Can't found in the image content. জাবি সাবেক ভিসি’র বিরুদ্বে গোলাম রাব্বানীর বিস্ফোরক মন্তব্য | ফ্রিডম বাংলা নিউজ
ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪ |

EN

জাবি সাবেক ভিসি’র বিরুদ্বে গোলাম রাব্বানীর বিস্ফোরক মন্তব্য

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: বৃহস্পতিবার, আগস্ট ৪, ২০২২

জাবি সাবেক ভিসি’র বিরুদ্বে গোলাম রাব্বানীর বিস্ফোরক মন্তব্য
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসু'র সাবেক জিএস গোলাম রাব্বানী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি’র) সাবেক ভিসি ফারজানা ইসলাম কর্তৃক দেশের প্রচলিত আইন ও সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে বিএনপি-জামাতপন্থী শিক্ষকদের বিশেষ সুবিধা প্রদানে সমালোচনা কবে তার ভ্যারিফাইড ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট করেছেন। যেখানে তার অনুসারীরা ওই পোস্টের সমালোচনা করছেন। পোস্টটি হুবহু পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হলো।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মহা দুর্নীতিবাজ সাবেক ভিসি ফারজানা ইসলাম কর্তৃক দেশের প্রচলিত আইন ও সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে বিএনপি-জামাতপন্থী শিক্ষকদের বিশেষ সুবিধা প্রদানের কারণে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি কোটি কোটি টাকা!
#পর্ব ১: জামাত-বিএনপি প্রীতি ও নজিরবিহীন দুর্নীতি।

দেশের ইতিহাসে দুর্নীতির জন্য বহুল সমালোচিত প্রফেসর ফারজানা ইসলাম ২০১৪ সালের ২ মার্চ তারিখে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী ভিসি নিয়োগ প্রাপ্ত হন জামাত-বিএনপি পন্থী শিক্ষকদের সক্রিয় সহযোগিতায় দেশ-বিদেশে নিন্দিত অত্যন্ত অশালীন আন্দোলনের মাধ্যমে নির্বাচিত ও মুক্তিযোদ্ধা ভিসি অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনকে পদত্যাগে বাধ্য করার মাধ্যমে। অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনের পদত্যাগ সহজ করতে অন্যতম সহায়ক ভূমিকা পালন করে তৎকালীন শিক্ষাসচিব কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরি।

বলা বাহুল্য যে, ফারজানা ইসলাম কোনওকালে আওয়ামীলীগের সাথে ছিলেন না, বরং তার আত্মীয়স্বজন সবই বিএনপি’র রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট – ৯১ এর জাতীয় নির্বাচনে তার আপন ভাই শরীয়তপুরে বিএনপি থেকে নির্বাচন করেছে। তবুও তিনি এই জমানায় ভিসি হয়ে গেলেন তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু সাবেক এক মূখ্য সচিব ও তৎকালীন শিক্ষা সচিবের বিশেষ ভূমিকায়। আর তিনি বঙ্গবন্ধু পরিবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ, এই পরিচয়কে হাতিয়ার বানিয়ে পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে সে যেন অভাবনীয় দুর্নীতির পশরা সাজিয়ে বসেছিলেন! 



ফারজানা ইসলাম ভিসি পদে অধিষ্ঠিত হয়েই জামাত-বিএনপি'র নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষকদেরকে নানা পদ ও সুযোগ-সুবিধা দিয়ে দারুণভাবে পুরষ্কৃত করেন।

১. ক. বাংলাদেশ সরকার ২০১২ সালে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের চাকুরির বয়স সীমা নির্ধারণ করে সংসদে একটি আইন পাস করে। প্রণীত ২০১২ সালের জাতীয় সংসদের ২৯ নং এই আইন ′পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক (অবসর গ্রহণ) (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১২" [বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জুলাই ১০, ২০১২] বলছে - ′আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইন, অধ্যাদেশ, রাষ্ট্রপতির আদেশ, বিশ্ববিদ্যালয় সংবিধি, বিধি, প্রবিধি, উপ-আইন, অথবা আইনের ক্ষমতা সম্পন্ন কোন দলিলে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ৬৫ (পঁয়ষট্টি) বৎসর বয়স পূর্তিতে চাকুরি হইতে অবসর গ্রহণ করিবেন।" আরো উল্লেখিত আছে যে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা এই তফসিল সংশোধন করিতে পারিবে।

