১ লা জুলাই টেকনাফ উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিলকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে উচ্ছ্বাস বয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে সম্মেলনকে সাফল্য করতে এবং সর্বোচ্চ উপস্থিতি বাড়াতে উপজেলার প্রতিটি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে নেতাকর্মীদের সাথে সভা করেছে উপজেলা বিএনপি। পাশাপাশি এড. হাসান ছিদ্দিকী-মো. শাহাদাত হোসেনের বর্তমান কমিটি সাথে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল্লাহর দীর্ঘদিন ধরে সৃষ্ট কোন্দল নিরসন হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে শক্তিশালী ও আন্দোলনমুখী কমিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি ও উখিয়া টেকনাফের সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী যেনতেন কমিটি না দিয়ে রাজপথে ভুমিকা রাখতে পারে এমন কমিটি করার ঘোষণা দিয়েছেন।
তাই এবারের কাউন্সিল টেকনাফ উপজেলা বিএনপির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বহন করে।
গেল ৭ মে উপজেলাা বিএনপির বর্ধিত সভায় শাহজাহান চৌধুরীর উপস্থিতিতে নেতাকর্মীরা বর্তমান উপজেলা বিএনপির একটি অংশ বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি দেওয়ায় অভিযোগ তুলে সরাসরি বক্তব্য রাখেন। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে শাহজাহান চৌধুরী তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামতে চাহিদা সম্পন্ন একটি শক্তিশালী কমিটির উপর গুরুত্বারোপ করেন।
ফলে আগামী ১ লা জুলাই অনুষ্ঠিতব্য টেকনাফ উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন কে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। রাত দিন নির্ঘুম ছুটছেন নেতাকর্মীদের মাঝে সম্ভাব্য সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য প্রার্থীরা।
এদিকে, কক্সবাজার জেলা বিএনপির কোষাধ্যক্ষ ও টেকনাফে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো আবদুল্লাহ'র সাথে বর্তমান কমিটির সৃষ্ট দ্বন্ধ নিরসন হয়েছে বলে একাধিক নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা গেছে। এতোদিন আবদুল্লাহর একটি অংশ পৃথকভাবে কর্মসুচী পালন করে আসছিল। এমনকি টেকনাফে একটি জাতীয় অনুষ্ঠানে হামলার ঘটনাও ঘটে।
বিষয়টি কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতাদের নজরে আসলে উভয় পক্ষকে মিলেমিশে রাজনীতি করার পরামর্শ দেন। এর ফলে দলের ভিতর দীর্ঘদিনের কোন্দল আলোচনার মাধ্যমে সুরাহা হয়ে একই সাথে উভয় পক্ষ আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
তাই টেকনাফ উপজেলা বিএনপির এবারের সম্মেলনে নেতাকর্মীদের বাড়তি অনুপ্রেরণা ও প্রাণচাঞ্চল্যতা এসেছে।
একাধিক নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সভাপতি হিসেবে বর্তমান সভাপতি এড. হাসান ছিদ্দিকী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো আবদুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক মো শাহাদাত হোসেন, সিনিয়র সহসভাপতি মো. হাসেম, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাশেদুল করিম মার্কিন, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ আলী মেম্বার, সাংগঠনিক সম্পাদক এড. সেলিমুল মোস্তাফা, সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গিয়াস উদ্দিন, শাহপরীর দ্বীপ বিএনপির সভাপতি মো. ইসমাইল মেন্বার, বাহারছড়া দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি ছৈয়দ হোছাইন মেন্বার, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক উসমান গনি, সাবেক ছাত্রনেতা মোঃ রাশেল এর নাম শুনা যাচ্ছে।
তবে সাধারণ কর্মীরা জানিয়েছেন, উখিয়া- টেকনাফের সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী যার দিকে ইশারা করবে সেই জয়ী হবে।
