প্রশাসনের নির্দেশনা উপেক্ষা করে সাগরে গোসল করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। যে কারণে অনেকের ভ্রমণে আসার আনন্দ মৃত্যুশোকে পরিণত হচ্ছে।
অনাকাঙ্ক্ষিত এ মৃত্যু রোধে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে গোসল করতে নামার আগে পর্যটকদের জন্য ১০ নির্দেশনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
এসব নির্দেশনা নিয়ে সৈকতে ১০ দিনব্যাপী সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট এ ক্যাম্পইনের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ড. মো. মামুনুর রশীদ। এ সময় সৈকতের গুপ্ত গর্ত ও গণস্রোতপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে সেখানে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়।
এ ক্যাম্পইনের ১০ নির্দেশনা হল, সাঁতার না জানলে সমুদ্রের পানিতে নামার সময় লাইফ জ্যাকেট ব্যবহার করতে হবে, লাল পতাকা চিহ্নিত করা পয়েন্টে গোসলে কোনোভাবে নামা যাবে না, সৈকত এলাকায় সর্বদা লাইফগার্ডের নির্দেশনা মানতে হবে, বিকেল ৫টার পর সমুদ্রে নামা যাবে না, সমুদ্রে নামার আগে জোয়ার-ভাটাসহ আবহাওয়ার বর্তমান অবস্থা জেনে নিতে হবে, লাইফগার্ড নির্দেশিত নির্ধারিত স্থান অন্য কোনো পয়েন্ট থেকে সমুদ্রে নামা যাবে না, সমুদ্রে যেকোনো মুহূর্তে তীব্র স্রোত এবং গুপ্ত গর্ত সৃষ্টি হতে পারে, যেকোনো ভাসমান বস্তু পানিতে নামার আগে বাতাসের গতি সম্পর্কে জেনে নিতে হবে, সৈকতে শিশুকে সব সময় সঙ্গে রাখতে হবে, শিশুকে একা সমুদ্রে নামতে দেওয়া যাবেনা এবং অসুস্থ অথবা দুর্বল শরীর নিয়ে সমুদ্রে হাঁটু পানির বেশি নামা যাবেনা।
১০ দিনব্যাপী এ ক্যাম্পেইনের উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাহিদ ইকবাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (মানব সম্পদ) নাসিম আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) বিভীষণ কান্তি দাশ, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) সৈয়দ মুরাদ ইসলামসহ ট্যুর অপারেটর, ফায়ার সার্ভিস ও বিভিন্ন সংগঠনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ড. মো. মামুনুর রশীদ জানান, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের কারণে সারাবছরই লাখ লাখ পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমনে আসেন। কিন্তু একটু অসর্তকতার কারণে অনেক পর্যটকের আনন্দ মৃত্যুর বিষাদে পরিণত হচ্ছে। যেটা আমাদের কারও কাম্য নয়। এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু আমরা রোধ করতে চাই।
‘পর্যটকদেন বিশেষ করে সাগরে সতর্কতার সঙ্গে বা নিয়ম মেনে গোসলে নামলে সহজেই এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি অনেকেই নিয়ম বা প্রশাসনের নির্দেশনা মানছেন না। যে কারণে তাদের ভ্রমণের আনন্দ বিষাদে রূপ নিচ্ছে, যোগ করেন জেলা প্রশাসক।