Can't found in the image content.
ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: শনিবার, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২১
খিলগাঁও থানার
সিপাহিবাগের
একটি
বাড়ির
দিকে
এখন
সবার
দৃষ্টি।
ওই
বাড়ির
পাঁচতলার
একটি
ফ্ল্যাটে
থাকেন
সিআইডির
বরখাস্ত
এসআই
আকসাদুদ
জামান।
ঘুষ
লেনদেনের
কথাবার্তার
একটি
অডিও
ভাইরাল
হওয়ার
পর
গোয়েন্দা
পুলিশ
তাঁকে
গ্রেপ্তার
করেছে।
পুলিশ
কর্মকর্তারা বলছেন, ডাকাতির পাশাপাশি যেকোনো ধরনের অপরাধমূলক কাজে আকসাদুদ জামান
ছিলেন সিদ্ধহস্ত। গাড়ি-বাড়ির পাশাপাশি
তাঁর রয়েছে হুন্ডি ব্যবসা, গার্মেন্টস কারখানা আর একটি অনিবন্ধিত
এনজিও। এসব জায়গায়ও তাঁর
বিনিয়োগ রয়েছে। ২৬ বছরের চাকরিজীবনে
একটি গুরুদণ্ড ও ২৬টি লঘুদণ্ড
পেয়েছেন, বেশির ভাগ অভিযোগই অর্থসংক্রান্ত।
অনুসন্ধানে
জানা যায়, সিপাহিবাগের যে
ফ্ল্যাটে তিনি থাকেন, দুই
বছর আগে সেটা ৮০
লাখ টাকায় কেনেন। ২০১৪ সাল থেকে
নিজের গাড়ি ব্যবহার করছেন।
গত সাত বছরে তিনটি
গাড়ি বদল করেছেন তিনি।
তাঁর দুই গাড়িচালকের একজন
শহিদুল নিজেও ডাকাত দলের সদস্য। তবে
শহিদুল সেই অভিযোগ অস্বীকার
করেছেন।
জানা
যায়, ১৯৯৫ সালে কনস্টেবল
পদে যোগদান করেন ঠাকুরগাঁও সদর
উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের আকসাদুদ জামান। ২০০২ সালে তিনি
এএসআই এবং ২০১০ সালে
এসআই পদে পদোন্নতি পান।
এরপর থেকে তিনি ফুলেফেঁপে
উঠতে থাকেন। ঠাকুরগাঁও সদরের বাসিন্দারা বলেছেন, ২০০০ সালে ঠাকুরগাঁও
সদর উপজেলার সালান্দর ইউনিয়নের চৌধুরীহাট গ্রামে বিয়ে করেন আকসাদুদ।
এরপর
তাঁর টাকায় রাতারাতি অঢেল সম্পদের মালিক
হতে শুরু করে নিজের
ও শ্বশুরের পরিবার। অবশ্য তাঁর স্ত্রী তাহমিনা
আক্তারের দাবি, তাঁরা আগে থেকেই বিত্তশালী।
গ্রামের বাড়িতে তাঁর বাবার ও
শ্বশুরবাড়িতে অনেক সম্পত্তি রয়েছে।
অথচ আকসাদুদের ছোট ভাই শাহীন
বলেন, খুব নিম্ন-মধ্যবিত্ত
পরিবার তাঁদের। বাবা মারা যাওয়ার
পর তিন ভাই দুই
বোনের সংসার চালিয়েছেন মা। এলাকার লোকজন
জানিয়েছেন, কিছুদিন আগে আকসাদুদ ৩৮
শতক জমি কিনেছেন। তাঁর
কৃষিজমি রয়েছে ৫০ বিঘার মতো।
শুধু গ্রামের বাড়িতে নয়, ঠাকুরগাঁও শহরেও
তাঁর তিনতলা বাড়ি আছে। আর
এ সবই করেছেন ডাকাতির
মতো নানা ধরনের অপরাধ
করে।
মামলার
তদন্তকারী সংস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা
পুলিশ সূত্র বলছে, বিমানবন্দর এলাকাকেন্দ্রিক প্রবাসীদের সঙ্গে যত ডাকাতির ঘটনা
