আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ রোহিঙ্গাদের আলু দিতে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাককে পরামর্শ দিয়েছেন।
রোববার (১৯ জুন) রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটে কৃষি তথ্য সার্ভিস আয়োজিত ‘বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে খাদ্য নিরাপত্তায় কৃষি ও গণমাধ্যম’ শীর্ষক সেমিনারে এ পরামর্শ দেন তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের দেশে প্রচুর আলু উৎপাদন হয়। গত বছর ৩০ লাখ টনের বেশি আলু উৎপাদিত হয়েছে। আলু আমরা রপ্তানিও করতে পারি এবং নিজেরাও খেতে পারি। আমি কৃষিমন্ত্রীকে বলব, রোহিঙ্গাদের যেহেতু আমাদের খাওয়াতে হচ্ছে, সেহেতু তাদের আলু দেওয়া যেতে পারে। এটি পরামর্শ, কারণ- তাদের আমরা ফ্রি খাওয়াচ্ছি। আমরা ফ্রি খাওয়াচ্ছি, ফ্রি চিকিৎসা দিচ্ছি, সঙ্গে পকেট খরচও দিচ্ছি। এ কারণে মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা আমাদের এখানে আসতে উৎসাহিত হয়। এটিই হলো বাস্তবতা।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছর দুই লাখ একর কৃষি জমি হারিয়ে যায়। গত ৫০ বছরে ক্রমাগতভাবে কৃষি জমি কমে গিয়েছে। প্রতিনিয়ত জনসংখ্যা বাড়ছে। নতুন নতুন রাস্তা হচ্ছে, আবাসন হচ্ছে। আমার ধারণা, সবকিছু মিলিয়ে গত ৫০ বছরে দেশের ২৫ শতাংশ কৃষি জমে কমে গেছে। আয়তনের দিক থেকে বাংলাদেশ পৃথিবীর মধ্যে ৯২তম। ধান উৎপাদনে তৃতীয়, মিঠাপানির মাছের দিক থেকে চতুর্থ এবং সবজির দিক থেকে চতুর্থ। আমরা ধান উৎপাদন করতে পারি, কিন্তু সে পরিমাণ গম উৎপাদন করতে পারি না। কারণ, আমাদের জলবায়ু ও জমি সে রকম নয়।
তিনি বলেন, প্রতি বছর ২০-২২ লাখ মানুষ বাড়ে। আগামী ২০ বছর পর আমাদের দেশে ৪ কোটি নতুন মুখ যুক্ত হবে। ২০ বছর পর ৪০ লাখ একর কৃষি জমি হারিয়ে যাবে। তাহলে কী করে বর্ধিত জনসংখ্যাকে খাওয়ানো হবে, তা সবার মাথায় থাকতে হবে। সেজন্য জনসচেতনতা দরকার। এর পাশাপাশি যারা দায়িত্বে আছেন, তাদেরও সচেতন হতে হবে।
হাছান মাহমুদ বলেন, এখন গ্রামে দেখতে পাই প্রচুর কৃষি জমি অনাবাদি থাকে। মাঠের পর মাঠ পড়ে থাকে। কারণ, এখন কৃষি শ্রমিকের যে মজুরি, তা দিয়ে কৃষিতে লাভ থাকে না। সে কারণে প্রচুর জমি অনাবাদি থেকেছে। হালের বলদ নিয়ে মাঠে নামতে এখন আর কাউকে দেখা যায় না।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক এম এ সাত্তার মণ্ডল। সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, চ্যানেল আইয়ের বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ, ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ, দৈনিক জনকণ্ঠের প্রধান প্রতিবেদক কাউসার রহমান, দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক গোলাম ইফতেখার মাহমুদ।