এতে করে তেল পোড়ার সময় ইঞ্জিন কম অক্সিজেন পায়। এর ফলে বেশি তেল খরচ হয়।

৫. কয়েকদিন পর পর চাকার হাওয়া পরীক্ষা করতে হবে। চাকার ওজন ও আকার কম-বেশি হলে হাওয়ার কারণে বাইকের কার্যক্ষমতা কমে যায়। সেক্ষেত্রে বাইক চালানোর সময় তেল খরচ বেশি হয়। 

৬. মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন নিয়মিত পরীক্ষার জন্য সার্ভিসিং করাতে হবে।    

ধোঁয়া নির্গমনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে করণীয়
১. স্পার্ক প্লাগ, ছাই ফিল্টার (সেকেন্ডারি এয়ার ইনজেকশন পাইপ এর ভেতর ময়লা না যাওয়ার জন্য) প্রতি ১২ হাজার কিলোমিটার চালানোর পর পর পরিষ্কার বা পরিবর্তন করা এবং ইলেকট্রাক্টড গুলোর মাঝে ফাঁকা স্থান রাখা।

২. প্রয়োজনের চেয়ে বেশি তেল দিয়ে ইঞ্জিন ভর্তি না করা।

৩. নির্ভেজাল জ্বালানি ব্যবহার করতে হবে। ভেজালযুক্ত জ্বালানি মানেই বিভিন্ন সমস্যা। জ্বালানি খরচ বাড়বে, ইঞ্জিন উত্তপ্ত হবে। প্লাগ, রিংপিস্টন ইত্যাদি নষ্ট হবে। কাজেই বিশ্বস্ত জায়গা থেকে পেট্রোল বা অকটেন নিতে হবে। কোনোভাবেই ভেজাল জ্বালানি ব্যবহার করা যাবে না।

৪. অন্তত প্রতি ৩ মাসে একবার অনুমোদিত জায়গা থেকে ধোঁয়া নির্গমন মাত্রা ঠিক আছে কিনা পরীক্ষা করা।

জ্বালানি অপচয়ে যা করা যাবে না
১. বাইক চালানোর সময় ক্লাচ লিভার শক্ত করে চেপে রাখলে বা ক্লাচ খুব বেশি ব্যবহার করলে অতিরিক্ত জ্বালানি খরচ হয়। ক্লাচ এবং ব্রেক বেশি ব্যবহার করা যাবেনা।

২. দীর্ঘ সময় ধরে লো গিয়ারে ইঞ্জিন চালানো উচ্চ রেভ ট্যাঙ্ক থেকে আরও জ্বালানি নিষ্কাশন করে। মোটরসাইকেল যত নিচের গিয়ারে চালানো হয় ততই তেল বেশি পোড়ায়। এজন্য উচিত বাইক স্টার্ট করার পর গতি বাড়িয়ে যথাসম্ভব টপ গিয়ারে রাখা। যখন-তখন গিয়ার বদলানো না। যখন-তখন গিয়ার বদলালে তেল খরচ যেমন বাড়বে তেমনি ইঞ্জিনেরও ক্ষতি হবে।

৩. সরাসরি সূর্যালোকে বাইক পার্ক করা যাবে না, এটি জ্বালানি বাষ্পীভূত করে।

৪. ট্রাফিক সিগনালের সময় ইঞ্জিনের আরপিএম বাড়ানো যাবে না। যদি ৩০ সেকেন্ডের বেশি অপেক্ষা করতে হয় তাহলে ইঞ্জিন না চালিয়ে বন্ধ করে দিতে হবে।

৫. অতিরিক্ত ওজন বহন ইঞ্জিনে বেশি চাপ সৃষ্টি করে। ফলে ত্বরণ হয়ে যায় ধীর এবং বাড়ায় জ্বালানি দহন। বাড়তি ওজন বহন পরিহার করলে তা একই সঙ্গে জ্বালানি খরচ এবং ইঞ্জিন ক্ষতির ঝুঁকি কমাতে পারে। এক্ষেত্রে ভারী অংশগুলো হালকা জিনিস দিয়ে প্রতিস্থাপন করা যায়। যেমন, কিছু বাইকে বড় চেইনের জন্য একটি ভারী স্টিলের স্প্রোকেট থাকে। এটিকে একটি হালকা অ্যালুমিনিয়াম স্প্রোকেট দিয়ে প্রতিস্থাপন করে, আপনি আপনার বাইকের ওজন ১ কেজি কমাতে পারেন। এছাড়াও, মোটরসাইকেলে অকারণে অতিরিক্ত জিনিসপত্র ও একের অধিক যাত্রী বহন করা পরিহার করতে হবে।

সচেতনতায় আর সাশ্রয়ে, সাবলীল আর নিরাপদ হোক মোটরসাইকেলের যাত্রা।