ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪ |

EN

দেশবাসীর নৌকা ছাড়া আর কোনো গতি নাই: প্রধানমন্ত্রী

বাসস | আপডেট: শুক্রবার, জুন ২৪, ২০২২

দেশবাসীর নৌকা ছাড়া আর কোনো গতি নাই: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, তার দল প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাওয়ায় দেশের মানুষের কাছে নৌকা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন, ‘তারা (দেশবাসী) জানে নৌকা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক এবং নৌকা ছাড়া তাদের গতি নাই। কেননা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে নিজের ভাগ্য গড়ার জন্য নয়, বরং অনেক মানুষের ভাগ্য গড়তে এবং জন্মলগ্ন থেকে সেই আদর্শ নিয়েই রাজনীতি করে যাচ্ছে।’

তিনি সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বিষয়ে বিএনপিকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘নেতৃত্ব শূন্য কোনো দল নির্বাচন করবে আর জনগণ ভোট দেবে কী দেখে। ওই চোর, ঠকবাজ, এতিমের অর্থ আত্মসাতকারী অথবা খুন, অস্ত্র চোরাকারবারী, সাজাপ্রাপ্ত আসামি তাদেরকে জনগণ ভোট দেবে দেশ পরিচালনার জন্য? তারাতো তা দেবে না। বাংলাদেশের মানুষ এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন।’

বৃহস্পতিবার দলের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দলীয় কার্যালয় ২৩, বঙ্গবন্ধু এভেনিউয়ের মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা পদ্মা সেতু করেছি নিজেদের অর্থে অথচ এটা নিয়ে বিএনপি প্রশ্ন তোলে, যাদের আপাদমস্তক দুর্নীতিতে ভরা, তারা আবার প্রশ্ন তোলে কোন মুখে? 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওরাতো কিছুই করে যেতে পারেনি। জাতির পিতা তার প্রথম জাপান সফরে যে যমুনা সেতু করার উদ্যোগ নেন সেটা তাকে হত্যার পর ক্ষমতায় আসা জিয়াউর রহমান বন্ধ করে দেন। পরে এরশাদ ক্ষমতায় এসে আবার উদ্যোগ নেন সেতুটি করার। কিন্তু খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসার পর সেতুর কাজ খুব বেশি এগোতে পারেনি কারণ সব জায়গায় তাদের ছিল কমিশন খাবার অভ্যাস। মায়ের জন্য, দুই ছেলের জন্য, অমুক-তমুককে ভাগে ভাগে দিতে দিতে সেখানে আর কেউ কাজ করতে পারত না। ১৯৯৬ সালে সরকারে এসে আওয়ামী লীগ এই যমুনা সেতুর সঙ্গে রেল লাইন, বিদ্যুত ও গ্যাসের লাইন জুড়ে দিয়ে একে বহুমুখী করেছে।

তার সরকার সে সময় বিশ্ব ব্যাংকের পরামর্শ না শুনে সেখানে যে রেললাইন সংযুক্ত করে পরবর্তীকালে সেটাই সবথেকে লাভজনক প্রতীয়মান হয়। যে কারণে নতুন একটি ডেডিকেটেড রেল সেতু করার জন্য তারা আবারো ফিরে আসে- বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতায় নেতৃত্ব দানকারী সংগঠন আওয়ামী লীগ এদেশের পল্লী প্রকৃতি এবং মাটি ও মানুষের কল্যাণ যতটা উপলদ্ধি করতে পারে আর কেউ ততটা বুঝবে না। কারণ তাদের মনে এখনো রয়ে গেছে ‘পেয়ারা পাকিস্তান’। তাছাড়া জিয়া, খালেদা জিয়া কারো জন্মই বাংলাদেশে নয়। যেমনটি আমি এবং জাতির পিতা এই মাটিরই সন্তান।’

মাটির টানে, নাড়ির টানেই তারা এদেশের মানুষের ভাগ্য বিনির্মাণে কাজে লেগেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের আদর্শই হচ্ছে জনগণের সেবা করা।

আলোচনা সভায় সভাপতিমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এমপি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম বক্তব্য দেন।

আরও বক্তব্য দেন- দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, কেন্দ্রীয় সদস্য পারভীন জামান কল্পনা, মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও আবু আহমেদ মান্নাফী।

দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ এমপি গণভবন থেকে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বানভাসি মানুষের পাশে আওয়ামী লীগ যেমন দাঁড়িয়েছে তেমনি প্রশাসন, সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্যরা সেখানে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রতিনিয়ত তাদের উদ্ধার ও চিকিৎসা প্রদান, খাদ্য প্রদান ও অন্যান্য সহায়তা প্রদানে সেখানে এতটুকু গাফিলতি নেই। তিনি বলেন, প্রথম দিন থেকেই আমরা এই বানভাসি মানুষের পাশে আছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব প্রত্যন্ত অঞ্চলে কেউ যেতে পারছে না সেসব জায়গার খবর পাওয়ার সঙ্গেই তিনি সশস্ত্র বাহিনী মারফত হেলিকপ্টারে করে সেখানে সাহায্য পাঠাচ্ছেন, উদ্ধার তৎপরতা চালানো বা খাদ্য পৌঁছানো হয়েছে। অথচ যারা আজ পর্যন্ত বন্যায় বানভাসি মানুষকে এক মুঠো খাবারও দিতে পারেনি, তাদের পাশে দাঁড়ায়নি, ঘরে বসে তারা কেবল মায়া কান্না করছে, এটাই তাদের চরিত্র।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নিজের ভাগ্য গড়তে আসেনি, জনগণের ভাগ্য গড়তেই এসেছে এবং আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে যদি বাংলাদেশের ইতিহাস পর্যালোচনা করা যায়, আজ পর্যন্ত এদেশের মানুষের যতটুকু অর্জন সবটুকুই আওয়ামী লীগের হাতে। আর আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে এসেছে এ দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি আরও বলেন, এ জন্য বার বার আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হয়নি, যাতে করে দেশের মানুষকে আরও বেশি শোষণ ও নির্যাতন করতে পারে তারা। ২১ বছর পর সরকার গঠন করে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ যা অর্জন করেছিল পরবর্তী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার সবই নস্যাৎ করে। খালেদা জিয়ার প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন দেশকে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত এবং টানা পাঁচ বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করে। সেই অসম্মানজনক জায়গা থেকে দেশের ভাবমূর্তির আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে তার সরকার আজ দেশকে একটি সম্মানজনক অবস্থায় আনতে পেরেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল এবং উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে।