প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে আমরা কারো ওপর কোনো মতামত চাপিয়ে দিতে পারি না, চাপিয়ে দেবও না।
রোববার (১৯ জুন) নির্বাচন ভবনে ইভিএম নিয়ে জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, কিছুদিন আগেও আমরা ইভিএমের মাধ্যমে নির্বাচন করেছি। তারপরও রাজনৈতিক মহলে এবং পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে যেটা আমরা জানতে পেরেছি যে, ইভিএম নিয়ে ঐকমত্য পাওয়ার অবস্থা নেই। যেহেতু আমরা নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করেছি, সেহেতু আমাদের ধারণা নিতে হবে। আপনাদের মতামত, স্বাধীন মতামত হবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি।
সিইসি বলেন, কারো ওপর কোনো মতামত চাপিয়ে দেওয়ার কোনো ইচ্ছাও আমাদের নেই। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে ইভিএম সম্পর্কে আপনাদের ধারণা নেওয়া। আপনাদের প্রশ্ন-উত্তর যদি থাকে সেগুলো উপস্থাপন করেন। আমাদের যারা ইভিএম সম্পর্কে বোঝেন, তারা আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
ইভিএম যাচাই করার জন্য ৩৯টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রোববার ১৩টি দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে তারা। সভায় সব নির্বাচন কমিশনারসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও অংশ নেন।
১৯ জুন ইসিতে আসার আমন্ত্রণ পেয়েছে যেসব দল: জাতীয় পার্টি (জাপা), জাতীয় পার্টি-জেপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি, জাকের পার্টি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, গণফোরাম, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন এনডিএম ও বাংলাদেশ কংগ্রেস।
২১ জুনের আমন্ত্রণ পেয়েছে যে সব দল: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল।
২৮ জুন আমন্ত্রণ পেয়েছেন যারা: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল-এমএল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ), বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট।
সিইসি বলেন, ইভিএম নিয়ে ইতোমধ্যে দেশ সেরা প্রযুক্তিবিদদের সঙ্গে বৈঠক করে মতামত নেওয়া হয়েছে। তারা ইভিএম দেখার পর বলেছেন, এই মেশিন নির্ভরযোগ্য।
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বড় আকারে ইভিএম ব্যবহার করতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে তার আগে সবার মতামত নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
ইসির হাতে বর্তমানে ১ লাখ ৫৪ হাজার ইভিএম রয়েছে, যা দিয়ে সর্বোচ্চ ১০০ আসনে ভোট করা যাবে। ৩০০ আসনে এই ভোটযন্ত্র ব্যবহার করতে হলে আরও তিন লাখের মতো মেশিনের প্রয়োজন।