ঘটেছে, তার অধিকাংশই হয়েছে
আকসাদুদের নেতৃত্বে। বিভিন্ন সময়ে তিনি পুলিশের
গাড়ি ব্যবহার করে ডাকাতি করতেন।
এই ডাকাতির টাকায় তিনি বিপুল পরিমাণ
সম্পদের মালিক হয়েছেন।
গোয়েন্দা
পুলিশের উত্তরার উপপুলিশ কমিশনার কাজী শফিকুল আলম
বলেন, সম্প্রতি আকসাদুদের একটি ফোনালাপ পাওয়া
গেছে, যেখানে তাঁর সোর্স আমিরকে
বলছেন, ২০ লাখ টাকার
নিচে কোনো ডাকাতির কাজে
হাত দেবেন না তিনি।
৪
সেপ্টেম্বর মো. আকসাদুদ জামানের
ফেসবুক আইডি থেকে একটি
অডিও আপলোড করা হয়। চার
দিন পর সেই অডিওর
‘ঘুষ লেনদেনের কথাবার্তার’ সূত্র ধরে বেশ কয়েকটি
গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করে। সেদিন রাতেই
ফেসবুক আইডির মালিককে রংপুরের মিঠাপুকুর থেকে গ্রেপ্তার করে
ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশ। কর্মকর্তারা বলেন, ২০২০ সালে রাজধানীর
বিমানবন্দর এলাকায় একটি ডাকাতির ঘটনায়
হোতা ছিলেন সিআইডির বরখাস্ত এসআই এই আকসাদুদ
জামান। ডাকাতির কাজে তিনি সরকারি
গাড়ি ব্যবহার করতেন। আকসাদুদের মতো তাঁর স্ত্রীও
কম নন। স্বামীর নানা
কাজে তাঁরও সহযোগিতা রয়েছে। সম্প্রতি ২ মিনিট ১০
সেকেন্ডের একটি মোবাইল ফোনালাপ
ছড়িয়ে পড়ে। সেই ফোনালাপে
এক নারী ও পুরুষ
কণ্ঠ রয়েছে। তাতে কয়েক দফায়
১ কোটি ২৮ লাখ
ও ১৪ লাখ টাকা
লেনদেন হওয়ার কথা বলতে শোনা
যায়। এই কণ্ঠস্বর আকসাদুদের
স্ত্রী তহমিনার বলে সন্দেহ করা
হচ্ছে।
আকসাদুদের
স্ত্রী তহমিনা বলেন, সিপাহিবাগ এলাকায় তাঁদের বাসায় ২৬ ও ২৭
নভেম্বর ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার কায়সার রিজভী কোরায়েশীসহ তিন-চারজনকে ১
কোটি ২৮ লাখ টাকা
দেন আকসাদুদ। কিন্তু টাকা নিয়েও কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে ওই কর্মকর্তা তাঁর
স্বামী আকসাদুদকে আটক করেন। স্বামীকে
ছাড়াতে তিনি নিজে আরও
১৪ লাখ টাকা দেন।
কিন্তু তাতেও মুক্তি না পাওয়ায় তিনি
অডিও রেকর্ডটি ফেসবুকে ছেড়ে দেন।
আকসাদুদের
স্ত্রীর অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিবির উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার কায়সার রিজভী কোরায়েশী বলেন, ‘ওই অডিও ভুয়া।
আমার টাকা নেওয়ার কোনো
প্রশ্নই আসে না।’
তবে
মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) এ কে এম
হাফিজ আক্তার বলেন, টাকা নেওয়ার অভিযোগ
খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সুত্র:
আজকের পত্রিকা