বিশ্বে গত জুলাই মাসে খাদ্যপণ্যের দাম আরও কমেছে। ইতোমধ্যে ইউক্রেনে আটকে থাকা খাদ্যশস্য রপ্তানি শুরু হয়েছে। তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় গত মাসে এ নিয়ে চুক্তি করে রাশিয়া-ইউক্রেন। মূলত, তার প্রভাবেই অনেক খাবারের মূল্য হ্রাস পেয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এর জেরে পরের মাস মার্চে বিশ্বে খাদ্যের দর রেকর্ড বৃদ্ধি পায়।
পরে নানা দেশের সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমতে থাকে। সেই ধারাবাহিকতায় টানা চার মাস কমল খাবারের মূল্য।
গতকাল শুক্রবার (৫ আগস্ট) জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এসব তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটির বৈশ্বিক খাদ্যসূচকে সিরিয়াল, ভোজ্যতেল, দুগ্ধজাত পণ্য, মাংস ও চিনির দাম ওঠা-নামার মাসিক হিসাব তুলে ধরা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, জুন মাসের তুলনায় জুলাইয়ে এগুলোর দাম ব্যাপক হারে কমেছে।
এফএও’র সূচক অনুযায়ী, গত জুলাইয়ে বিশ্বে খাদ্যদ্রব্যের গড় দামের সূচক ছিল ১৪০ দশমিক ৯ পয়েন্ট। জুনে তা ছিল ১৫৪ দশমিক ৩ পয়েন্ট। অর্থাৎ, জুনের তুলনায় জুলাইয়ে খাদ্যদ্রব্যের দাম ৮ দশমিক ৬ পয়েন্ট নিম্নমুখী হয়েছে।
এরই মধ্যে কৃষ্ণসাগরের বন্দরগুলো দিয়ে খাদ্যশস্য রপ্তানি শুরু করেছে ইউক্রেন। এতে বিশ্ববাজারে গমের দামও ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে।
জুলাইয়ে বিশ্বে ভুট্টার গড় দামের সূচক কমেছে ১০ দশমিক ৭ শতাংশ। ইউক্রেন-রাশিয়ার চুক্তি ছাড়াও নেপথ্যে রয়েছে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলে ভুট্টার উৎপাদন বৃদ্ধি।
তবে গত মাসে খাবারের মূল্য কমলেও গত বছরের তুলনায় তা এখনও ১৩ দশমিক ১ শতাংশ বেশি। এর পেছনে আছে ইউক্রেনীয়-রুশ যুদ্ধ, প্রতিকূল আবহাওয়া, অতিরিক্ত উৎপাদন খরচ ও পরিবহন ব্যয়।
এফএও’র প্রধান অর্থনীতিবিদ মাক্সিমো তোরেরো বলেন, উচ্চ স্তর থেকে খাদ্যপণ্যের দর কমার বিষয়টিকে স্বাগত জানাই। তবে এখনও অনেক অনিশ্চয়তা রয়েছে।
বৈশ্বিক অর্থনীতিতে কৃচ্ছ্রসাধন, মুদ্রার অস্থিরতা এবং সারের উচ্চমূল্যে ভবিষ্যতে উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে। বিশ্বে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য সেগুলো মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।