কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) সাধারণ শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের ন্যায্য এবং সমাধান যোগ্য গুরুত্বপূর্ণ ১৪ দফা দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর সংলগ্ন কুবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজের নেতৃত্বে সকাল ৯ ঘটিকায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত মানববন্ধনের সাধারণ শিক্ষার্থীদের
দাবিসমূহ হলো:
১।নিম্নবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দূরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসা ব্যয় বহনের লক্ষ্যে ছাত্রকল্যাণ ফি থেকে আলাদাভাবে ছাত্রকল্যাণ ফান্ড গঠন ও দ্রুত সময়ের ভিতর কার্যকর করা।
২। একাডেমিক ভবনগুলোতে ছাত্রীদের জন্য কমন রুম নিশ্চিত করা। প্রত্যেক অনুষদ ভবনে ছাত্রীদের জন্য নামাজ রুমের ব্যবস্থা করা।
৩। হিন্দু ধর্মালম্বীদের জন্য মুক্তমঞ্চের পাশে উপাসনালয় স্থাপন করা।
৪। সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর জন্য রুম বরাদ্দ দিলেও এখনো পর্যন্ত প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র বরাদ্দ দেওয়া হয়নি যা অত্যন্ত দুঃখজনক।অনতিবিলম্বে সাংস্কৃতিক সংগঠনের রুমের জন্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র বরাদ্দ দেওয়া।
৫। নতুন ছাত্রী হলে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে ছাত্রী উঠানোর ব্যবস্থা করা এবং নতুন ছাত্রী হল এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের বর্ধিত অংশে অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে ওয়াই ফাই সংযোগ সংস্থাপন করা।
৬। ক্যাম্পাসে বিদ্যমান নিম্নমানের রাউটার এবং নিম্ন গতির ইন্টারনেট সংযোগ পরিহার পূর্বক উচ্চমানের রাউটার এবং উচ্চ গতি সম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগ প্রতিস্থাপন করা।
৭।কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুঃখ খ্যাত ফিটনেস বিহীন বিআরটিসি বাসগুলো অতিদ্রুত পরিহার করে ফিটনেস সম্পন্ন ও মান সম্মত বাস প্রদান করা।
৮। সতন্ত্র মেডিকেল কমপ্লেক্স স্থাপন এবং প্রয়োজনীয় ঔষধ নিশ্চিতকরণ, এক্সরে মেশিন নিশ্চিতকরণ এবং ২৪ ঘন্টা মেডিকেল সেবা চালু রাখা।
৯। দুইটি ছাত্রী হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য একজন আবাসিক মহিলা ডাক্তার ও একজন মহিলা নার্সের ব্যবস্থা করা।
১০। ফরম ফিলাপ ও সার্টিফিকেট উত্তোলনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অমানবিক ভোগান্তি লাঘবের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব স্টাপ দ্বারা বিভিন্ন জায়গা থেকে স্বাক্ষর সংগ্রহ করে একস্থান থেকে শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট উত্তোলন ও ফরম ফিলাপের ব্যবস্থা গ্রহণ করা
১১। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের পাশে শিক্ষার্থীদের ড্রেস পরিবর্তন, ও খেলাধুলার সামগ্রী রাখার জন্য একটি ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ।
১২। আবাসিক হল এবং ক্যাফেটোরিয়ায় মানসম্মত খাবার প্রদানের লক্ষ্যে ভর্তুকীর ব্যবস্থা করণ।
১৩। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বতন্ত্র কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী চালু এবং ছাত্র-ছাত্রীদের প্রয়োজন অনুযায়ী খোলা রাখার ব্যবস্থা করা।
১৪।শিক্ষার্থীদের যেকোনো ন্যায্য দাবির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিমাতাসুলভ আচরন পরিহার পূর্বক শিক্ষার্থী বান্ধব সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণ।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ একমত পোষণ করে বলেন, এই দাবিগুলো সাধারণ শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের যৌক্তিক এবং ন্যায্য বলে আমরা তাদের সাথে একাত্মতা পোষণ করি।
তিনি আরো বলেন, উপাচার্য এই দাবিগুলো বাস্তবায়ন করার আশ্বাস দিয়েছেন,প্রশাসন যদি শিক্ষার্থীদের কথা না শোনে তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা পরবর্তীতে যা সিদ্ধান্ত নিবে তাদের সাথে আমরা থাকব।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো সম্পর্কে জানতে চাইলে, উপাচার্য প্রফেসর ড. এ.এফ.এম আব্দুল মঈন বলেন, টাকার নয়-ছয় আমি করি না। বাজেটে যে খাতে যতটুকু বরাদ্দ থাকে ততটুকুই ব্যয় করি।
মানববন্ধন শেষে সকাল ১১ টায় উপাচার্য বরাবর তাদের দাবিগুলো আদায়ের লক্ষ্যে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।