তাছাড়াও আগামী ১লা জুলাই সম্মেলনে মো. হাশেম ও মো. আলী মেম্বার জোটবদ্ধ প্রচারণা চালিয়ে নেতাকর্মীদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। তাদের এই প্যানেল শতভাগ জয়ী হবেন এমনটা জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা।
তবে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মো শাহাদাত হোসেন বিএনপির একজন নিবেদিত প্রাণ। তার গ্রহন যোগ্যতা দলে সবচেয়ে বেশি। নেতাকর্মীরা তাকে আপ্রাণ ভালবাসে। তার কথায় যে কোন আন্দোলন সংগ্রামে শত শতশত নেতাকর্মী রাজপথে বেরিয়ে আসে। তাকে সভাপতি হিসেবে পেতে চাই বেশির ভাগ নেতাকর্মী। সেও ছাত্রনেতা থেকে তিলে তিলে উঠে আসা একজন শহীদ জিয়ার আদর্শ সৈনিক।
অপরদিকে, টেকনাফ উপজেলা বিএনপিতে মোহাম্মদ আবদুল্লাহ'র বিকল্প নেই। এমন মন্তব্য দলের অনেক সিনিয়র ও সাধারণ নেতাকর্মীদের। তাকে সভাপতি হিসেবে পেলে দল চাঙ্গা হবে এবং আন্দোলন সংগ্রামে সাহস পাবে তৃণমূল কর্মীরা। দলে আবদুল্লাহর গ্রহন যোগ্যতাও কম নেই।
বর্তমান কমিটির সভাপতি এড. হাসান ছিদ্দিকী যোগ্যতার দিক দিয়ে কমতি নেই। সে টেকনাফ উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি, যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক আহবায়ক হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিক যিনি দলের দুঃসময়ে হাল ছাড়েননি। আগামী টেকনাফ উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে পুনরায় সভাপতি হিসেবে দেখতে চান তার একঝাঁক সমর্করা।
এদিকে সাধারন সম্পাদকে দুই জনের নাম শুনা যাচ্চে বেশি। এরমধ্যে এগিয়ে রয়েছেন বর্তমান কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মো. আলী মেম্বারের নাম। তৃনমুল কর্মীদের মুখে মুখে মো. আলী মেম্বার। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে মো. আলী মেম্বারের অবদান বেশি। দলের মধ্যে তার একটি শক্ত অবস্থান রয়েছে। কারণ তিনি ছাত্রদলের তৃণমুল থেকে বেড়ে উঠা সম্মুখ যোদ্ধা ও শহীদ জিয়ার আদর্শ সৈনিক। তিনি টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি, টেকনাফ সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব, টেকনাফ উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক দুই বারের আহবায়ক ও টেকনাফ উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমান উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক।
এছাড়াও সে একজন জনপ্রতিনিধি। হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়াড থেকে তিন বারের নিবাচিত ইউপি সদস্য।
যার হাত ধরে উলুবনিয়া থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত স্কুল-মাদ্রাসা, ওয়াড, ইউনিয়ন ও উপজেলায় অসংখ্য কর্মী সৃষ্টির পেছনে অবদান রয়েছে।
যাই হোক, টেকনাফের বিএনপি ঘরণার কর্মীরা একটি শক্তিশালী কমিটি পেতে চাই। যে কমিটি টেকনাফে অবস্থান করে নেতাকর্মীদের খোঁজ খবর রাখেন, দুর্দিনে ছুটে যান, ভেদাভেদ ভুলে, অনিয়মের আশ্রয় না নিয়ে, মাদক ও স্বৈরাচারী আওয়ামিলীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যেতে পারে। সেই ধরনের কমিটি উপহার দেওয়ার জন্য জোর দাবী উঠেছে।
১ লা জুলাই সম্মেলনের ব্যাপারে জানতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক মো শাহাদাত হোসেন জানান, আগামী আন্দোলন কে সামনে রেখে তৃণমূল নেতাকর্মীদের চাওয়ার উপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব ও মতামত নিয়ে নিরেপক্ষ কাউন্সিলের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী টেকনাফ উপজেলা বিএনপি কমিটি গঠনের ব্যাপারে উখিয়া টেকনাফের সাবেক সাংসদ শাহজাহান চৌধুরী ঘোষনা দিয়েছেন। তাই শতশত নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বাড়াতে উপজেলার বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে ক্যাম্পেইন চলমান রয়েছে।