ফ্রিডম বাংলা নিউজ

মঙ্গলবার, নভেম্বর ৫, ২০২৪ |

EN

এই সরকারের উন্নতি ঘরে ঘরে মোমবাতি : গয়েশ্বর

সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার | আপডেট: বুধবার, জুলাই ২৭, ২০২২

এই সরকারের উন্নতি ঘরে ঘরে মোমবাতি : গয়েশ্বর
বর্তমানে দেশে বিদ্যুৎ যায় না, মাঝে মাঝে দেখা করতে আসে। বিদ্যুৎ এসে বলে, এখনো বেঁচে আছি, মরিনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ নিয়ে কয়েক মাস আগে অনেক মাতামাতি শুনলেও আসলে তা ছিল ফাঁকা বুলি। তাই এই সরকারের উন্নতি ঘরে ঘরে মোমবাতি।

বুধবার (২৭ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে এক স্মরণসভায় এসব কথা বলেন তিনি। স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রয়াত সভাপতি শফিউল বারী বাবু দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ স্মরণ সভার আয়োজন করেছে স্বেচ্ছাসেবক দল।

গ‌য়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, রাতের আধারে ভোট চুরি করে হওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন- তার বাড়ি ঘেরাও করতে গেলে তিনি ছাদে আপ্যায়ন করাবেন, জনগণের  চায়ের জন্য যতটুকু পানি প্রয়োজন ততটুকু মজুদ আছে তো? নাই। চায়ের দাওয়াতের জন্য নয় জনতা গণভবন ঘেরাও করবে আপনার জিনিসপত্র গুছিয়ে গাড়িতে তুলে দিতে । দেশবাসী আপনাকে বিদায় জানাতে যেতে পারে।

সরকারের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি চিত্র তুলে ধরে স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, 'এখন বিদ্যুৎ যায় না মাঝে মাঝে আসে। বিদ্যুৎ বলে আমি জীবিত আছি এখনো মরি নাই। এই আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নতি শেষ পর্যন্ত ঘরে ঘরে মোমবাতি। এই সরকার ঘরে ঘরে জনগণের হাতে হারিকেন ধরিয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, 'গতকাল ওবায়দুল কাদের বলেছেন- খালেদা জিয়াকে টুস করে ফেলে দেওয়া এটা একান্তই হিউমার মশকরা- অর্থাৎ শেখ হাসিনা ঠাট্টা করতেও জানে। ঠাট্টা খালেদা জিয়ার সাথে করেন কিন্তু জাতির সঙ্গে যেটা মশকরা শুরু করেছেন ১৪ বছর ধরে হিসাব একদিন না একদিন জনগণের কাছে দিতেই হবে।'

নির্বাচন কমিশন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) তীব্র সমালোচনা করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, 'নির্বাচন কমিশন এটা ঠাট্টা মশকরা করার জায়গা। সকালে এক কথা বিকালে আরেক কথা বলে সাবেক নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদাকে ইতিমধ্যে হার মানিয়ে দিয়েছেন। যার কাজ সে করবে নির্বাচন কমিশন এত কথা বলেন কেন? 

তিনি বলেন, 'কে নির্বাচনে আসবে কে আসবে না তাতে কিছু আসে যায় না। এত দায়িত্ব আপনাদের (নির্বাচন কমিশন) দেয় নাই । আপনি কে এই কথা বলার। রাজনৈতিক সমস্যার মীমাংসা হবে রাজনৈতিকভাবে, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন- সরকার চিন্তা করবে কিভাবে তারা জনগণের সঙ্গে মীমাংসা করবে। কিভাবে জনগণের পথ ফেরত দিবে সেই বিষয়। এই কাজ ঠুঁটো জগন্নাথ নির্বাচন কমিশনের নয়।'

তিনি আরও বলেন, 'আমি আশা করব নো টক। শেখ হাসিনা যেদিন থাকবে না তখন কি আপনাদেরও তাড়াতে হবে? কোন দিক দিয়ে পালাবেন, যতদিন দায়িত্বে আছেন চুপচাপ বসে থাকেন বেতন ভাতা খান। নির্বাচন রাজনীতি ও রাজনৈতিক দল, গণতন্ত্র নিয়ে ছবক দেওয়ার অধিকার সাংবিধানিক এই পদে বসে আপনাকে দিতে কেউ দেয় নাই। আশা করি বাংলা কথাটা বুঝতে আপনার কষ্ট হবে না। আমরা যা করব রাজপথে ফয়সালা করব, যা বলেছি হাসিনা কেউ ক্ষমতায় রেখে নির্বাচনে যাব না। হাসিনাকে রেখে নয় ক্ষমতা থেকে ফেলেই নির্বাচন করব।'

দলের স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বিদ্যুৎ নাই তাহলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের নামে টাকা গেল কোথায়? বিদ্যুতের জন্য যে টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ করা হয়েছে লুট করা হয়েছে এর দায়ভার তো জনগণকে পরিশোধ করতে হবে। প্রশ্ন হচ্ছে বিদ্যুৎ পাবনা তাহলে আমরা সেই দিন পরিশোধ করবো কেন? যে সকল কোম্পানিকে কুইক রেন্টাল বেসিসে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নিয়োগ দিয়েছেন তাদের ব্যাংক থেকে কত টাকা ঋণ দিয়েছেন, তাদের কত বিদ্যুৎ উৎপাদন করার কথা ছিল কতটুকু তারা করতে পেরেছেন কতটুকু সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছেন তার শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে। জনগণের সেই হিসাব চাওয়ার অধিকার আছে।'

অর্থমন্ত্রীকে আদম বেপারী আখ্যা দিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, 'উনি বলেন আইএমএফ এর কাছে টাকা চাওয়া হয়নি। পত্রিকায় দেখলাম ভিতরে ভিতরে আবার তাদের কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে। আর আই এম এফ বলেছে- আপনারা কোন খাতে কত টাকা ব্যয় করেছেন তার একটা হিসাব দেন।'

নির্বাচন ইস্যুতে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, জনগণের ভোট জনগণ দিবে যাকে খুশি তাকে দিবে দিনের ভোট দিনে দিবে। ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিরাপদে ভোট দিব। একটা ফয়সালা করতে হবে রাজপথে। এর জন্য আমাদেরকে সেভাবেই এগোতে হবে।

জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপ‌তি‌ত্বে স্বরণসভায় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম‌্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতা হাবিবুর রশিদ হাবিবসহ প্রমুখ।