ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪ |

EN

লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনজীবন, গ্রাহকেরা ক্ষুব্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: বুধবার, জুলাই ৬, ২০২২

লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনজীবন, গ্রাহকেরা ক্ষুব্ধ
দেশের বিভিন্ন স্থানে লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। রোদ ও ভ্যাপসা গরমে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ। বিদ্যুতের কোনো কোনো গ্রাহক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। অনেকে বিরক্তি প্রকাশ করে দিচ্ছেন ফেসবুকে পোস্ট।

লোডশেডিংয়ের কারণে রংপুরে হিমাগারের রাখা পণ্যের ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। নাটোরে চিকিৎসা, শিক্ষা, শিল্প–কলকারখানা ও কৃষিতে নেমে এসেছে বিপর্যয়। নওগাঁর আউশ ও রোপা আমনের খেতে সেচসংকট দেখা দিয়েছে। সিরাজগঞ্জে কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

নওগাঁয় লোডশেডিংয়ের কারণে ভোগান্তির মধ্যে আছে মানুষ। কলকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। আউশ ও রোপা আমনের খেতে সেচ দিতে সংকটে পড়েছেন কৃষক। নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা সদরের লিচুবাগান এলাকার গৃহিণী জান্নাতুন ফেরদৌস বলেন, সারা দিনে কতবার বিদ্যুৎ যায়, তার হিসাব নেই। এক সপ্তাহ ধরে শুধু রাতেই পাঁচ-ছয় ঘণ্টা ধরে লোডশেডিং হচ্ছে। গরমের কারণে ঠিকমতো ঘুমাতে পারেন না। বাচ্চাটার ঠিকমতো পড়াশোনাও হচ্ছে না।

নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি নওগাঁর কর্মকর্তারা বলছেন, গ্যাস–স্বল্পতার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদার তুলনায় অনেক কম বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছেন। এ কারণে ঘন ঘন লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।

নওগাঁ পল্লী সমিতি-১–এর উপমহাব্যবস্থাপক (কারিগরি) প্রকৌশলী লুৎফুল হাসান সরকার বলেন, নওগাঁ পল্লী সমিতি-১-এর গ্রাহকসংখ্যা ৪ লাখ ৬০ হাজার। এই পরিমাণ গ্রাহকের প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা গড়ে ৯০ মেগাওয়াট। তবে বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ মেগাওয়াট করে।

বিদ্যুৎ সঞ্চালন প্রতিষ্ঠান পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের লিমিটেড (পিজিসিবিএল) রাজশাহী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘গ্যাসের চাপ কম থাকায় জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। কয়েক দিন আগে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বিষয়টির ব্যাখ্যা করেছেন।

রংপুর জেলায় প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা ১৫০-১৫৫ মেগাওয়াট। সেখানে চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে ৮০-৮৫ মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ–সরবরাহের ঘাটতি থাকায় জেলায় দিনে ও রাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। এ অবস্থায় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ বাসাবাড়ির লোকজন চরম দুর্ভোগে পড়েছে।

নেসকো রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী শাহাদত হোসেন বলেন, রংপুর বিভাগের আট জেলায় রাতে বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় ৯০০ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে ৪৫০ মেগাওয়াট, অর্থাৎ চাহিদার বিপরীতে অর্ধেক বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। মঙ্গলবার দিনের বেলা এই বিভাগে বিদ্যুতের চাহিদা ৬৫০ মেগাওয়াট, সেখানে পাওয়া যাচ্ছে ৪০০ মেগাওয়াট; অর্থাৎ ২৫০ মেগাওয়াট ঘাটতি।

বিদ্যুৎ–সরবরাহের ঘাটতিতে রংপুর নগরের বিভিন্ন এলাকায় গ্রাহকেরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। রংপুর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী বলেন, টানা লোডশেডিংয়ের কারণে হিমাগারগুলো বেহাল। জেনারেটর দিয়ে হিমাগার চালানো হচ্ছে। হিমাগারের তাপমাত্রা ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।

বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদা অনুযায়ী অনেক কম বিদ্যুৎ সরবরাহ করায় এই দুর্যোগ দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন নেসকো রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী শাহাদত হোসেন।

সূত্র- প্রথম আলো