১.খ. ফারজানা ইসলাম তার স্বেচ্চাচারিতায় এই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে ৩০ জুন ২০১৪ তারিখে অবসরে যাওয়া যে দশ জন শিক্ষক ও ২০ জন কর্মকর্তার চাকুরির বয়স ২ বছর বাড়িয়ে বিশেষ সুবিধা প্রদান করেছিলেন তাদের প্রায় সকলেই বিএনপি-জামাত ঘরানার ছিলেন। তাদের অন্যতম কয়েকজন হলেন বিগত জোট সরকারের ভিসি অধ্যাপক খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমান। উল্লেখ্য, এই মুস্তাহিদুর রহমান ভিসি থাকাকালে তার উপস্থিতিতেই ৩১ জানুয়ারি ২০০৫ তারিখে জাবি  শাখা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি সোহেল পারভেজ, সহ-সভাপতি রূপম, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ নাসের জনি, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এসএম সাদাত হোসেন, যুগ্ম-সম্পাদক জাহিদ পাভেজ খান পুলক, বাপ্পি, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল হাসান চিশতি, সদস্য অনন্য ইমন, নজরুল ইসলাম দুলাল, নাজমুল তরু, মিলন, ইকবাল, মাহফুজ, জয়, আশিক, নির্ঝর সাম্য সহ অনেক নেতা-কর্মীকে বিএনপি-জামাত জোট সরকারের ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা প্রহার করে খোদ ভিসি মুস্তাহিদুর রহমানের কার্যালয়ে। এহেন ঘটনার কোনও বিচার হয়নি সন্ত্রাসীদের প্রতি ভিসি মুস্তাহিদুর রহমানের প্রত্যক্ষ সমর্থন থাকায়। উপরন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রোক্টর এই নজিরবিহীন ন্যাক্কারজনক ঘটনার বিচার করার বিষয়ে দৃঢ় অবস্থান নিলে সন্ত্রাসীরা তাকে জীবন নাশের হুমকি প্রদান করেছিলো, আর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তখনকার বিরোধি দলীয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রোক্টরকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছিলেন।

১.গ. ফারজানা ইসলাম আরো যাদেরকে এই বিশেষ সুবিধা প্রদান করেছিলো তারা হলেন জোট সরকারের প্রোভিসি অধ্যাপক এনামুল হক খান, জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক আবু সাঈদ খান, জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, বিএনপি পন্থী শিক্ষক পদার্থের অধ্যাপক মো. মুনিরুজ্জামান, রসায়নের অধ্যাপক কাজী আলী আজম, জামাতপন্থী শিক্ষক রসায়নের অধ্যাপক আব্দুল হাই ও অধ্যাপক রবিউল ইসলাম এবং ভুগোলের অধ্যাপক রাজিয়া সুলতানা। অর্থাৎ দশজনের নয় জনই জামাত-বিএনপির পদপদবী ধারী শিক্ষক।

১.ঘ. সাবেক ভিসি ফারজানা ইসলামের এহেন বেআইনি কর্মের বিপরীতে অডিট আপত্তি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আপত্তি, ইউজিসির আপত্তিকে তিনি পাত্তা দেননি। কারণ তার ক্ষমতার খুঁটি ছিলেন তখন স্বয়ং শিক্ষাসচিব ও সাবেক মূখ্য সচিব কামাল নাসের চৌধুরি। একারণে সকল আমলারা তাকে বিশেষ সমীহ করে চলতো বলে সংশ্লিষ্টদের দাবি। অবশেষে সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বিগত ১৮ মে ২০১৬ তারিখে কড়া ভাষায় নির্দেশনা (পত্র নং-বিমক/বাজেট-১২/২০১৩/৪১৭২) প্রদান করে ঐসব বাড়তি মেয়াদের নিয়োগ বাতিল পূর্বক অবসরে যাওয়ার পরের বাড়তি সময়ে চাকুরিতে রাখার জন্য প্রদত্ত বেতন-ভাতা তাদের পেনশন থেকে সমন্বয় করতে। ফারজানা ইসলাম এই নির্দেশনাকেও তোয়াক্কা না করে অতি চতুরতার মাধ্যমে এসব জামাত-বিএনপিপন্থী শিক্ষকদেরকে পেছনের তারিখ থেকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেখিয়ে একান্তই তার ব্যক্তি স্বার্থে রাষ্ট্রের আর্থিক অপচয় ঘটায় ৩ কোটি টাকা।
(চলবে...)